পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হারিয়ে এমপি হতে চান সাবান বিক্রেতা ইউসুফ

  ভোট এলো, এলো ভোট
  • মশাহিদ আলী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, সিলেট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হারিয়ে এমপি হতে চান সাবান বিক্রেতা ইউসুফ

পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে হারিয়ে এমপি হতে চান সাবান বিক্রেতা ইউসুফ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে হারিয়ে এমপি হতে চান একজন সাবান বিক্রেতা।

তিনি হলেন ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী ইউসুফ আহমদ। পেশায় একজন সাবান বিক্রেতা। যার না আছে কোনো কর্মী সমর্থক। তবুও তিনি থেমে নেই। একটি মোটরসাইকেল নিয়ে তিনি দোকান থেকে দোকানে সাবান বিক্রির সঙ্গে চালাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচারণা।

বিজ্ঞাপন

ইউসুফ আহমদ কসকো সাবান কোম্পানির সিলেট এরিয়ার ম্যানেজার। তার স্বপ্ন তিনি সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন।

জানা যায়, ইউসুফ আহমদ প্রতিদিন তার কোম্পানির দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সন্ধ্যায় বাবার একটি চায়ের স্টলে সময় দেন। সেখান থেকে সময় সুযোগ বের করে প্রচার-প্রচারণা করেন। মোটরসাইকেলে বসানো বক্সে সাবান নিয়ে দোকানে দোকানে গিয়ে সাবান বিক্রির সঙ্গে নিজের প্রচারণা করেন এবং তার দলীয় প্রতীক আম মার্কায় চান। সাবান কোম্পানির ম্যানেজার হওয়ার সুবাদে তিনি চষে বেড়ান পুরো নগরী। নগরীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ঘুরে ঘুরে সাবান বিক্রির পাশাপাশি চালান নির্বাচনী প্রচারণাও। করেন লিফলেট বিতরণ। তার এই ব্যতিক্রমী প্রচারণায় শহরজুড়ে জনমনে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে। এভাবেই তিনি চলে এসেছেন সাধারণ ভোটারের ভোট ভাবনায়। এর আগে, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এমপি পদে নির্বাচন করেছিলেন।

শুধু ইউসুফ আহমেদই এমন প্রচারণায় ব্যতিক্রম নন। বিগত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও মেয়র পদে বাস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন শাহজাহান মিয়া (শাহাজান মাস্টার)। কর্মী সমর্থকবিহীন শাহাজাহান মেয়রপদে প্রচারণা করেছিলেন সাইকেল চালিয়ে। সেই নির্বাচনে শাহজাহান ভোট পেয়েছিলেন প্রায় ৩০ হাজার। শাজাহানের পথেই এবার হাঁটতে যাচ্ছেন ইউসুফ।

সাধারণ ভোটাররা বলছেন, নির্বাচনে যে দলের প্রার্থীই বিজয়ী হয়ে আসুক। আমরা চাই একজন যোগ্য ব্যক্তি এবং সৎ মানুষ। যিনি আমাদের দাবি-দাওয়া এবং কষ্ট বুঝবেন। ইউসুফ আহমদ নির্বাচিত হলে সাধারণের কষ্ট বুঝতে পারবেন কারণ তিনি নিজেই একজন খেটে খাওয়া মানুষ।

এ ব্যাপারে ইউসুফ আহমদ বার্তা২৪.কম-কে বলেন, সাবান কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছি। সেই সঙ্গে সন্ধ্যায় বাবার একটি চায়ের স্টলে সময় দেই। বাকি সময় মোটরসাইকেলে দোকান দোকান গিয়ে সাবান বিক্রির পাশাপাশি প্রচারণা করে থাকি।

তিনি বলেন, আমি গরিব, খেটে খাওয়া মানুষ। আমার টাকা-পয়সা নাই, আমি বিত্তবানও না। তাই আমার সঙ্গে প্রচারণায় কাউকে পাই না। তবে নিজে নিজেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আর এ সুবাদে গত কয়েকদিন থেকে যেখানেই যাই না কেন, সেই এলাকার অনেক ভোটার স্বেচ্ছায় আমার সঙ্গে প্রচারণায় নেমে যান।

প্রচার-প্রচারণাকালে কোনো ধরণের বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে আমার কাছে ফোন করে কোনো ধরণের অসুবিধা হচ্ছে কি না জানতে চাওয়া হয়। আমি নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে খুবই খুশি।

ইউসুফ আহমদ বলেন, জনগণ আমাকে ভোট দেবে । দেশে বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের মধ্যে হাহাকার দেখা দিয়েছে। এজন্য বর্তমান সরকারের প্রতি জনগণের অনাস্থা তৈরি হয়েছে।

নির্বাচনে বিজয়ের ব্যাপারে কতটুক আশাবাদী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচনে ৩০-৩৫ শতাংশ ভোট কাস্ট হলে আমি আশাবাদি ৩০-৪০ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবো।

প্রসঙ্গত; সিলেট-১ আসনে ড. এ কে আব্দুল মোমেন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইউসুফ আহমদ ছাড়াও আরও তিনজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা- হলেন ইসলামী ঐক্যজোটের ফয়জুল হক, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ সোহেল আহমদ চৌধুরী ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের প্রার্থী আবদুল বাছিত।

আসনটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৩৪ হাজার ২১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৩০ হাজার ৮৩৩ জন, নারী ভোটার ৩ লাখ ৩ হাজার ১৮১ জন ও তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৭ জন।