গত সাড়ে তিন বছর ধরে আটকে আছে জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর সিনেমা ‘শনিবার বিকেল’। এটি মুক্তি চেয়ে ইতোমধ্যেই শোবিজ অঙ্গনে থেকে শুরু করে ভক্ত-দর্শকরাও নেমেছে রাজপথে। ফলে সিনেমাটির মুক্তি নিয়ে অনিশ্চিয়তা দেখা দেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চলচ্চিত্র ও সাংস্কৃতি অঙ্গনের শতাধিক ব্যক্তি।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানান, ‘শনিবার বিকেল’ মুক্তিকে কেন্দ্র করে দেশের সব ধারার সংস্কৃতিক কর্মী এক হয়েছেন। বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১৩০জন সংস্কৃতিকর্মী।
আজ মঙ্গলবার সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, সিনেমা, নাটক, সংগীত, শিল্প, সংস্কৃতির এমন নানা ক্ষেত্রে, নানা সময় হাজির করা হচ্ছে বহুমুখী বাধা, যা আমাদের উদ্বিগ্ন করছে। এ উদ্বেগ আরও বাড়ে যখন দেখি, আমাদের বন্ধু সুহৃদ চলচ্চিত্রকার মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র ‘শনিবার বিকেল’ বিনা কারণে সাড়ে ৩ বছরের বেশি সময় সেন্সর বোর্ডে আটকে থাকে। সম্প্রতি আমরা জানতে পেরেছি আগামী ১৭ তারিখ এই বিষয়ে আপিল কমিটির একটি সভা আহ্বান করা হয়েছে। এ বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ ও সুধীজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আমাদের মধ্যে অনেকেই ছবিটি দেখেছি এবং বুঝতে অপারগ হচ্ছি, কেন এই ছবিটির সঙ্গে এরকম আচরণ করা হচ্ছে। আমরা তাই ছবিটির নির্মাতার হতাশা ও মর্মবেদনা অনুভব করতে পারছি। সারা পৃথিবীতে যখন সেন্সরের ধারণাটি একটি বাতিলযোগ্য পুরানো ধ্যান-ধারণা হিসেবে আলোচিত হচ্ছে, ঠিক তখনই আমরা সেন্সর, দীর্ঘসূত্রিতা এবং অজানা কোনো কারণে সময়ের একজন খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকারের কাজ আটকে রেখেছে। এ দেশের নাগরিক ও শিল্পী সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে আমরা বলতে চাই, আমাদের প্রজ্ঞা ও বিবেচনায় এই দীর্ঘসূত্রিতা আমাদের ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ করে এবং সকল কর্তৃপক্ষের ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
মুক্তির পক্ষ নিয়ে সেখানে বলা হয়, আমরা যেন ভুলে না যাই, ভাষাভিত্তিক জাগরণে বাংলা নামে যে দেশ ৫০ বছর আগে তৈরি করেছি, তার মৌল চেতনা যেকোনো কিছুকে আটকে দেওয়ার পরিপন্থী। উন্নয়নশীল বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে চলচ্চিত্রসহ যেকোনো শিল্প মাধ্যম যখন প্রতিনিয়ত অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেখানে ‘শনিবার বিকেল’ সিনেমাটি পৃথিবীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত ও পুরস্কৃত হচ্ছে। সিনেমাটির সঙ্গে নিজ দেশে এই অন্যায্য আচরণে মনে হয়, সম্ভবত আমরা এ দেশে ৩য় শ্রেণীর নাগরিক হিসেবে বাস করছি।
সিনেমাটি শর্তহীন মুক্তি দাবি জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আপনাদের বোধ ও প্রজ্ঞার ওপর আমরা এখনো বিশ্বাস, আস্থা হারাইনি। আমাদের কাজ রাজপথে সংগ্রাম করা নয়, বরং একটি প্রগতিশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিল্প ও শিল্পীর ভূমিকাকে অব্যাহত রাখা। আমরা ‘শনিবার বিকেল’ এর নিঃশর্ত মুক্তি কামনা করি।
দীর্ঘ এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন নাট্য নির্দেশক ও চলচ্চিত্র পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, রাইসুল ইসলাম আসাদ, সারা যাকের, আফজাল হোসেন, তারিক আনাম খান, শহীদুজ্জামান সেলিম, থিয়েটার ব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদ, পরিচালক সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী, ক্যাথরিন মাসুদ, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সহ সভাপতি ছটকু আহমেদ, পরিচালক মোরশেদুল ইসলাম, চিত্রশিল্পী ঢালী আল মামুন, শামীম আখতার, মুনিরা মোরশেদ মুন্নী, মুনেম ওয়াসিফ, ঔপন্যাসিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক, অভিনয় শিল্পী ফজলুর রহমান