ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। তবে এটি আচরণবিধির লঙ্ঘন কিনা, সে প্রশ্নের ভিন্ন মত দিয়েছেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তারা।
রোববার (০৫ জানুয়ারি) সকালে মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের উত্তরা শাখার নির্বাচনী অফিসের উদ্বোধন হয়।
আতিকুলের ব্যক্তিগত সহকারী কর্মকর্তা সাইফুদ্দিন ইমন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আজ সকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত ঢাকা উত্তর সিটি করর্পোরেশনের মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের উত্তরা শাখার নির্বাচনী অফিস উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন মেয়রপ্রার্থীর জন্য দোয়া চেয়েছেন। এ সময় আতিকুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ঢাকা ১৮ আসনের সদসদ সদস্য।
নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থী বা প্রার্থীর পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তি প্রতীক পাওয়ার আগে প্রচার কাজ চালাতে পারেন না। এছাড়া সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে সংসদ সদস্যরাও নির্বাচনী প্রচার কাজে অংশ নিতে পারেন না।
ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে ১০ জানুয়ারি। আর সেদিন থেকেই তারা প্রচার কাজ চালাতে পারবেন। এর আগে নির্বাচনী প্রচারণার সুযোগ নেই। ফলে আতিকুলের নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন বিধির লঙ্ঘন কিনা এমন প্রশ্ন ছিল দুই সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে।
এ বিষয়ে উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবুল কাসেম বলেন, এটা তো আমি এখনও জানি না। আমার কথা হলো, একজন প্রার্থী হবেন নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ার পরে। এখনও কেউই কিন্তু প্রার্থী না। কারণ ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে পারবেন। আইন অনুযায়ী, একজন প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন ১০ জানুয়ারি থেকে। তারা তো ক্যাম্প করছেন, প্রচার চালাচ্ছেন না। যদিও আমি এর সত্য-মিথ্যা জানি না। তবে কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করতে পারবেন না।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন বলছেন, নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন করতে পারেন। কেননা, এটার জন্য তো সময় লাগবে। তবে উদ্বোধন করতে পারবেন না। উদ্বোধন প্রচার হিসেবে গণ্য হবে। এতে আচরণবিধি লঙ্ঘণ তো অবশ্যই হবে। কারণ এখন তো করতে পারার কথা না। কোন প্রার্থী যদি আমার দক্ষিণে এমন কাজ করে তাহলে বলবেন। আমি সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেব।
এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলছেন, আচরণবিধিতে অবশ্যই সংসদ সদস্যরা আমাদের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না। এখানে কিন্তু আইনের একটা ফাঁক আছে। প্রচারণায় অংশ নিতে পারেন না কিন্তু এটা প্রচারণার (ক্যাম্প উদ্বোধন) মধ্যে পড়বে কিনা, এটা বসে দেখতে হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসির এক কর্মকর্তারা বলেন, উত্তর সিটির মেয়র প্রার্থী আতিকুলের নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন নিয়ে যে আলোচনা উঠেছে, সেটি আচরণবিধির লঙ্ঘন কিনা তা খতিয়ে দেখছে কমিশন। ইতোমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আর নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ইসির কর্মকর্তারা বিধিবিধান পর্যালোচনা করছেন।
ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য সকল বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে আগাম তথ্য গ্রহণ করতে হলে ভিন্ন ভিন্ন সময়সূচি ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে নির্বাচন কমিশন।
ইসি সচিব শফিউল আজিম স্বাক্ষরিত ভোটার তালিকা, জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা সহজিকরণ এবং প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের নিমিত্ত সভার কার্যবিবরণী থেকে এসব তথ্য জানা যায়।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য আমরা ইতিমধ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে। মাঠ পর্যায়ে কার্যালয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য কী পরিমাণ সরঞ্জাম আছে, কী পরিমাণ লাগবে, তার হিসাব চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তবে এ বছর একসঙ্গে কত বছরের আগাম তথ্য নেওয়া হবে তা নির্ধারণ হয়নি। আগাম তথ্য নেওয়া হলেও কর্মপরিকল্পনা ও সময় থাকবে ভিন্ন ভিন্ন।
ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য সকলকে প্রস্তুত থাকতে হবে। ভোটার নিবন্ধন কাজে ব্যবহৃত মালামালের বর্তমান অবস্থা জানার জন্য মাঠ পর্যায়ে পত্র প্রেরণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
