চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির জন্য এ বছরটি মোটেও ভালো ছিলো না। করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত মার্চে লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। বন্ধ ছিলো সকল ধরনের শুটিং ও সিনেমা হলগুলো। যার ফলে ইতিমধ্যে পিছিয়ে গিয়েছে বেশ কয়েকটি ছবির মুক্তির তারিখও।
এ বছরে সিনেমা হলে ছবি মুক্তি দিতে না পারলেও অন্য পথ অবলম্বন করেছিলেন নির্মাতারা। আর সেটি হলো- ওটিটি (ওভার দ্য টপ মিডিয়া সার্ভিস) প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে এরইমধ্যে মুক্তি পেয়েছে ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’, ‘দিল বেচারা’, ‘লক্ষ্মী বম্ব’ ও ‘সড়ক টু’সহ বেশ কয়েকটি ছবি। আর সেখান থেকেই এবার বাছাই করা হয়েছে ২০২০ সালে বলিউডের সেরা আইকনিক অন-স্ক্রিন পোশাক।
বিজ্ঞাপন
যে তালিকায় রয়েছেন সারা আলি খান, অক্ষয় কুমার, আয়ুষ্মান খুরানা, অভিষেক বচ্চন, ইয়ামি গৌতম, অজয় দেবগণ ও অনন্যা পাণ্ডে। চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক বলিউডের এই তারকাদের কার কোন পোশাক সেরা অন-স্ক্রিন পোশাক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
সারা আলি খান গত ২৫ ডিসেম্বর ওটিটি প্ল্যাটফর্ম অ্যামাজন প্রাইমে মুক্তি পেয়েছে সারা আলি খান ও বরুণ ধাওয়ান অভিনীত ‘কুলি নাম্বার ওয়ান’। তবে দুর্ভাগ্যবশত এটি এ বছর সবচেয়ে বাজে ছবির তালিকায় দ্বিতীয় স্থান দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এর ‘মাম্মি কাসাম’ গানে গোলাপি এবং বেগুনি রঙের কারাইকাল স্টাইলের শাড়ি পরেছিলেন সারা। যাতে বেশ আবেদনময়ী লেগেছে বলিউডের এই অভিনেত্রীকে। আর এটি ২০২০ সালে বলিউডের সেরা আইকনিক অন-স্ক্রিন পোশাক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে।
অক্ষয় কুমার অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘লক্ষ্মী বম্ব’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ডিজনি প্লাস হটস্টারে। এতে একজন ট্রান্সজেন্ডার ভূতের চরিত্রে দেখা গেছে বলিউডের এই সুপারস্টারকে। এই ছবিতেই ব্যবহৃত ‘বুর্জখলিফা’ গানের একটি দৃশ্যে গোলাপি রঙের ব্লেজারের সঙ্গে কালো রঙের ছেড়া জিন্স পরেছিলেন এই খিলাড়ি তারকা। সেই সঙ্গে তার মাথায় ছিলো ঘিয়া রঙের হ্যাট। এই পোশাকটি নজর কেড়েছে সকলের।
আয়ুষ্মান খুরানা ২০২০ সালে বলিউডের সবচেয়ে আইকনিক অন-স্ক্রিন পোশাকগুলোর বেশিরভাগই ছিলো গোলাপি রঙের। ‘শুভ মঙ্গল জেয়াদা সাবধান’-এ সাদা পাঞ্জাবীর সঙ্গে গাঢ় গোলাপি রঙের একটি চুনাড়ি ওড়না পরেছিলেন আয়ুষ্মান খুরানা। আর সেটি নির্বাচিত হয়েছে আইকনিক অন-স্ক্রিন পোশাক হিসেবে।
অভিষেক বচ্চন এ বছরের সুপার-ডুপার হিট ছবির তালিকায় রয়েছে ‘লুডু’। অনুরাগ বসু পরিচালিত ছবিটিতে একজন গ্যাংস্টারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিষেক বচ্চন। সেই ছবিতেই বলিউডের এই অভিনেতার পরিহিত গোলাপি প্রিন্টের শার্ট এবং তার লাল রঙের সানগ্লাসটি নির্বাচিত হয়েছে বছরের সেরা আইকনিক অন-স্ক্রিন পোশাক হিসেবে।
অজয় দেবগণ এ বছর ৩০০ কোটি রুপি আয় করা একমাত্র ছবি হচ্ছে অজয় দেবগণ অভিনীত ‘তানহাজি: দ্য আনসাং ওয়ারিয়র’। এতে ট্রেডিশনাল মারাঠি পোশাক পরেছিলেন বলিউডের এই অভিনেতা।