বাবু, জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ, প্রযোজক সৈয়দ গাউসুল আলম, পরিচালক গিয়াস উদ্দিন সেলিম, চলচ্চিত্রকার জাহিদুর রহিম অঞ্জন, পরিচালক নুরুল আলম আতিক, সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ত্রপা মজুমদার, পরিচালক স্থপতি এনামূল করিম নির্ঝর, পরিচালক গোলাম রাব্বানী বিপ্লব, পিপলু আর খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ, কামার আহমেদ সাইমন, সারা আফরীন, রুবাইয়াত হোসেন, শিহাব শাহীন, জসিম আহমেদ, গোলাম হায়দার কিসলু, সাংবাদিক নূর সাফা জুলহাজ, প্রযোজক মুশফিকুর রহমান, থিয়েটার প্র্যাক্টিশনার মহসিনা আখতার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহীন সুমন, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি আহসান হাবীব নাসিম, অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক রওনক হাসান, অভিনয় শিল্পী চঞ্চল চৌধুরী, জয়া আহসান, অপি করিম, ইন্তেখাব দিনার, সংগীত শিল্পী আনুশে আনাদিল, শিবু কুমার শীল, পরিচালক ওয়াহিদ তারেক, মেজবাউর রহমান সুমন, মাসুদ হাসান উজ্জ্বল, কচি খন্দকার, চিত্রগ্রাহক কামরুল হাসান খসরু, চলচ্চিত্রকার এন রাশেদ চৌধুরী, শর্টফিল্ম ফোরামের সভাপতি জহিরুল ইসলাম কচি, শর্টফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুর রহমান, ডকল্যাব বাংলাদেশের তারেক আহমেদ, সৈয়দ ইমরান হোসেন কিরমানি, চিত্রগ্রাহক গোলাম মাওলা নবীর, শেখ রাজিবুল ইসলাম, বরকত হোসেন পলাশ, তাহসিন রহমান, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার রিপন নাথ, অভিনয় শিল্পী জাকিয়া বারী মম, নুসরাত ইমরোজ তিশা, আজমেরী হক বাঁধন, সুষমা সরকার, ইরেশ যাকের, পরিচালক আশুতোষ সুজন, শরাফ আহমেদ জীবন, আশফাক নিপুণ, রেদওয়ান রনি, ইফতেখার আহমেদ ফাহমি, তানিম নুর, মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ, মাহমুদুল ইসলাম, হুমায়ারা বিলকিস, কৃষ্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়, আদনান আল রাজীব, আবু শাহেদ ইমন, বিজন ইমতিয়াজ, আরিফুর রহমান, রায়হান রাফী, নুহাশ হুমায়ূন, সৈয়দ শাওকী, সালেহ সোবহান অনিম, অনম বিশ্বাস, ইশতিয়াক আহমেদ রুমেল, গোলাম কিবরিয়া ফারুকী, মিলন ভট্টাচার্য, দিলশাদ শিমুল, আফজাল হোসেন মুন্না, মুসাফির সৈয়দ, গোলাম মুক্তাদির শান, ইমরাউল রাফাত, ইমেল হক, আর বি প্রীতম, তানিম পারভেজ, মাবরুর রশীদ বান্নাহ, আতিক জামান, জয়ন্ত রোজারিও, পল্লব বিশ্বাস, পিকলু চৌধুরী, নিয়ামুল মুক্তা, শহিদ উন নবী, হাসান মোরশেদ, এবি রোকন, রুবায়েত মাহমুদ, মাজেদুল হক রানা, সেতু আরিফ, আরিক আনাম খান, কাজল আরেফিন অমি, সামিউর রহমান, মমিন বিশ্বাস, নাজমুল নবীন, ফাহাদ খান, আব্দুল্লাহ মুক্তাদির, মাহমুদুল হাসান আদনান, চলচ্চিত্র সংগঠক বেলায়েত হোসেন মামুন, প্রযোজক সরদার সানিয়াত হোসেন, এশা ইউসুফ, মীম রশিদ, সংঘীত শিল্পী ও পরিচালক আহমেদ হাসান সানি, আর্ট ডিরেক্টর শিহাব নুরুন নবী, তারেক বাবলু, শহীদুল ইসলাম, কস্টিউম ডিজাইনার ফারজানা সান এবং ইদিলা ফরিদ তুরিন।
পরিচালক ও প্রযোজক আর এইচ সোহেল বাংলাদেশ-ভারত-সিংগাপুর ত্রিদেশীয় উদ্যোগে আয়োজিত ‘বাভাসি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩-২৪’-এর বিচারক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। এরই মধ্যে চলচ্চিত্র যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।
এই চলচ্চিত্র উৎসবে বিভিন্ন দেশ থেকে এ পর্যন্ত ১৫৩টি চলচ্চিত্র জমা পড়েছে। জুরি বোর্ডের প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে ১৫৩ থেকে ৫০টি বাছাই করা হয়েছে দ্বিতীয় রাউন্ডের জন্য। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডের ৫০টি চলচ্চিত্র থেকে ১০টি চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য।
আর.এইচ সোহেল বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাভাসি চলচ্চিত্র উৎসব ২০২৩-২৪ এর সবগুলো রাউন্ডে বিচারক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পাওয়াটা আমার জন্য অনেক সম্মানের। আমার ওপর কর্তৃপক্ষ আস্থা রাখার জন্য বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। দায়িত্ব পেয়ে আমি খুবই রোমাঞ্চিত।’
