করোনায় পুঁজিবাজারে ভয়ানক ধস

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কে পাকিস্তান, ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে ভয়াবহ ধস নেমেছে। এর প্রভাবে রোববার (৮ মার্চ) ৯৮ পয়েন্ট সূচক পতন হয়।

কিন্তু সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সেমাবার (৯ মার্চ) দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ডিএসইক্স সূচক কমেছে ২৭৯ পয়েন্ট। যা ডিএসইর নতুন সূচকের সর্বোচ্চ পতন। আর ডিএসইর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সূচক পতন। এর আগের ২০১০ সালে ডিসেম্বর মাসে ৫০০ পয়েন্টের বেশি পতন হয়েছিল।

বিজ্ঞাপন

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসইর) সূচক কমেছে ৭৫৫ পয়েন্ট।সূচকের পাশাপাশি উভয় বাজারে কমেছে লেনদেন ও বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। বিনিয়োগকারীরা কিভাবে নিজের অর্থ উধাও হচ্ছে তা চেয়ে চেয়ে দেখছেন। কেউ দেখছেন ব্রোকারেজ হাউজের স্ক্রিনে, কেউ মোবাইলে কেউবা অফিস আদলতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে কম্পিউটারে দেখছেন। আর হায় হুতাশ করছেন।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছর ব্যাপী দরপতনের পর নতুন করে করোনা আতঙ্কে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। আর তাতে সেমাবার সকাল থেকেই শেয়ার দাম কমতে শুরু করে। এদিন লেনদেনের আধাঘণ্টায় সূচক কমে ১৪৬ পয়েন্ট। শুরু হয় বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি।

পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে বোম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ সূচক কমে প্রায় ২ হাজার পয়েন্ট। অন্যদিকে আশঙ্কাজন হারে সূচক কমায় পাকিস্থানের স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেনে বন্ধ করে দেয়া হয়। এমন খবরে বাংলাদেশর পুঁজিবাজারের আরও ধস হতে শুরু করে। আরও ধস হবে, বাজারের লেনদেনও বন্ধ হবে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ায় দরপতনের মধ্য দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

সার্বিক বিষয়ে ডিএসইর পরিচালক শাকিল রিজভী বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশেব্যাপী করোনাভাইরাস আতঙ্কে পুঁজিবাজারে ধস হয়েছে। ভারত-পাকিস্তানসহ বিশ্বপুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়ে। বিনিয়োগকারীরাও দিশেহারা হয়ে শেয়ার বিক্রি করে দিচ্ছে।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের হতাশ হয়ে শেয়ার বিক্রি করা উচিৎ না। বাংলাদেশের করোনাভাইরাস বেশিদিন থাকবে না। কারণ বাংলাদেশ ধুলা-বালির দেশে, করোনার ভাইসের চেয়ে কঠিন অবস্থায় পার করেছে দেশের পুঁজিবাজার। ফলে করোনাভাইরাসের আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। করোনাভাইরাস দ্রুত চলে যাবে। পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসএক্স আগের দিনের চেয়ে ২৭৯ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এদিন অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএস-৩০ সূচক ৮৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৪৬ পয়েন্টে এবং ডিএসইস সূচক ৬৯ পয়েন্ট কমে ৯২৯ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ২টির, কমেছে ৩৫২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১টির। আর তাতে লেনদেন হয়েছে ৪৯৯ কোটি ৩৫ লাখ ৩ হাজার টাকা।

অন্যদিকে সিএসইর প্রধান সূচক ৭৫৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৩৪৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ৩টির, কমেছে ২৪৯টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৪টির। তাতে সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৭০কোটি ২০ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।