জেনেভায় ট্রেড পলিসি রিভিউ সভা

ডব্লিউটিও’র সহযোগিতা চাইলেন বাণিজ্যমন্ত্রী

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেছেন, বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) পরামর্শ মোতাবেক বাংলাদেশ বিশ্ববাণিজ্যে সক্ষমতা অর্জন করেছে। রপ্তানি বাণিজ্যে বাংলাদেশ সুনামের সাথে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশের রপ্তানি প্রত্যাশার চেয়েও ভালো।

গত বুধবার (৩ এপ্রিল) সুইজার‌ল্যান্ডের জেনেভায় ডব্লিউটিও’র সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের পঞ্চম ট্রেড পলিসি রিভিউ -এর প্রথম সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন ট্রেড পলিসি রিভিউ বডির চেয়ারম্যান অ্যাম্বাসেডর টিহাংকি। এই সভায় বাংলাদেশের বাণিজ্য, শিল্প, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ ও সংস্কারসমূহ তুলে ধরেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বিজ্ঞাপন

টিপু মুনশি বলেন, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেড়িয়ে উন্নয়নশীল দেশে প্রবেশের প্রথম ধাপ সফলভাবে অতিক্রম করেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হবে। তখন বিশ্ববাণিজ্যের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় উন্নয়নশীল বাংলাদেশের জন্য ডব্লিউটিও -এর সহযোগিতা প্রয়োজন হবে। বিশেষ করে ট্রিপস চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধির সুবিধা বাংলাদেশের প্রয়োজন। ২০৩৩ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এলডিসিভুক্ত দেশগুলো এ সুবিধা পাবে।

মন্ত্রী বলেন, ওষুধ শিল্প বাংলাদেশের জন্য খুবই সম্ভাবনাময়। বাংলাদেশে ব্যবসা পরিচালনায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বাংলাদেশ এখন পেপারলেস ট্রেডে সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ ডব্লিউটিও -এর পেপারলেস ট্রেড পলিসি চুক্তিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয় বাস্তব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ভিশন-২০২১’ ঘোষণা করেছেন। ২০২১ সালেই আগেই ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হবে এবং ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের উন্নত দেশ।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীগণ এগিয়ে আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ সরকার বিনিয়োগে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। আগামী ১৫ বছরে এখানে ১০ মিলিয়নের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অতিরিক্ত রপ্তানি আয় হবে ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Apr/04/1554380225759.jpg

উল্লেখ্য, সভায় বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার প্রায় সকল সদস্যের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সভায় প্রতিবেদন এবং সদস্য দেশসমূহের লিখিত প্রশ্নের আলোকে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বাণিজ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর কানাডার অ্যাম্বাসেডর বাওয়ের ও ডব্লিউটিও সেক্রেটারিয়েট আলোচনায় অংশ নেন।

এরপর মুক্ত আলোচনা পর্বে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়া ও জাপানসহ ৩০টি দেশ অংশগ্রহণ করে। মুক্ত আলোচনার সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশের অব্যাহত উন্নয়ন, ২০১২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত অব্যাহতভাবে প্রায় ৮% জিডিপি বৃদ্ধি, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, বিদ্যুৎসহ অবকাঠামো উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়নসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রশংসা করেন।

সভায় অনেক দেশ মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। বাংলাদেশের আমদানি শুল্ক কমানোসহ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নীতিমালাসমূহ উদারকরণের জন্যও অনুরোধ করে অনেক সদস্য রাষ্ট্র।

শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বাংলাদেশের ট্রেড পলিসি রিভিউয়ের দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ প্রশ্নাত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে ১৮টি দেশ ১৪০টি লিখিত প্রশ্ন দাখিল করেছে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ওই প্রশ্নগুলোর জবাব দেবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নেতৃত্বে বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, জেনেভায় বালাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি শামীম এম আহসানসহ ১৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল ট্রেড পলিসি রিভিউ সভায় অংশগ্রহণ করেছে।