বাভাসি চলচ্চিত্র উৎসব থেকে শ্রেষ্ট চিত্রনাট্যকার, নির্মাতা, শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, রূপসজ্জা, শিল্প নির্দেশক, সম্পাদনা ও আবহ-সংগীতের ওপর মেধা যাচাই-বাছাই করে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা হবে। নতুনদের প্রতিভা বিকাশের সেই সুযোগটি প্রতিবছর করে দিচ্ছে বাভাসি। এই প্রত্যয়ে আন্তর্জাতিক বাভাসি চলচ্চিত্র উৎসব প্রতিবছর আয়োজন করে আসছে। এরই মধ্যে ৭ বছর পেরিয়ে ৮ বছরে পর্দাপণ করেছে বাভাসি।
আওয়ামী লীগের দলীয় দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে মন্তব্য করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান অবশ্যই জাতির জনক না।
আজ (১৬ অক্টোবর) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা নাহিদ এ মন্তব্য করেন।
এমন মন্তব্য গণমাধ্যমে শোনার সঙ্গে সঙ্গেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা, পরিচালক, প্রযোজক ও মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা।
তিনি একটু আগেই তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘ভাই নাহিদ, যখন আপনাদের জন্মই হয়নি সেই সময়ের দেশ এবং নেতাদের নিয়ে কথা বলা আপনার জন্য বেমানান। আপনাকে অজ্ঞ বলতে বাধ্য করবেন না।’
সেই পোস্টের কমেন্ট বক্সে মঞ্চ নাটকের নন্দিত অভিনেত্রী ও নির্দেশক নূনা আফরোজ মন্তব্য করেছেন, ‘এদেশের মাটিতে জন্ম নিয়ে কীভাবে ৭১, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলতে পারে! তারা আসলে কারা?’
নূনা আফরোজ ছাড়াও অল্প সময়ে ওই পোস্টে একশ’র বেশি মন্তব্য এসেছে। বেশিরভাগই সোহেল রানার কথার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন, ভিন্ন মতও রয়েছে বেশকিছু।
প্রসঙ্গত, আজকের ওই সংবাদ সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে আওয়ামী লীগ বিতর্কিত করেছে। তাকে আপনারা ‘জাতির পিতা’ মনে করেন কি না? এমন প্রশ্নে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ফ্যাসিস্টভাবে ক্ষমতায় ছিল। মানুষের ভোটাধিকার হরণ ও গুম-খুন করে এবং গণহত্যা করে তারা ক্ষমতায় ছিল। কাজেই কারা তাকে জাতির পিতা বলল, তারা কোন দিবসকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করল, নতুন বাংলাদেশে সেটার ধারাবাহিকতা থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে নতুনভাবে গঠন করতে চাচ্ছি। ফলে ইতিহাসের প্রতি আমাদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি আনতে হবে।’
জাতীয় দিবসের তালিকা থেকে ৭ মার্চকে বাদ দেওয়ার প্রসঙ্গে নাহিদ বলেন, ‘৭ মার্চ গুরুত্বপূর্ণ, তবে জাতীয় দিবস হওয়ার মতো না। আওয়ামী লীগ অনেক দিবসকে নষ্ট করে ফেলেছে।’
৭ মার্চ নিশ্চিহ্ন করা হচ্ছে না জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান অবশ্যই জাতির জনক না। এই ভূখণ্ডে অনেকেরই ভূমিকা রয়েছে, লড়াই রয়েছে। ইতিহাসের বহুমূখীতা রয়েছে। আওয়ামী লীগ মাওলানা ভাসানীর অবদানকে অস্বীকার করেছে। তাই এখন সময় এসেছে সবার ভূমিকা স্মরণ করার।’
৫ আগস্টকে প্রাধান্য দিয়ে একটি জাতীয় দিবস প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে বলে জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের গুরুত্ব হিসেবে কোনো কোনো দিবস প্রতিষ্ঠিত করা হতে পারে। আপাতত ৫ আগস্টকে প্রাধান্য দিয়ে একটি জাতীয় দিবস প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশে অনেক সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে। চাইলেই আমলাতন্ত্র পুরো বাতিল করা যাবে না। প্রশাসনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। অভিযোগ যে কারও বিরুদ্ধেই হতে পারে। তাই গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে সরকার। অন্তর্র্বতী সরকারের কাজ সবার কথাকে গুরুত্ব দেওয়া। জনগণের সমর্থন নিয়েই কাজ করছে সরকার।’