অনন্যা পাণ্ডে ‘কালি পিলি’তে অনন্যার রূপ মুগ্ধ করেছে সকলকে। সেই সঙ্গে ছবিতে তার পরা গোলাপি ও সবুজ রঙের সালোয়ার স্যুট নজর কেড়েছে সকলের।
ইয়ামি গৌতম ওয়েডিং আউটফিট পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। ‘গিন্নি ওয়েডস সানি’তে প্যাস্টেল পিঙ্ক ও সবুজ রঙের মিশেলে তৈরি একটি লেহেঙ্গা চোলি পরেছিলেন ইয়ামি গৌতম। এই পোশাকটি নিয়ে বেশ চর্চাও হয়েছিলো। সেই পোশাকটিই নির্বাচিত হলো ২০২০ সালে বলিউডের সেরা আইকনিক অন-স্ক্রিন পোশাক হিসেবে।
সময়ের আলোচিত অভিনেত্রী রুকাইয়া জাহান চমক। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের মতামত দিয়ে থাকেন তিনি। নিজের অবস্থান নিয়ে বরাবরই সাহসী চমক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই ছাত্রদের পক্ষে অবস্থান নেন তিনি।
বিভিন্ন সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আওয়ামী সরকারের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই সুন্দরী। এবার ছাত্রলীগের নিষিদ্ধের ঘোষণায় নিজের ফেসবুক পোস্টের মন্তব্যের ঘরও দিয়েছেন বন্ধ করে।
চমকের ভাষ্য, ‘দিলাম বন্ধ করে লীগের একমাত্র বিচরণের জায়গা ফেসবুক কমেন্ট সেকশন! এখন ওরা কই ঘেউ ঘেউ করবে! থাক সোনারা, মন খারাপ করো না।’
বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির দাবির মুখে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলো।
এদিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার পর বৃহস্পতিবার ভোরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনের সামনে জটিকা মিছিল করে সন্ত্রাসী আইনে নিষিদ্ধ সংগঠনটির ১০ থেকে ১৫ জন নেতাকর্মী। এ ছাড়া বুধবার রাত থেকেই দলের নেতাকর্মীদের ফেসবুকে প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে।
এদিকে বিভিন্ন পোস্টে কমেন্টস বক্সে গিয়ে দলে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা মন্তব্য করে থাকে। তাদের লক্ষ্য করে একটি প্রেসক্রিপশনও দিয়েছেন চমক। যেখানে তিনি মানসিক রোগের একটি ওষুধের নামও তুলে ধরেছেন। যা তাদের সকাল ও রাতে খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন।
রুকাইয়া জাহান চমক অভিনেত্রী হলেও মা-বাবার স্বপ্নপূরণে মানিকগঞ্জ সরকারি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস সম্পন্ন করেছেন। তার শোবিজের পথচলা ২০১৭ সালে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০১৭’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় রানারআপ নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে। বিজ্ঞাপন ও নাটকে নিয়মিত অভিনয় করছেন তিনি।
বর্ষাকাল পেরিয়ে শরৎ এসেছে বেশ আগে, কিন্তু এখনো হুট করে নেমে পড়ছে ঝুম বৃষ্টি। এই বৃষ্টিটাই শীত নামিয়ে দেয়- আমাদের দেশে এমন ধারণাই প্রচলিত। এই বৃষ্টি ‘নভেম্বর রেইন’ নামে পরিচিত, যার সঙ্গে সাহিত্য-সঙ্গীতের রয়েছে দারুণ যোগসূত্র। নভেম্বর আসতে আর বেশি বাকী নেই। তারই প্রাক্কালে জনপ্র্রিয় অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাস অংশ নিয়েছেন বার্তা২৪.কমের ‘নভেম্বর রেইন’ স্পেশ্যাল ফটোশুটে। সঙ্গে বলেছেন ‘নভেম্বর রেইন’ নিয়ে তার নস্টালজিয়া, চিন্তা-ভাবনার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ
মাসিদ রণ: আপনার কাছে ‘নভেম্বর রেইন’ আসলে কি?
