প্রুনিং: চা গাছের নতুন জীবন
মৌলভীবাজারের চা বাগানগুলোতে এখন চলছে প্রুনিং এর কাজ। এসময় বাগানের সেকশন জুড়ে চা গাছগুলোর মাথা কেটে ছেঁটে ফেলা হয়। প্রাকৃতিক কারণে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে চা বাগানের উৎপাদন প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে।
প্রকৃতির এ সহজাত নিয়মে এসময়টিতে চা গাছের শাখায় শাখায় শুভ্র ফুল আসে। গাছে ফুল আসার কারণে চা পাতার উৎপাদন কমে যায়। বছরের এসময়টি চা গাছের মাথা প্রায় আড়াই ফুট উচ্চতায় ছেঁটে রং লাগিয়ে পলিথিন দিয়ে মাথা বেধে দেয়া হয়। এরপর ফাঙ্গাস থেকে চা গাছ রক্ষায় শৈলচূন ছিটিয়ে দেয়া হয়।
প্রুনিং করার পর চা বাগানের চিরাচরিত সবুজের প্রকৃতি ধূসর বর্ণ ধারণ করে। এরপর বৃষ্টির আগে ভাগে বাগানে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। এতে করে বর্ষার শুরুতে চা গাছগুলো নতুন পত্র পল্লবীতে ছেয়ে যায়। আবার চেনা সবুজ প্রকৃতির রূপ ধারণ করে। এই চিরচারিত নিয়মের মধ্যে দিয়ে চা বাগানগুলোতে আরো এক নতুন বছরের উৎপাদনের পথে যাত্রা শুরু হয়।
চা গাছ ছেঁটে ফেলার এই পদ্ধতিকে বলা হয় প্রুনিং। স্থানীয় ভাষায় ছাঁটাই।
মূলত: চায়ের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াতে এমন পদ্ধতি দেশের ১৬৭টি চা বাগানের প্রায় সবগুলোতেই প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। প্রুনিং করা হয় কয়েকটি পদ্ধতিতে। এর মধ্যে চা গাছের বয়স হিসাব করে চা গাছের মাথা ছাঁটাই করা হয়ে থাকে। এছাড়া চা পাতা চয়নে সুবিধার জন্য একজন মানুষের কোমর উচ্চতায় ছাঁটাই করা হয়ে থাকে। আবার কলম করার কাজেও প্রুনিং করতে হয়।
গত সোমবার জেমস ফিনলের ভাড়াউড়া চা বাগান, ইস্পাহানি মালিকানাধীন জেরিন চা বাগানের সেকশনগুলোতে প্রুনিং করার চিত্র দেখা গেছে। টিলা অফিসের আওতাধীন নারী-পুরুষ চা শ্রমিকরা প্রুনিং এর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে।
জেরিন চা বাগানের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার সেলিম রেজা চৌধুরী বলেন, চা গাছে প্রুনিং মানেই হলো নতুন জীবন দান। এজন্য প্রয়োজনীয় সেচের ব্যবস্থা, মাটিতে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্য উপাদান প্রভৃতি বিষয়গুলো প্রুনিং পরবর্তী সময়ে নজরে রাখতে হয় বলে জানান সেলিম রেজা চৌধুরী।