বিদায়ী বছরে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যোগাযোগ খাতের গ্রামীণফোন লিমিটেডের মোট আয় হয়েছে ১৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য পরিচালনা পরিষদ শেয়ার প্রতি ১৩ টাকা লভ্যাংশের প্রস্তাব করেছে।
এর মধ্যে চতুর্থ প্রান্তিক অর্থাৎ অক্টোবর-ডিসেম্বর তিন মাসে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ।
২০১৯ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিকূল নিয়ন্ত্রণমূলক পরিবেশ সত্ত্বেও গ্রামীণফোনের শক্তিশালী ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০১৯ সালে গ্রামীণফোনের ১৪ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
আলোচিত এই সময়ে গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট সেবা খাত থেকে আয় বেড়েছে ১৭ শতাংশ। একই সময়ে ভয়েস থেকে আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ।
২০১৯ সালের শেষ প্রান্তিকে মোট আয় দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৬২০ কোটি টাকা, যা আগের বছর একই সময়ের তুলনায় ৪ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এই প্রান্তিকে নতুন করে ৭ লাখ গ্রাহক গ্রামীণফোন নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। ২০১৯ সাল শেষে আগের বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৬৫ লাখ। মোট গ্রাহকের মধ্যে ৪ কোটি ৬ লাখ বা ৫৩ দশমিক ১ শতাংশ গ্রামীণফোনের ইন্টারনেট সেবা ব্যবহারকারী।
এদিকে কোম্পানির পরিচালনা পরিষদ কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ২০১৯ সালের জন্য প্রতি শেয়ারে ১৩ টাকা লভ্যাংশ প্রস্তাব করেছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারি) এই প্রস্তাব করে। এর ফলে জিপির নগদ লভ্যাংশের পরিমাণ দাড়ালো ১৩০ শতাংশ। যা কর পরবর্তী লভ্যাংশের ৫০ দশমিক ৮৬ শতাংশ (৩৫ শতাংশ অন্তর্বর্তী লভ্যাংশসহ)।
সে লক্ষ্যে কোম্পানির রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ ফেব্রয়ারি আর কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ২৩ এপ্রিল। শেয়ারহেল্ডারদের সর্বসম্মতিক্রমে এই লভ্যাংশ পাস হবে।
গ্রামীণফোনের সিইও মাইকেল প্যাট্রিক ফোলি বলেন, রেগুলেটরি দৃষ্টিকোণ থেকে ২০১৯ সাল গ্রামীণফোন একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে পার করেছে। নানা ধরনের বিধিনিষেধ আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত করেছে। তবে চমৎকারভাবে বাজার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন এবং নেটওয়ার্কে আমাদের শক্তিশালী অবস্থান ধরে রাখার মাধ্যমে আমরা ব্যবসায়িক সাফল্য অজর্ন করতে সক্ষম হয়েছি। পরিকল্পিত লক্ষ্য অনুযায়ী চতুর্থ প্রান্তিকে ফোরজি সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার। বছর শেষে আমাদের নেটওয়ার্কে ফোরজি গ্রাহকের সংখ্যা ১ কোটি ১৯ লাখে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি। ইন্টারনেট সেবা খাতে এর ব্যবহার ও রাজস্ব অর্জন দুটি ক্ষেত্রেই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি।
মাইকেল ফোলি বলেন, মোবাইল সেবাখাতের উন্নয়ন ও বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিতে এর অবদান ধরে রাখতে সরকার ও খাতসংশ্লিষ্টদের মধ্যে যেকোন অর্থপূর্ণ আলোচনা করতে আমাদের প্রতিশ্রুতি আমরা পুনর্ব্যক্ত করতে চাই। ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ মার্জিনসহ ২০১৯ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে মোট মুনাফার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯২০ কোটি টাকা। শেষ প্রান্তিকে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৬ দশমিক ৮১ টাকা।
গ্রামীণফোনের সিএফও ইয়েন্স বেকার বলেন, শক্তিশালী মার্জিন নিয়ে গ্রামীণফোন ২০১৯ সালে ব্যবসায়িক সাফল্য অজর্ন করেছে। তিনি বলেন, শেষ প্রান্তিকে তীব্র প্রতিযোগিতা ও বৈরী আবহাওয়া সত্ত্বেও ইন্টারনেট সেবা খাতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। আমাদের শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের জন্য আরও বেশি মানসম্মত সুযোগ সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে শক্তিশালী নেটওর্য়াক নির্মাণ ও বিতরণ ব্যবস্থার আধুনিকায়নে আমাদের বিনিয়োগ অব্যাহত থাকবে।