মৌটুসী বিশ্বাস: মার্কিন রক ব্যান্ড ‘গানস এ্যান্ড রোজেস’-এর গান ‘নভেম্বর রেইন’ থেকেই তো টার্মটি বিশ^ব্যাপী চর্চিত হয়েছে। গানটিতে ‘নভেম্বর রেইন’কে বেদনা আর বিষন্নতার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। নভেম্বরের হালকা শীতে যখন বৃষ্টি হয় তখন মনের ভেতরের একাকিত্ব কিংবা বহু দিনের জমানো কষ্ট বৃষ্টির সঙ্গে বেরিয়ে পড়তে চায় বলে অনেক কল্পনাপিপাসু মানুষ মনে করে থাকেন। এটা কেন জানি আমারও হয়। এর বাইরে ‘নভেম্বর রেইন’ জানান দেয় যে শীত বস্ত্র নামানোর সময় হয়েছে, নামিয়ে ফেলো (হাহাহা)।
মাসিদ রণ: ‘নভেম্বর রেইন’কে আপনি কিভাবে দেখেন?
মৌটুসী বিশ্বাস: ‘নভেম্বর রেইন’ গানে প্রেম-ভালোবাসার জটিল সমীকরণের কথা বলে। জীবনে যে কোনকিছুই চিরস্থায়ী নয় সে কথাও মনে করিয়ে দেয়। জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমার তো প্রেম-ভালোবাসার কমপ্লেসিটি নিয়ে ভাবতে হচ্ছে না। তবে এটা এখন খুব ভাবায় যে, জীবনে কিছুই চিরস্থায়ী নয়। সেটা ব্যক্তিজীবনে হতে পারে, সামাজিক-রাষ্ট্রীয় নানা ক্ষেত্রেই হতে পারে। যেমন, আমরা ছোটবেলায় খেলার মাঠ পেয়েছি, এখন শহরের শিশুরা তা পায় না বললেই চলে। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে, বাবা-মা দুজনই চাকরি করতেন। আমার বাবাকে দেখেছি, অন্তত ব্যাগ ভরে বাজার নিয়ে ঘরে ফিরতেন। নিয়মিত মাছ, মাংস খাওয়ার একটা চল ছিলো মধ্যবিত্ত পরিবারে। কিন্তু এখন দ্রব্যমূল্যের যে দাম তাতে সেটিও তারা পারছেন না।
আমার বাবা পুরোটা শিক্ষাজীবন সরকারি প্রতিষ্ঠানে শেষ করেছেন, সেই পড়াশুনা দিয়েই চট্টোগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছেন। কিন্তু এখন অভিভাবকরা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওপর সেই আস্থাটাই রাখতে পারেন না, কারণ সেখানকার শিক্ষার মান আস্থা রাখার মতো নয়। তাই সবাই অনেক কষ্ট করে হলেও বাচ্চাকে ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াচ্ছেন। আমার ছোটবেলায় দেখেছি স্কুলে প্রতি বছর সরস্বতী পুজো হতো। তাতে আমি সনাতনী ধর্মের হয়েও যতোটা না উৎসাহী থাকতাম তার চেয়ে বেশি উৎসাহ দেখেছি মুসলমান বন্ধুদের। কিভাবে সুন্দরভাবে পুজোটি শেষ করা যায় তা নিয়ে তাদের আন্তরিকতা মুগ্ধ করতো। ঈদের সময় আমিও মুসলমান বন্ধুদের বাড়িতে সেমাই খেতে অবশ্যই যেতাম।
কিন্তু ইদানিং পূজা মণ্ডপে হামলা, প্রতিমা ভাঙা, পুজোর আয়োজনে বাঁধা দেওয়াসহ কতো কি দেখতে পাই। কেমন যেন দেশের সবকিছু ভাগ ভাগ হয়ে যাচ্ছে। এটা কিন্তু একটি জাতির জন্য খুবই চিন্তার বিষয়। এই পরিবর্তনগুলো আমাকে এখন চিন্তিত করে। আবারও ভাবতে বাধ্য করে যে, সবকিছুই পরিবর্তন হয়, কিছুই স্থায়ী থাকে না, ভালোটাও না মন্দটাও না। এই যে, সংখ্যালঘুদের নানা ধরনের ভয় দেখানো হচ্ছে, এটাও চিরস্থায়ী হবে না। আবারও নতুন জোয়ার আসবে। আমাদের শুধু সব পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হয়!
