বৈষম্যহীন রাষ্ট্রের সন্ধানে
৫৩ বছর আগে নয় মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের জনগণ বিজয় লাভ করে। এ বিজয়ের পেছনে রয়েছে অনেক আত্মত্যাগ আর গৌরবগাঁথা ইতিহাস। এক বিরাট প্রত্যাশা নিয়ে এ জাতি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়। যুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা লাভ করি বহুল প্রত্যাশিত স্বাধীনতা।
সাম্য, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার সুমহান লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ সংগঠিত হয়। পাকিস্তান আমলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার হয়েছি। রাজনৈতিক নিপীড়ন ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের শিকার ছিলাম। স্বাধীন বাংলাদেশে সেই বৈষম্যের কতটুকু অবসান হয়েছে? জনগণ কতটুকু রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করছে? মানবিক মর্যাদা কতটুকু সুপ্রতিষ্ঠিত?
সামগ্রিকভাবে দেশে আয় বৈষম্য বেড়েছে। দুর্নীতিতে আমাদের অবস্থান খুব নাজুক পর্যায়ে। দীর্ঘ পাঁচ দশক পর গণতন্ত্রের অবস্থা আজো শিশু পর্যায়ে। প্রতিহিংসার রাজনীতিতে আমরা ব্যস্ত। বিগত হাসিনা সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ছত্রছায়ায় গুম, হামলা, মামলার কারণে গণতান্ত্রিক পরিবেশ দুঃসহ অবস্থায় উপনীত। রাজনৈতিক সংকটের কারণে আমাদের প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক উন্নয়নও সম্ভব হয়নি।
একটি গণতান্ত্রিক সমাজ বা রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু বিগত কর্তৃত্ববাদী হাসিনা সরকার আমলে বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থাকে পুরোপুরিভাবে অকার্যকর করা হয়েছে। ২০১৪ সালের ভোটারবিহীন নির্বাচন এবং অধিকাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের রাতের নির্বাচন এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালের ডামি সংসদ নির্বাচন, নির্বাচন প্রক্রিয়াকে পুরোপুরি ধ্বংস করেছে।
স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। প্রত্যাশা ছিল দূর্বলের অধিকার হরণ করা হবেনা, মানুষ ন্যায়ানুগ বিচার পাবে, বিনাবিচারে মানুষ মারা যাবেনা, মানুষের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু ৫৩ বছর পরও আমরা মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা দূরের কথা তাদেরকে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টিও দিতে পারিনি। বিগত হাসিনা সরকারের অপহরণ, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা ও ক্রসফায়ার মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে গুম হয়েছে বিরোধী দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী। ফাঁসিতে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করে বিরোধী দলের অনেক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। দুর্বলের অধিকার হরণ করা হচ্ছে কিন্তু তারা ন্যায়বিচার পাচ্ছেনা। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রভাবশালীরা পার পেয়ে যায়।
রাজনৈতিকভাবে আমরা চরম অসহিষ্ণু এবং বিভাজিত, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বৈষম্য ও স্থবিরতা, নৈতিক মূল্যবোধ আজ চরমভাবে ভুলুন্ঠিত। রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, নেশা ও মাদক দ্রব্যের ব্যাপক ব্যবহার পুরো জাতিকে গ্রাস করে ফেলেছে। সাম্য, স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, মানবিক মূল্যবোধ আজ ধ্বংসপ্রায়। সামগ্রিকভাবে আমরা এক গভীর অন্ধকার গর্তের কিনারায় উপনীত হয়েছিলাম। যে কোন মুহূর্তে এ জাতি ধ্বংস হওয়ার অবস্থায় ছিল।
আল্লাহর রহমত এবং জাতির অহংকার তরুণ ছাত্রসমাজ আমাদেরকে ২০২৪ সালের ৫ই অগাস্ট নিশ্চিত ধ্বংস থেকে মুক্ত করে দ্বিতীয় স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করার সুযোগ করে দেয়।
কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে ২০২৪ সালের জুন থেকে শুরু হওয়া দ্বিতীয় পর্যায়ের ছাত্র আন্দোলন (২০১৮ সালে প্রথম পর্যায়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন সংগঠিত হয় এবং ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে সরকার কোটা ব্যবস্থা সম্পূর্ন বাতিল করে) বিগত শেখ হাসিনা সরকারের অপরিনামদর্শী সিদ্ধান্ত এবং চরম বাড়াবাড়ির কারণে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। সরকারের দমন, পীড়ন এবং নির্বিচার গুলি ও গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ৩ অগাস্ট, ২০২৪ সরকার পতনের এক দফা দাবি ঘোষণা করে। আন্দোলনের তীব্রতায় সরকার ছাত্র নেতাদের সাথে আলাপ আলোচনার প্রস্তাব দিলেও তাদের পক্ষ থেকে এ প্রস্তাব প্রত্যাখান করা হয় এবং এক দফা ছাড়া অন্য কোন দাবির ব্যাপারে তাদের বক্তব্য নেই বলে জানায়। সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করে এবং অফিস আদালত বন্ধ করে দেয়। ছাত্ররা ৫ই অগাস্ট, ২০২৪ সরকার পতনের এক দফা বাস্তবায়নের আদায়ে লক্ষ্যে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা করে। সরকার ছাত্রদের এই আন্দোলনকে দমন করার জন্য সর্বাত্মক কঠোরতা প্রদর্শনের জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীদেরকে নির্দেশ প্রদান করে। ছাত্র আন্দোলনের এই কর্মসূচিকে সকল ডান-বাম ও ইসলামি দলসমূহ সমর্থন করে এবং তা সফল করার জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। ৫ই অগাস্ট, ২০২৪ সাল, সকাল দশটার পর ঢাকায় এক অভূতপূর্ণ দৃশ্যের অবতারণা ঘটে। সরকারের উস্কানি, হুমকি-দুমকি এবং দমন পীড়নের সকল আয়োজনকে উপেক্ষা করে ঢাকার সকল প্রবেশ পথে লক্ষ জনতার ঢল নামে।
সকল শ্রেণী-পেশা ও ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ দেখে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রধানগণ সেনাপ্রধানের নেতৃত্বে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে গণভবনে স্বাক্ষাত করে পরিস্থিতির ভয়াবহতা বণর্না করেন এবং তাকে পদত্যাগের পরামর্শ দেন। কিন্তু তখন পর্যন্ত তিনি ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার অনড় মনোভাব প্রদর্শন করেন। কিন্তু সেনা প্রধানসহ অন্যদের চাপে শেষ পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং ভারতে পালিয়ে যান। তার পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে ৮ই অগাস্ট, ২০২৪ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে সচেতন এবং চিন্তাশীল নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। সামগ্রিক চিন্তা-ভাবনার ভিত্তিতে একটি অংশগ্রহণমূলক, উদার, গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত রাজনৈতিক বন্দোবস্তের অনিবার্য প্রয়োজন। বর্তমান বিভাজিত, অসহিষ্ণু, দ্বন্ধ ও সংঘাতপূর্ণ রাজনীতির বিপরীতে জাতিকে একটি ঐক্যবদ্ধ, উদার গণতান্ত্রিক ও কল্যানময় রাজনীতি উপহার দিতে হবে। রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ছাড়া আমাদের উপায় নেই। এজন্য নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনা করা যেতে পারে:
১. মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত সাম্য, সামাজিক সুবিচার এবং মানবিক মর্যাদা- এই তিন মূলনীতিকে ধারণ করে সকল পর্যায়ের কর্মসূচি নির্ধারণ।
২. গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বিকাশের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কার্যক্রমে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার প্রতিজ্ঞা করা। সর্ব পর্যায়ের নেতৃত্ব নির্বাচন অবশ্যই সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে হতে হবে। বিভিন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদেরকে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের আস্থা অর্জন করতে হবে।
৩. দলীয় এবং জাতীয় রাজনীতিতে জাতি, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা রাখার সুযোগ নিশ্চিত করা। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের গঠনতন্ত্র পুনঃমূল্যায়ন করে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধারণ করে চূড়ান্ত করবে এবং তা মেনে চলার বাধ্যবাধকতা থাকবে।
৪. রাজনৈতিক কুতর্ক পরিহার করা। ১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা প্রদর্শন করা। সকল জাতীয় নেতৃবৃন্দের ভূমিকাকে স্বীকার করে প্রত্যেককে তাঁর যথাযথ সম্মান ও মর্যাদা প্রদান করা। ভূঁয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাদ দিয়ে সঠিক মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রণয়ন। গণঅভ্যুত্থানের সকল শহীদ ও আহতদেও পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করে তাঁদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
৫. বিভাজন ও বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করা। ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থের সংকীর্ণতা থেকে উর্ধ্বে উঠে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার রাজনীতির ধারা শুরু করা।
৬. জাতীয় অর্জন ও ঐক্যের বিষয়গুলো চিহ্নিত করে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানো। বিভেদ, বিশৃঙ্খলা, অন্ধ বিরোধীতা, অপপ্রচার, জেদ-এসব নীতি পরিহারপূর্বক অংশগ্রহণমূলক ও ইতিবাচক রাজনীতির সূচনা করা।
৭. তত্ত্ব, মতবাদ বা ধর্মীয় ইস্যুতে বিতর্কের চেয়ে মানুষের অধিকার এবং কল্যাণের প্রতি এবং দলীয় কর্মসূচি নির্ধারণে জাতীয় স্বার্থ ও গণ আকাঙ্খার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব প্রদান।
৮. জনগণের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধকে কোনভাবে আহত করা যাবেনা। প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায়ের রীতি-নীতি, মূল্যবোধ প্রচার ও চর্চার স্বাধীন পরিবেশ নিশ্চিত করা।
৯. বহুত্বকে ধারণ করে রাষ্ট্রের পুনর্গঠন ও রাজনৈতিক ব্যবস্থার পুনর্বিন্যাস এর লক্ষ্যে বাস্তব পরিকল্পনা প্রণয়ন।
১০. নির্বাচন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়াকে পুনর্বিন্যস্ত করতে হবে। নির্বাচনকালীন অরাজনৈতিক সরকার সংবিধানে সংযুক্ত করতে হবে। সমানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি প্রবর্তনের মাধ্যমে জনগণের অংশগ্রহণ ও ভূমিকা আরো ব্যাপক ও কার্যকর করা।
১১. ক্যাম্পাসগুলোতে লেজুড়বৃত্তি ছাত্র রাজনীতি বাদ দিয়ে স্বাধীন সত্তায় বিকশিত ছাত্র রাজনীতির বিকাশ সাধন। দলীয় শিক্ষক রাজনীতি বন্ধ করা জরুরি।
১২. পেশাজীবি ও নাগরিক সমাজকে দেশ গঠনে স্বাধীনভাবে কার্যকর ভূমিকা রাখার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, কালোবাজারী, সন্ত্রাস, উগ্রতা, মাদকতার বিরুদ্ধে কার্যকর সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন পরিচালনা। এ সকল দমনে কার্যকর নীতি প্রণয়ন এবং সেগুলো যথাযথভাবে বাস্তবায়ন।
১৪. প্রতিবেশী দেশসমূহের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণে বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ।
১৫. বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রযন্ত্রের অন্যান্য শাখাকে রাজনীতিকরণের আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড থেকে সরে এসে দক্ষ, সৎ ও দেশপ্রেমিক কর্মকর্তা-কর্মচারি নিয়োগ নিশ্চিত করা।
১৬. নিয়োগের সকল ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়ন নিশ্চিত করতে হবে। প্রতিষ্ঠান গুলোতে সব ধরনের বৈষম্য পরিহার করতে হবে।
১৭. নাগরিকদের বাক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অবাধ তথ্যপ্রবাহ চালু রাখতে হবে। সাইবার অ্যাক্টসহ বাক-স্বাধীনতা পরিপন্থী সকল কালাকানুন বাতিল করতে হবে।
স্বাধীনতা এবং ২০২৪ সালের অভূতপূর্ব গণ অভ্যুত্থান এর মহান লক্ষ্য বৈষম্যহীন সমাজ গড়ত হলে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সরকারের সর্বপর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের প্রধান তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান গুলোকে পেশাদারিত্বে উজ্জীবিত করতে হবে। দলীয়করণের কারণে বাংলাদেশের প্রশাসন আজ ধ্বংসপ্রায়। দূর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলপ্রীতি, অঞ্চলপ্রীতি আজ বাংলাদেশের উন্নয়নে জগদ্দল পাথরের মত বাঁধা হয়ে আছে। যতদিন এসকল অভিশাপ থেকে আমরা মুক্ত হতে না পারবো ততদিন আমরা উন্নত জাতি হয়ে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না। রাজনৈতিক উন্নয়ন এবং স্থিতিশীলতা সাধিত না হলে আমাদের অর্জনগুলো টেকসই হবে না এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতি সাধিত হবে না। রাজনৈতিক আদর্শের ভিন্নতা কোনভাবেই হানাহানি, রক্তপাত বা সংঘাতের কারণ হওয়া উচিত নয়। এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন বেশি। আর এটি সম্ভব একটি পরিপক্ক রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মাধ্যমে। তাই আজ বড় প্রয়োজন দেশ ও জাতি গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ বলিষ্ঠ নেতৃত্বের। জাতিকে দ্বিতীয় স্বাধীনতার সুফল পৌঁছে দিতে হলে এর কোন বিকল্প নেই। আসুন, ছাত্র জনতার এই গণ অভ্যুত্থানকে ঐতিহাসিক সুযোগ হিসেবে গ্রহণ করে মানবাধিকার, অন্তর্ভুক্তি ও আইনের শাসনকে গুরুত্ব দিয়ে রাষ্ট্র কাঠামো সংস্কার করে নতুন বাংলাদেশ গড়ায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করি।
ড. মোঃ এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী; লেখক, অধ্যাপক, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যারয় ও নির্বাহী পরিচালক, সমাজ ও রাষ্ট্রচিন্তা কেন্দ্র, চট্টগ্রাম।