শেষ প্রান্তিকে নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ৩৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। এনওসি বন্ধের কারণে গ্রামীণফোনকে পরিকল্পিত বিনিয়োগের চেয়ে কম বিনিয়োগ করতে হয়েছে। শেষ প্রান্তিকে নেটওর্য়াক আধুনিকায়নের পাশাপাশি ৭১৫টি নতুন ফোরজি সাইট করা হয়েছে। ২০১৯ শেষে গ্রামীণফোনের মোট নেটওয়ার্ক সাইটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ৫০৮। গ্রামীণফোন ২০১৯ সালে কর, ভ্যাট, ফোরজি লাইসেন্স ফি, স্পেকটার্ম অ্যাসাইনমেন্ট ফি, ডিউটি ও ফিস বাবদ সরকারি কোষাগারে ৮ হাজার ৫১০ কোটি টাকা প্রদান করেছে, যা মোট আয়ের ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ।
Lalan memorial festival ends today; devotees and saints are leaving Mausoleum
The price of internet should not only be reduced, but it should be standardized
'Action will be taken against BCS officials appointed on party grounds'
Charlotte Jacquemart calls for withdrawal of cases against journalists
পোশাক শিল্প একটি চ্যালেঞ্জিং সময় পার করে বর্তমানে স্থিতিশীলতা অর্জন করেছে বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলছেন, সরকার, মালিক, শ্রমিক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ সবার সহযোগিতায় বিজিএমইএ বোর্ড বিপর্যয়কর পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাজধানীর উত্তরার বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সবাই আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন উল্লেখ করে খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, এজন্য বিজিএমইএ বোর্ড সরকার ও সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। তাছাড়া ক্রেতারাও বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের ওপর আস্থা রেখেছে। বিজিএমইএ বোর্ডের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় সরকারের নির্দেশনায় পোশাক কারখানাগুলোর নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনী গঠন হয়েছে এবং যৌথবাহিনী গার্মেন্টস অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নিয়মিতভাবে টহল পরিচালনা করেছে। বিজিএমইএ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় কমিউনিটি পুলিশিং চালু করেছে।
তিনি বলেন, পোশাক কারখানাগুলোতে আগস্ট মাসের বেতন পরিশোধে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ায় বিজিএমইএ থেকে এ ব্যাপারে সহযোগিতা চেয়ে অর্থ উপদেষ্টাকে চিঠি দেওয়া হয়। বিজিএমইএ বোর্ড বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গেও দেখা করেছে। তারপর বিজিএমইএ এর অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগস্ট মাসের বেতনভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শ্রম অসন্তোষে আশুলিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত ৩৯টি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সেপ্টেম্বর মাসের বেতনভাতা পরিশোধের সক্ষমতা ছিল না। বিজিএমইএ থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়কে সেপ্টেম্বর মাসের বেতনভাতা পরিশোধের লক্ষ্যে ৩৯টি পোশাক কারখানাকে সুদবিহীন সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
এ সময় বোর্ডের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি বিনিয়োগে বাস্তবায়নাধীন প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলারের বিভিন্ন প্রকল্পের ৩০টি চুক্তি অন্তর্বর্তী সরকার বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মিশ্র বা বিভ্রান্তিকর বার্তা দিতে পারে বলে সতর্ক করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত ওই সব প্রকল্পের 'রিভার্স অকশন' বা বিপরীত নিলামে সংশ্লিষ্ট বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সুযোগ করে দিতে পরামর্শ দিয়েছে দেশের শীর্ষ এই বেসরকারি গবেষণা সংস্থা। আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘ মেয়াদে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ওই চুক্তিগুলো করা হয়েছিল।
সিপিডি জানায়, বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া এসব চুক্তির বেশির ভাগই রিনিউয়েবল এনার্জি বা নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্প এবং এগুলো বৈশ্বিক 'ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য রিনিউয়েবল এনার্জি সেক্টর' বাচ শীর্ষক আলোচনায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবমুক্ত হতে প্রতিশ্রুতির আওতাভুক্ত।
এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ জড়িত এবং ওই সব চুক্তি বাতিলের ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। এমন কিছু ঘটলে তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য ভালো হবে না। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তাদের লগ্নি করা অর্থের সুরক্ষা চান। ভবিষ্যতে বাংলাদেশেরও অনেক বিদেশি বিনিয়োগ দরকার হবে। তাই বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেওয়া জরুরি।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত 'ওভারসিজ ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য রিনিউয়েবল এনার্জি সেক্টর' শীর্ষক আলোচনায় বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি এসব তথ্য ও পরামর্শ তুলে ধরে।
মূল প্রবন্ধে সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম জানান, গত ২৭ আগস্ট বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় মোট ৪২টি বিদ্যুৎ প্রকল্পের চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে। এর মধ্যে ৩০টি প্রকল্পে চীনসহ মোট ১৫টি দেশ ও সংস্থার বিনিয়োগ রয়েছে। সরকারি নথিপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে সিপিডি জানায়, সম্ভাব্য বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ১৫ বিলিয়নের মতো। টাকার অঙ্কে এর পরিমাণ প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।
সিপিডির মূল প্রবন্ধে উল্লিখিত তথ্যে জানা যায়, ওই ৪২টি বিদ্যুৎ প্রকল্পের মোট সক্ষমতা ৫ হাজার ৩২২ মেগাওয়াট এবং এর মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিদ্যুতের সক্ষমতার পরিমাণ ৩ হাজার ১০২ মেগাওয়াট।
সিপিডি জানায়, বাতিল করা ওইসব প্রকল্পে যেসব দেশের বিনিয়োগ রয়েছে তা হলো চীন, ফ্রান্স, নরওয়ে, জার্মানি, হংকং, ভারত, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভিয়েতনাম ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। ইতোমধ্যে দেশে ১১টি নবায়নযোগ্য শক্তি বা বিদ্যুৎ প্রকল্পে মোট সাড়ে ৯ বিলিয়ন বা ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকার বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। ভবিষ্যতে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে আরও ৩৯ বিলিয়ন ডলার বৈশ্বিক বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা রয়েছে।
সিপিডি জানায়, বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলায় প্রতিবছর নবায়নযোগ্য শক্তিতে প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ দরকার। বিদেশি বিনিয়োগ এ ক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে পারে।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম তার প্রবন্ধে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজে এই পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিমুক্ত করতে 'থ্রি জিরো' বইতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়েছেন এবং সারা বিশ্ব তাকে একজন কার্বন নিঃসরণবিরোধী যোদ্ধা হিসেবে চেনে। তাই নবায়নযোগ্য শক্তিসংশ্লিষ্ট চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত বিদেশি বিনিয়োগের সুরক্ষা দিতে তিনি নিশ্চয়ই সচেষ্ট হবেন।
তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এ দেশে বহুবিধ ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করতে আসেন। এর মধ্যে রয়েছে মুদ্রার বিনিময় হার, শ্রম ঝুঁকি বা দক্ষ শ্রমিকের অভাব, প্রশাসনিক দৌরাত্ম্য, প্রকল্প বরাদ্দে দুর্নীতি, রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধন বিধি ও প্রক্রিয়ায় অসামঞ্জস্য, উৎপাদিত বিদ্যুৎ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহে অনুমতি না দেওয়া ও স্থানীয় ঋণ বা অর্থায়ন না পাওয়া। তিনি বলেন, এ ছাড়া বিদ্যমান কর ও শুল্ক রেয়াত সুবিধাও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য যথেষ্ট সহযোগিতামূলক নয়।
সিপিডি এর আগে (পতিত সরকারের শেষ সময়ে) বলে আসছিল দেশে চাহিদার তুলনায় বেশি বিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এবং এর বেশির ভাগই রাজনৈতিক সুবিধা দিতে করা হয়েছে। সে সময়ে সিপিডি এও দাবি করে যে, বিদেশি বিনিয়োগে যেসব বিদ্যুৎ প্রকল্প করা হয়েছে সেগুলোর চুক্তি রিনেগোশিয়েট বা পুনর্মূল্যায়ন করার দরকার আছে। তা না করা হলে রাষ্ট্রের অর্থ অপচয় হবে।
বিদ্যুৎ খাত নিয়ে সিপিডির পূর্বের ও বর্তমান অবস্থান জানতে নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমকে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি।
সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে গবেষণা পরিচালনা করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।