মাসিদ রণ: ‘নভেম্বর রেইন’-এর সঙ্গে আপনার জীবনের কোন যোগসূত্র আছে কি?
মৌটুসী বিশ্বাস: জীবনে কারোরই তো সবটা সময় ফুলে মোড়ানো হয় না। ছোট দুঃখ, বড় দুঃখ নিয়েই জীবন। নভেম্বর রেইন-এ ঘরে থাকলে বা একটু অবসরে থাকলে এই দুঃখবিলাশটা বেশি করে ভর করে নিজের ভেতর। এবার হয়তো আবেগের প্রকাশ আরও অণ্যরকম হবে। কারণ গত শীতেও বাবা ছিলেন, এবার তাকে ছাড়াই কাটবে! এখন আমার সারা সময়ের সঙ্গী বাবা হারানোর বেদনা। ‘নভেম্বর রেইন’ হয়তো সেই কষ্ট আরও বাড়িয়ে দেবে।
মাসিদ রণ: আপনার শীতের ফ্যাশন নিয়ে জানতে চাই...
মৌটুসী বিশ্বাস: শীতের ফ্যাশন মানেই আমার কাছে টার্টল নেকের ফুলহাতা টি শার্ট। আর শীত মানেই আমার কাছে বুট জুতা। সব সময় ব্র্যাডের কাপড়, জুতা, ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে এটা মনে করি না। ব্র্যান্ড, নন ব্র্যান্ড সবই ব্যবহার করি। এমনকি জুতা কিনতে ফুটপাতের মার্কেটেও চলে যাই অনেক সময়। বিদেশে গেলেও সব ধরনের মার্কেটেই যাই। যেখান থেকে যেটা মনমতো হয় সেটাই কিনে ফেলি। এবার আমেরিকা থেকে বেশকিছু শপিং করা হয়েছে নিজের জন্য। শীতে সেগুলোই পরা হবে বেশি।
শুধু শীতে নয়, যে কোন সময় পোশাক নির্বাচনে আমি সবচেয়ে গুরুত্ব দিই কোথায় যাচ্ছি সেটার উপর। আমি যেহেতু লম্বা তাই বারো মাস ট্রাউজার পরতে ভালোবাসি। শীতে ট্রাউজারের কাপড়টা একটু মোটা হয় এই যা। এছাড়া মাফলারের কালচারের আমাদের বাবাদের আমলে শেষ হয়ে গেলেও আমি স্টোল মাফলারের মতো পেচিয়ে ব্যবহার করি। আর সাজগোজ এমনিতেই পছন্দ করি না শুটিং ছাড়া। তবে শীত এলে একটু ডার্ক কালারের লিপস্টিক দিতে ভালো লাগে।
মাসিদ রণ: শীতে বই পড়া হয় কতোটা?
মৌটুসী বিশ্বাস: কিশোর বয়সে শীতকালে লেপের মধ্যে ঢুকে ভূতের গল্প পড়াটাই ছিলো আমার সৌখিনতা। তবে বড়বেলায় বইয়ের জায়গাটা নিয়ে নিয়েছে নেটফ্লিক্স। বই পড়ার ইচ্ছেটা রয়ে গেলেও অভ্যাসটা খানিকটা কমেছে। কারণ কাজের সূত্রে আমাকে ঢাকা, রাজশাহী আর খুলনা নিয়মিত যাতায়াত করতে হচ্ছে। তবে এবার শীতে চেষ্টা থাকবে বই পড়ার অভ্যাসটা ফেরত আনার। অনেক বই জমে গেছে, সেই বইগুলো শীতকালেই শেষ করতে চাই। গ্রামের বাড়ি খুলনাতেও কিছু বই রাখা আছে। গ্রামের বাড়ির বারান্দাটা বেশ বড়, বেতের চেয়ার রাখা আছে, রোদ আসে। সেখানে বসে বই পড়তে সত্যি খুব ভালো লাগে।
এখন ফিকশনের চেয়ে নন ফিকশনে বেশি আগ্রহ আমার। সেটা অটো বায়োগ্রাফি হোক বা প্রবন্ধ। এখন মাওলানা ভাসনিকে নিয়ে একটি বই পড়ছি। উনাকে একেবারেই নতুনভাবে জানার সুযোগ হচ্ছে। বরিশংকর বলের লেখা ‘দোজখনামা’ ধরেছিলাম কিছুদিন আগে। কিন্তু এই বইটা আমার খুব ধীর গতিতে পড়তে হচ্ছে। কিছু বই থাকে এমন, যা ধীরে ধীরে না পড়লে তার নির্যাসটা নিজের ভেতরে নেওয়া হয় না ঠিক করে। তেমনি একটি বই এলিফ শাফাকের ‘দ্য ফোরটি রুলস অব লাভ’। বইটি অনেক আগে গড়-গড়িয়ে পড়েছি একবার, কিন্তু এখন আবার পড়তে গিয়ে একদম নতুন সব অর্থ খুঁজে পাচ্ছি।
চিত্রনায়িকা পরীমণিকে যারা অনুসরণ করেন তারা জানেন, পরীর নানা তার জীবনে কতোটা জায়গা জুড়ে ছিলো। ছোটবেলায় বাবা-মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত হওয়া পরীর মা-বাবা সবটাই হয়ে উঠেছিলেন স্কুলশিক্ষক নানা।
তাইতো প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পরীমণি যখন ঘটা করে জন্মদিন পালনের রীতি শুরু করলেন, তখন নানার হাত ধরেই কেকটা কাটতেন।
তবে আজ জন্মদিনে নানাকে পাশে পেলেন না পরী। প্রায় এক বছর হতে চলল পরীর নানা পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন।
তাইতো নানাকে ছাড়া এবার জন্মদিনে কোন আয়োজনই রাখেননি পরী। প্রতিবারের মতো বড় হলরুম ভাড়া করে ধুমধাম তো দূরের কথা, নিজের জন্য বিশেষ থিমের পোশাকও বানাননি।
তারপরও পরীকে ভালোবাসেন বা তাকে ক্যাশ করে চলেন- এমন মানুষও তো কম নেই! তারা ঠিকই জন্মদিনের প্রথম প্রহরে পরীর বাসায় হাজির হন। শুধু তাই নয়, যতোটুকু পেরেছেন নায়িকাকে সারপ্রাইজ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। পরীর খাবার টেবিল ভরে যায় নানা আকার আকৃতির অনেকগুলো কেকে।
এসব দেখে আনন্দে কান্না করেন পরী আর মনে মনে নানাকে স্মরণ করতে থাকেন। সেই কান্নাভেজা চোখ নিয়েই চলে আসেন ফেসবুক লাইভে। বলেন, আমি বেশ অসুস্থ, হয়তো আমার কথা শুনেই আপনারা টের পাচ্ছেন। তারপরও জন্মদিনের কিছুটা সময় আপনাদের সঙ্গে না কাটিয়ে থাকতে পারলাম না। তবে আমি ভাবিনি এতো রাতেও এতো মানুষ আমাকে একসঙ্গে দেখবেন, আমাকে জন্মদিনের এতো শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাবেন। আসলে আমি এবার জন্মদিনে কোন আয়োজন করিনি। এমনকি কেক পর্যন্ত কাটতে চাইনি। নানুকে ছাড়া কেক কাটার কথা ভাবতেও পারি না। কিন্তু এই ভালোবাসার মানুষরা যেভাবে আমাকে উৎসাহ দিয়েছে তাতে কেক না কেটে পারলাম। তবে কেকটা কাটছি আমার ফেসবুকের ১৬ মিলিয়নের পরিবারের জন্য। তারা হলেন আপনারা। আপনাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা নিয়ে আমি এতোদূর এসেছি। আপনারা সব সময় আমার পাশে যেভাবে থেকেছেন, ভালোবাসা বিলিয়েছেন তাতে আমি ঋনী।’