এদিকে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসসহ আট জাতীয় দিবস বাতিল করছে অন্তর্র্বতী সরকার। আজ অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে গতকাল মঙ্গলবার। এ বছর পাসের হার ৭৭.৭৮ শতাংশ। এ ছাড়া জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। যারা খারাপ ফল করেছে তাদের হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘যারা এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল পেয়েছেন, তাদের অভিনন্দন! আপনার পরিশ্রমকে উদযাপন করুন এবং ভবিষ্যতে আরও বড় স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যান।’
যারা আশানুরূপ ফল করতে পারেনি তাদের জন্যও শুভকামনা জানিয়েছেন এই অভিনেত্রী। বললেন, ‘যারা প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল পাননি, হতাশ হবেন না। এটি কেবল একটি অধ্যায়, সামনে আরও অনেক সুযোগ অপেক্ষা করছে। বিশ্বাস রাখুন, কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যান, সফলতা আপনার হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন শুরু হয়ে এবারের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। পরে বাকি পরীক্ষাগুলো নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে তা বাতিল করতে বাধ্য হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বাতিল পরীক্ষাগুলোর নম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে।
আগামীকাল (১৭ অক্টোবর) মহাত্মা লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান দিবস। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি তিন দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছে। ৮৪ দিন পর গত শুক্রবার জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তন খুলেছে। দিনে দিনে দর্শকের উপস্থিতিতে প্রাণচঞ্চল হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমি। যদিও এখনো সীমিত পরিসরে খুলেছে নাট্যশালা ও মহড়াকক্ষ। খোলার পর প্রথমবার নিজেদের অনুষ্ঠান আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে শিল্পকলা একাডেমি। প্রথমেই আয়োজন করা হয়েছে লালন উৎসব।
গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিল্পকলা একাডেমি জানায়, তিন দিনব্যাপী আয়োজনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আয়োজিত হবে ‘আশাসিন্ধু তীরে’। গানে ও তত্ত্বে লালনকে উপস্থাপন করবেন শিল্পী অরূপ রাহী ও জহুরা ফকিরানী। অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন মুরশিদ। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির চারুকলা বিভাগের পরিচালক মোস্তফা জামান।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ১৮ অক্টোবর সন্ধ্যা ছয়টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে আয়োজন করা হবে সাধুমেলা ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক।
উৎসবের তৃতীয় দিন শনিবার ১৯ অক্টোবর বিকেল চারটায় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে প্রথম পর্বে ‘জাতিসত্তার প্রশ্ন এবং বাউল-ফকির পরিবেশনার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আবদুল হালিম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক আ-আল মামুন।
আলোচনা করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম; লেখক ও সাংবাদিক এবং পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ; নাট্যকার, লেখক ও গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক শাহমান মৈশান। সভাপতির বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ।
দ্বিতীয় পর্বে সন্ধ্যা সাতটায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে লালন স্মরণোৎসব ‘ধরো মানুষ রূপ নেহারে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। স্বাগত বক্তব্য দেবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আবদুল হালিম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাংবাদিক মাহবুব মোর্শেদ এবং সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক।