চাকরি বাচাঁতে অবৈধ শেয়ার কেনা-বেচা করছে ট্রেডাররা

  • মাহফুজুল ইসলাম, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

রোববার (২৯ ডিসেম্বর) দাম কমায় কেপিসিএল কোম্পানির ১ হাজার শেয়ার কিনলেন ইবিএল সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী এনামুল হক সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ২ টাকা লাভ পেয়ে তার হাতে থাকা ১২’শ শেয়ার বিক্রি করে দিলেন।

নিয়ম অনুসারে ‘এ’ ক্যাটগরির শেয়ারটি প্লাস টু ফর্মুলায় যে কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনার দুই দিন পর বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু সেই ব্রোকারেজ হাউজের একজন ট্রেডার লেনদেন বেশি দেখানোর জন্য নিয়ম ভঙ্গ করে শেয়ার বিক্রি করতে সহায়তা করেন।

বিজ্ঞাপন

নাম না প্রকাশের শর্তে হাউজের ট্রেডার বার্তা২৪.কমকে বলেন, আস্থা ও তারল্য সংকটে বিপর্যস্ত পুঁজিবাজার। ফলে প্রত্যাশা অনুসারে লেনদেন না হওয়ায় হাজার হাজার কর্মকর্তা, কর্মচারী চাকরিচ্যূত হয়েছে। আমার টার্গেট পূরণ না হলে কোম্পানি রাখবে না। তাই বাধ্য হয়ে লেনদেন বাড়ানোর জন্য ছোট-খাট কাজগুলো করছি। পেটের দায়ে করছি। কি করবো চাকরি না থাকলে, পরিবার নিয়ে যাবো কোথায়?

একই কথা বলেন, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজের কর্মকর্তা রুহুল আলম (ছদ্মনাম)। তিনি বলেন, মার্কেটের অবস্থা ভালো না। তাই চাকরি বাঁচাতে অনেক ফাঁক ফোকরের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, অন্য সেক্টরে চাকরি খুঁজছি। হলেই চলে যাবো। আর মানুষের অভিশাপ কুড়াতে পারবো না।

লঙ্কাবাংলা সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারী মহসিন আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, গত এক মাস ধরে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তরা লেনদেন শুরু প্রথম দিকেই শেয়ারের দাম একটু বাড়লেই বিক্রি শুরু করেন। দিন শেষে আবার একই শেয়ার কেনেন কম দামে।

তিনি বলেন, যে কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়লেই, সঙ্গে সঙ্গে চারদিক থেকে শেয়ার বিক্রির প্রেসার শুরু হয়। আর তখনি শেয়ারটির দাম কমতে থাকে। ফলে দিনের শুরুতে যে দাম ছিলো। দিন শেষে তার চেয়ে কম দামে শেয়ারটি বিক্রি হয়। আর এভাবে চলছে পুঁজিবাজার। আর দীর্ঘায়িত হচ্ছে দরপতন। আর দরপতন পরিণত হয়েছে ২০১০ সালের চেয়ে বড় মহাধ্বসে।

ফলে শেয়ার কেনার চেয়ে বিক্রির প্রবণতায় বেশি থাকায় সর্বশেষ সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) চলতি বছরের শেষ কার্যদিবস ব্রোকারেজ হাউজ এবং আইসিবির মার্কেট সাপোর্টের পরও নাম মাত্র সূচকের উত্থান হয়েছে।

২০১৯ সালের শেষ কার্যদিবসে দেশের প্রধান পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে ৩১৮ কোটি ৯৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। যা আগের দিনের চেয়ে ১৮ কোটি টাকা বেশি। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫৪টির, কমেছে ১৪২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৯টি কোম্পানির শেয়ারের।

এদিন ডিএসইর তিনটি সূচকের মধ্যে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৮ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৪৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ডিএস-৩০ সূচক ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৫১৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও ডিএসইএস ২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯৯ পয়েন্ট।

অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) প্রধান সূচক আগের দিনের চেয়ে ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ১৩ হাজার ৫০৫ পয়েন্ট দাঁড়িয়েছে। এদিন লেনদেন হওয়া কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৮৪টির, কমেছে ১০৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।