জরিপে দেখা যায়, অদক্ষ বাজার ব্যবস্থা পণ্যমূল্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এ ছাড়া পণ্য উৎপাদন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধি, বাজার আধিপত্য প্রভৃতি কারণে স্থানীয় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে। কৃত্রিম সংকট, ঋণপত্র খোলায় বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা, টাকার মূল্যমান হ্রাস, সাপ্লাই চেইন ব্যবস্থায় অদক্ষতা প্রভৃতি বিষয় পণ্যমূল্য ওঠানামায় ভূমিকা রাখছে।
নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধিতে উৎপাদকের ভূমিকাই প্রধান। মধ্যস্বত্বভোগীদের মুনাফার হার তুলনামূলক কম। দেশে উৎপাদিত ১৬টি পণ্যের মধ্যে ১৩টিরই উৎপাদন খরচের তুলনায় খুচরা পর্যায়ে যেতে দাম দ্বিগুণের বেশি হয়েছে। চাল, পেঁয়াজ, আদা, আলু, লবণ, মরিচসহ এসব পণ্যে ১০২ থেকে ৮৩০ শতাংশ পর্যন্ত দাম বেড়েছে। উৎপাদকরা ৪৪ থেকে ৪৮০ শতাংশ পর্যন্ত মুনাফা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জরিপের ফল পর্যালোচনায় ঢাকা চেম্বার ‘খাদ্য মূল্যস্ফীতি; নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য নির্ধারণে গতি-প্রকৃতি বিশ্লেষণ’ শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করে।
গত ২০ থেকে ২৯ আগস্ট দেশের আটটি বিভাগের ৪৯টি জেলায় জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপে ৬০০ জনের কাছ থেকে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়, যার মধ্যে উৎপাদনকারী, আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী রয়েছেন। মোট ২১টি খাদ্যপণ্যের ওপর তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
ঢাকা চেম্বারে এ বিষয়ে অনুষ্ঠানে চেম্বারের সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, উৎপাদক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বাড়লেও উৎপাদকরা ন্যায্য মূল্য পান না। কখনও কখনও দাম বাড়ানোর জন্য পরোক্ষ খরচ জড়িত হয়। স্টোরেজ, পরিবহন এবং পণ্য প্রক্রিয়াকরণ পর্যায়ে খরচ কমাতে পারলে দাম তুলনামূলকভাবে কমে। ঢাকা চেম্বারের নির্বাহী সচিব (গবেষণা) একেএম আসাদুজ্জান পাটোয়ারী মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
নির্ধারিত আলোচনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ড. সায়েরা ইউনুস বলেন, শুধু মুদ্রানীতি দিয়ে পণ্যের দাম কমানো সম্ভব নয়। এ জন্য সরকারকে প্রান্তিক পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রায় ৯বার নীতি সুদহার পরিবর্তন করলেও বাজারে এর প্রভাব তেমন উল্লেখজনক নয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ট্রেড সাপোর্ট মেজারস উইংয়ের যুগ্ম সচিব ড. সাইফ উদ্দিন আহম্মদ আমদানি খরচ কমানো, বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধা বাড়ানো, ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সুবিধা বাড়ানো প্রভৃতির ওপর জোর দেন।
কৃষক থেকে ভোক্তা পর্যায়ে সবজি আসার পথে নানান কারণে চড়া দামে কিনতে হয় ভোক্তাদের। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি কিনে তা ক্রেতাদের সুলভ মূল্যে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রিটেইল চেইন শপ ‘স্বপ্ন’।
স্বপ্ন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, মানিকগন্জ, বগুড়াসহ বেশকিছু এলাকার কৃষক থেকে সরাসরি পণ্য কিনছে স্বপ্ন । বেগুন, কাঁচা পেপে, লাউ, পটল, ঢেঁড়স, শসাসহ বেশকিছু সবজি খোলা বাজারের চেয়ে অনেক কম দামে ক্রেতাদের জন্য অফারে শুক্রবার ও শনিবার (১৮ ও ১৯ অক্টোবর) স্বপ্ন আউটলেটে বিক্রি হবে ।
সবজির নাম |
খোলা বাজার মূল্য (প্রতি কেজি) |
স্বপ্ন মূল্য (প্রতি কেজি) |
কাঁচা কলা |
১০-১২ টাকা |
৬ টাকা |
ঢেঁড়স |
৯০-১০০ টাকা |
৫৮ টাকা |
শসা |
৮৫-১০০ টাকা |
৬০ টাকা |
পটল |
৮৫-৯৫ টাকা |
৬৫ টাকা |
কাঁচা পেপে |
৪০-৫০ টাকা |
৩৫ টাকা |
বেগুন (লম্বা) |
১১০-১২০ টাকা |
৯৫ টাকা |
লাউ |
৯০-৯৫ টাকা |
৭০ টাকা |
কলমি শাক (প্রতি মুঠো) |
১৮-২০ টাকা |
১৫ টাকা |
এ বিষয়ে স্বপ্ন’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাব্বির হাসান নাসির বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে নিম্নবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জীবন-যাপন বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে ।
এ সময় তাদেরকে খানিকটা স্বস্তি দিতে আমরা সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সবজি এনে সুলভমূল্যে বাজার থেকে যথেষ্ট কম দামে আমাদের ক্রেতাদের হাতে পৌছে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আপাতত ৮টি সবজি দিয়ে এই উদ্যোগটি শুরু হচ্ছে, সামনে এর পরিসর আরও বৃদ্ধি পাবে । ’’