স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, 'ভোটের দিন নানা ধরনের গুজবের বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কারণ, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব আসতে পারে- আমাদের কাছে তথ্য আছে।'  

মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সকালে রাজধানীর আগারগাঁও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাচনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে তিনি এই কথা বলেন।

এই সিনিয়র সচিব বলেন, 'ভোটের মাঠে কাজ করবেন এমন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের তার পরামর্শ, যাই ঘটুক না কেনো ক্রস চেক করে একশ্যানে যেতে হবে।' 

তিনি বলেন, 'গুজব আসবে। আমরা অনুমান করছি। আমাদের কাছে সেই রকম তথ্য ও আছে। এই গুজব দুই ধরণের। একটা হল ইন্সট্যান্ট কিছু ফোন আসবে। আপনাকে বলবে, 'ওমুক যায়গায় ৫ জন মার্ডার হয়েছে। ওমুককে আটকে রাখেছে, আপনি মুভ করেন। এই ক্ষেত্রে জেলাপ্রশাসক কে আমরা এই ম্যাসেজটা দিব যে সিঙ্গেল চ্যানেলে যেনো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ হয়। বাইরের একটা গুজবের খবর আসলে আপনি ক্রস চেক না করে কোন সিদ্ধান্ত নিতে যাবেন না' ।

তিনি বলেন, 'প্রত্যেক জেলায় কোর কমিটি আছে। প্রত্যেক উপজেলার সমস্ত বাহিনী নিয়ে সেন্ট্রাল সমন্বয় সেল আছে। জেলা পর্যায়ে আমরা অনুরোধ করেছি এরকম একটা করতে। যাই ঘটুক না কেনো তাদের কাছে ম্যাসেজ থাকবে। আপনি ক্রস চেক করে একশনে যাবেন।' 

তিনি আরও বলেন, 'সাইবার ভিত্তিক কিছু গুজব আসবে। এটা প্রত্যেকটা ডিসি জানে, একটা গুজব আসলে কোথায় জানাতে হবে। লিংকটা কার কাছে পাঠাতে হবে। এটা আমরা তাদের ওয়েল সার্কুলেটেড করেছি। আপনি জাস্ট কন্ট্রোল রুম বা কোথাও একটা পাঠাবেন। যদি না পারেন আমাদের যে আইন-শৃঙ্খলা সমন্বয় সেল আছে, সেখানে ৬ টা নাম্বার আছে, সেই নাম্বারে দেবেন। তাও যদি না পারেন পিআইডির একটা সেল আছে, এনটিএমসির একটা সেল আছে এরা সার্বক্ষণিক কাজ করছে। ১০ তারিখ পর্যন্ত ২৪/৭ থাকবে। আপনারা যদি সেগুলো জেলা প্রশাসককে পাঠান, তারা সাথে সাথে সেলগুলোতে পাঠাতে পারবেন। আমরা ব্যবস্থা নিতে পারবো।' 

তিনি বলেন, 'মিডিয়ার গুজব অনেক সময় ভয়ংকর আকার ধারণ করে, যদি তা আমরা অংকুরে এড্রেস করতে না পারি। কিছু অপরিচিত ফোন এসে আপনাকে বিভ্রান্ত করবে। এমন ভাবে বলবে হয়তো সেখানে তার কোন উদ্দেশ্য আছে। আপনাকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এই ফোন গুলা আসতে পারে বা মিসলীড করার জন্য আসতে পারে। আপনি তা চেক করবেন, যাচাই করবেন।' 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ভোটের মাঠে দায়িত্বপালন করার সময় দেশীয় গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা না বলার পরামর্শ দিয়ে এই সিনিয়র সচিব বলেন, 'মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার দরকার নাই আপনার। মিডিয়া আপনাকে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলে আপনি বলবেন, এটা রিটার্নিং অফিসার কে আমি রিপোর্ট দিয়েছি। এটা রিটার্নিং অফিসার বা এসিস্ট্যান্ট রিটার্নিং অফিসার বা যিনি অথরাইজড তিনি কথা বলবেন। কোন স্টেটমেন্ট আপনি মিডিয়ায় দেবেন না। দেশি মিডিয়া এড়িয়ে চলার কথা বললেও বিদেশি  মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।' 

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের প্রচুর পর্যবেক্ষক আসছে, বিদেশি সাংবাদিক আসছে। প্রত্যেককে ইসি থেকে আইডি কার্ড দেওয়া হচ্ছে। তাদের যখন দেখবেন ওয়েলকাম করবেন। মনে রাখবেন তারা আমাদের দেশের মেহমান। তাদের আমরা দাওয়াত দিয়ে নিয়ে এসেছি।' 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, 'বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের আপনার পরিচয় দেবেন। ইংরেজিতে একটা কথা আছে প্যাসিভ এগ্রেসিভনেস, আমি কারও সাথে খারাপ ব্যবহার করলাম না। কিন্তু বডি ল্যাংগুয়েজে এমন ভাবে কথা বললাম, যে আমি তাকে খুব ইগনোর করলাম ও অপমানিত হল সে। এটা যাতে না হয়। বিদেশি সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক এদের সাথে খুব সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে।'