এরপর পরী তার ছোট্ট মেয়েকে কোলে নিয়ে নির্মাতা চয়ণিকা চৌধুরীর হাত ধরে একে একে সবকটি কেক কাটেন। জন্মদিনের সবচেয়ে বড় কেকটিতে লেখা ছিলো ১৬ মিলিয়ন ফেসবুক ভক্তর কথা।
লাইভে এসে শুধু জন্মদিনের কথাই বলেননি পরী। নিজের আসন্ন ওয়েব সিরিজ ‘রঙিলা কিতাব’-এর প্রচারণাও চালান সুযোগ বুঝে। অনম বিশ্বাস পরিচালিত হইচই অরিজিনাল সিরিজটি আগামী ৮ নভেম্বর উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে।
জন্মদিনের সেই আয়োজনে পরীর সঙ্গে ছবি তুলেছেন চয়নিকা চৌধুরী। সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘তোমার প্রতি আমার ভালোবাসা আছে অন্তরে। আর এই গভীর ভালোবাসা থাকবে অনন্তকাল জুড়ে যতদিন আমি বেঁচে থাকবো। তা তুমিও জানো, আমিও। আজ একটি বিশেষ দিন। তোমার জন্মতিথি। শুভ জন্মদিন মা। তুমি সুন্দর। তোমার সুন্দর ভাবনার মতই হোক তোমার পৃথিবী। যেখানে থাকবে প্রশান্তি, মায়া, ভালোবাসা, আস্থা, সুস্থতা আর নিরাপদ জীবন। হাসিখুশি আর আনন্দে আনন্দে কেটে যাক তোমার আগামীর পথ চলা তোমার মনের মত করেই। অনেক প্রার্থনা, দোয়া, আশির্বাদ তোমার জন্যে, তোমার সন্তানদের জন্য। যতদিন এই পৃথিবীতে আছি, পাশে ছিলাম থাকবো। তোমার আমার অনেক স্মৃতি। সেই পথ চলার স্মৃতিগুলো সবসময় চোখের সামনে ভেসে ওঠে। আবারো শুভ জন্মদিন তোমাকে। অনেক ভালোবাসা আর মঙ্গল কামনা।’
সাধারনত জনপ্রিয় তারকাদের জন্মদিনে ফেসুবক ভরে ওঠে অন্যান্য তারকাদের শুভেচ্ছা পোস্টে। কিন্তু পরীকে চয়নিকা আর দু-একজন বাদে শোবিজের তেমন কেউ সেভাবে শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্ট করেননি। এর কারণ অবশ্য অজানা।
‘টারজান’ চরিত্র দিয়ে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি পাওয়া অভিনেতা রন এলি আর নেই। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। গতকাল (২৩ অক্টোবর) অভিনেতার মেয়ে ক্রিশ্চেন কাসালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক পোস্টে বাবার মৃত্যুর কথা জানান। তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করেননি।
ইনস্টাগ্রামে ক্রিশ্চেন কাসালে বলেন, ‘আমার বাবা ছিলেন এমন একজন, যাকে মানুষ হিরো বলত।’
দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ২৯ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা বারবারায় লস আলামোসে নিজ বাড়িতে প্রয়াত হয়েছেন রন এলি। তার মৃত্যুর প্রায় একমাস পর পরিবারের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হলো।
অভিনেতার পাশাপাশি রন এলি ছিলেন একাধারে একজন লেখক, প্রশিক্ষক ও মেন্টর।
ষাটের দশকে বেশকিছু জনপ্রিয় টিভি শো উপস্থাপনা করেছেন রন এলি। পাশাপাশি জনপ্রিয় সিরিজ ও সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন তিনি। তবে তাকে জনপ্রিয়তার চূড়ায় পৌঁছে দিয়েছে ‘টারজান’ চরিত্রটি।
১৯৩৮ সালে টেক্সাসে অভিনেতার রন এলির জন্ম। অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে সিটকম ‘ফাদার নোজ বেস্ট’, ‘হাউ টু ম্যারি আ মিলিয়নিয়ার’ ও ‘দ্য মেনি লাভস অব ডোবি গিলিস’র মতো জনপ্রিয় টিভি শোয়ে অভিনয় করেন তিনি। এরপর ১৯৬৬ সালে টারজান-এ প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান এই অভিনেতা। ‘টারজান’ ছাড়াও তার অভিনীত ‘ডক স্যালেজ: দ্য ম্যান অব ব্রোঞ্জ (১৯৭৫)’ দারুণ সাড়া ফেলে। তিনি মিস আমেরিকা ১৯৮০-৮১ সিজনটি উপস্থাপনা করে আলাদা পরিচিতি পান।