‘চা রপ্তানির পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে’

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বক্তব্য রাখছেন মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল। ছবি: বার্তা২৪.কম

বক্তব্য রাখছেন মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল। ছবি: বার্তা২৪.কম

‘বাংলাদেশে এখন চায়ের উৎপাদন ক্রমবর্ধমান পর্যায়ে রয়েছে। বর্তমানে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় আমাদের চায়ের উৎপাদন বেশি হচ্ছে। আমরা এখন চিন্তা করছি, চা রপ্তানির পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সে জন্য আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করছি।’

বাংলাদেশ চা বোর্ড (বিটিবি) নিয়ন্ত্রণাধীন প্রতিষ্ঠান প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটে (পিডিইউ) টি টেস্টিং এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল প্রশিক্ষণ কোর্স’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম, এনডিসি, পিএসসি এ কথাগুলো বলেন।

বিজ্ঞাপন
চায়ের কোয়ালিটি দেখছেন বিটিবি চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল আশরাফুল। ছবি: বার্তা২৪.কম

তিনি আরো বলেন, ‘চা রপ্তানির ক্ষেত্রে কোয়ালিটি চা উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই। মূলত আমাদের টি প্লান্টাররা টি টেস্টিং বিষয়টি ইনফরমালি শিখে থাকেন। এ বিষয়ে এটিই প্রথম একটি ফরমাল কোর্স।’

তিনি আশাপ্রকাশ করে করেন, ‘কোর্সে অংশগ্রহণকারীরা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে টি টেস্টিং বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন এবং চা শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত অংশীজনদের আন্তরিক অংশগ্রহণে বাংলাদেশের চা শিল্প উত্তরোত্তর সমৃদ্ধ হবে।’

প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন বিটিআরআই এর চা বিজ্ঞানী ড. ইসমাইল হোসেন। ছবি: বার্তা২৪.কম

রোববার (৬ মার্চ) সকালে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বিটিআরআই পিডিইউ অডিটরিয়ামে পাঁচদিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়েছে। শেষ হবে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ)। চা উৎপাদন এবং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়নকল্পে ‘টি টেস্টিং এন্ড কোয়ালিটি কন্ট্রোল প্রশিক্ষণ কোর্স’ এর উদ্বোধন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পিডিইউ’র ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক।

পিডিইউর ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. একেএম রফিকুল হক তার বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে ১৬৭ চা বাগান রয়েছে। যার মোট আয়তন প্রায় ২ লাখ ৭৯ হাজার ৪৩৯ একর। এর মধ্যে চা চায়ের জমি রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৫৪ হাজার ৫১৫ একর। এ ছাড়া ক্ষুদ্রায়ন চা চাষাধীন জমির পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৫৭ একর।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে চায়ের উৎপাদন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের আভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে ঐতিহ্যবাহী রপ্তানিমুখী এ চা শিল্পের উৎপাদনের কিয়দংশ বিদেশে পাঠিয়ে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করার লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ চা বোর্ড। তারই ধারাবাহিকতায় গুণগত মানের চা উৎপাদন এবং উৎপাদিত চায়ের মান যাচাইয়ের জন্য দক্ষ টি টেস্টার তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক এ কোর্সের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিট।’

চা বোর্ড সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশে ১৬৭টি চা বাগান রয়েছে। যার মোট আয়তন ২ লক্ষ ৭৯ হাজার ৪২৯ একর। এর মধ্যে চা চাষাধীন জমি রয়েছে ১ লক্ষ ৫৪ হাজার ৫১৫ একর। বর্তমানে চা চাষ হচ্ছে ৬৫ হাজার একরে। এছাড়াও ক্ষুদ্রায়তন চা চাষাধীন জমির পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার ৫৭ একর।

পাঁচ দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণ কোর্সে শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, পঞ্চগড়, সিলেট, হবিগঞ্জ, লালমনিরহাট, চট্টগ্রাম ও ঢাকাসহ বিভিন্ন চা বাগানের ৬০ জন অংশগ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন, চা বাগানের ব্যবস্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপক, ব্রোকার্স, বায়ার্স, টি মার্চেন্ট, টি প্লান্টার্স ও ক্ষুদ্র চা চাষী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) পরিচালক ড. মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ চা বোর্ডের সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন এবং ফিনলে ভাড়াউড়া ডিভিশনের জেনারেল ম্যানেজার এবং অভিজ্ঞ টি-প্লান্টার জিএম শিবলি। এ ছাড়া বিভিন্ন সিনিয়র টি-প্লান্টার, ব্রোকার্স হাউসের অভিজ্ঞ টি টেস্টাররা এবং বিটিআরআই ও পিডিইউর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।