সভায় সিনিয়র সহকারী সচিব (নির্বাচন সহায়তা-২) জানান, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কর্মসূচি, ২০২২ এ তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই কার্যক্রমে সময় দেয়া হয়েছিল ৩ সপ্তাহ, তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল বিদ্যমান ভোটারের ৭.৫%। কার্যক্রম শেষে তথ্য সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯.০৮% এবং রেজিস্ট্রেশন হয় ৮.৭৯%। ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে বিভিন্ন ফরম মুদ্রণ, যন্ত্রপাতি ক্রয়, রেজিস্ট্রেশন, ডাটা আপলোড, AFIS Matching, খসড়া ভোটার তালিকা প্রস্তুত, খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, খসড়া ভোটার তালিকা উপর দাবি/আপত্তি দাখিল ও নিষ্পত্তি, এবং চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের জন্য প্রায় ০১ (এক) বৎসর সময় লেগেছিল।
কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, যে কোনো সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার জন্য সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এখন থেকেই সকল বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া ১, ২ বা ৩ বছরের তথ্য সংগ্রহ করলে তার জন্য পৃথক পৃথক সময়সূচি ও কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবে সংস্থাটি।
উল্লেখ্য যে, সর্বশেষ ২০২২ সালে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হয়। ওই সময় এক সঙ্গে ৩ বছরে তথ্য আগাম নিয়েছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয় ও জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) দুই সিস্টেম ম্যানেজারদের বদলি করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনবল ব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমানের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে তাদের দুইজনকে বদলি করা হয়।
অফিস আদেশে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) অনুবিভাগের সিস্টেম ম্যানেজার মুহাম্মদ আশরাফ হোসেনকে বদলি করে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রযুক্তি শাখায় সিস্টেম ম্যানেজার করা হয়েছে।
এছাড়া, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের প্রযুক্তি শাখার সিস্টেম ম্যানেজার মো. রফিকুল হককে বদলি করে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুবিভাগের সিস্টেম ম্যানেজারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন ভবনের সার্বিক নিরাপত্তায় অন্যদের সঙ্গে সাংবাদিকদেরও হুমকি মনে করছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এজন্য অন্যান্য দর্শনার্থীদের মতো নির্বাচন ভবনে সাংবাদিক প্রবেশ ও অবস্থানে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সংস্থাটি।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ইসির প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও উপ-সচিব (চলতি দায়িত্ব) সহিদ আব্দুস ছালাম এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছেন।
এতে উল্লেখ করা হযেছে, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (নির্বাচন ভবন) এর সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন সেবা প্রত্যাশীগণ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আইডিইএ-২ (স্মার্টকার্ড) প্রজেক্ট, ইবিএম প্রজেক্ট, সিবিটিইপি প্রজেক্ট, সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান পিডব্লিউডি এর কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের ব্যক্তিগত অতিথি এবং সাংবাদিকগণকে অফিস সময়ের শেষে বিকাল ৫টার পরে নির্বাচন ভবনে অবস্থান ও প্রবেশ না করার জন্য নির্দেশনক্রমে অনুরোধ করা হলো। শুধুমাত্র মিডিয়া সেন্টার ও সাংবাদিকবৃন্দের জন্য খোলা থাকবে।
যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।
উল্লেখ্য, যেখানে গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়, সেখানে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা হুমকি মনে করে এই ধরণের অফিস আদেশ এবারই প্রথমবারের মতো জারি করলো ইসি।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ঊর্ধ্বতন দুই কর্মকর্তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
রোববার (০৮ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন কমিশনের সহকারী সচিব মোহাম্মদ শহীদুর রহমান স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখা-২ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খানকে ওএসডি করা হয়েছে। আরেক প্রজ্ঞাপনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক মো. ফরহাদ হোসেনকেও ওএসডি করা হয়েছে।