সেপ্টম্বরের শেষ সপ্তাহে একটু আশা জাগিয়ে আবার নেতিবাচক ধারায় একটি সপ্তাহ পার করলো দেশের দুই পুঁজিবাজার। আলোচিত সপ্তাহে (২৯ সেপ্টম্বর থেকে ৩ অক্টোবর) একটু একটু করে তিনদিনে সূচক বাড়লেও দুদিন সূচকের বড় পতন হয়েছে। ফলে সূচকের পাশাপাশি কমেছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম। আর তাতে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অর্থাৎ বাজার মূলধন কমেছে ৭ হাজার ৭৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা।
এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি কমেছে ৩ হাজার ৭৯৭ কোটি ৫৮ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫৭ টাকা। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) বিনিয়োগকারীদের পুঁজি বেড়েছে ৩ হাজার ২৭৮ কোটি ৩৬ লাখ ৪ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজারে সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন শেষ
শেয়ার সংরক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) তথ্য মতে, বর্তমানে দেশের সাড়ে ২৫ লাখ বেনিফিশিয়ারি ওনার্সধারী রয়েছে। তাদের মধ্যে সেকেন্ডারি মাকের্টের বিনিয়োগকারীদের এই টাকা ক্ষতি হয়েছে। তবে তাদের আগের সপ্তাহে বেড়েছিল প্রায় সাড়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর বাজারে তারল্য সংকট কাটাতে রেপোর (পুনঃক্রয় চুক্তি) মাধ্যমে অর্থের সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর পাশাপাশি ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে ‘ফোর্স সেল’কমেছে এবং গ্রামীণফোনের সঙ্গে বিটিআরসির সমঝোতা হচ্ছে এমন খবরে বাজারে কিছুটা ইতিবাচক প্রভাব পড়ে।
কিন্তু তারপরও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি ব্যক্তি বড় বিনিয়োগকারী এবং ব্রোকারেজ হাউসগুলোর মার্কেট সাপোর্ট না থাকায় বাজারে দরপতন হচ্ছে। আর তাতে দেশি বিনিয়োগকারীর পাশাপাশি বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাজার ছাড়ছেন। ফলে নেতিবাচক ধারায় পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন: থামছে না বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রি
ডিএসইর তথ্য মতে, বিদায়ী সপ্তাহে (২৯ সেপ্টম্বর থেকে ৩ অক্টোবর) পাঁচ কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। তাতে ডিএসইর প্রধান সূচক ৩০ পয়েন্ট কমে ৪ হাজার ৯৩৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি গেল সপ্তাহে ডিএসইর অন্য দুই সূচকও কমেছে।
আলোচিত সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৭টির, কমেছে ১৯৩টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এর আগের সপ্তাহে দাম বেড়েছিল ২৫২টির, কমেছিল ৭৬টির আর অপরিবর্তিত ছিল ২৭টি কোম্পানির শেয়ারের দাম।
তাতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৫৮ কোটি৮৭ লাখ ৮৯ হাজার ৫০৮টাকা। এর আগের সপ্তাহে লেনদনে হয়েছিল ১ হাজার ৯৫৭কোটি ৭৮ লাখ ৫১ হাজার ৩০৫টাকা।
আরও পড়ুন: লোকসানে থাকা কোম্পানিও নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে
দেশের অপর পুঁজিবাজার সিএসইর প্রধান সূচক ৬১ পয়েন্ট কমে ১৫ হাজার ২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৮৯টির, কমেছে ৮৯টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম।
এর আগের সপ্তাহে দাম বেড়েছিল ১৮৯টির, কমেছিল ৮৯টির, আর অপরিবর্তিত ছিল ২৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম। তাতে বিনিয়োগকারীরা সিএসইতে ১৫০ কোটি ৮৯ লাখ ৮৩ হাজার ৮৮৭ টাকা লেনদেন করেছে। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১০৯ কোটি ৯ লাখ ৭৬ হাজার ৬১৪ টাকা।