জনপ্রশাসন, দলীয়করণ, সংস্কার

  • ড. মাহফুজ পারভেজ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ড. মাহফুজ পারভেজ, ছবি: বার্তা২৪.কম

ড. মাহফুজ পারভেজ, ছবি: বার্তা২৪.কম

বিগত সরকারের শাসনামলে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা সচিব এবং মাঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদ জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসাবে দায়িত্ব পালনকারীদের নিয়ে এন্তার বিতর্ক ও অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত প্রশাসকদের মধ্যে অনেকের নানা অপকর্ম ফাঁস হচ্ছে। সচিবালয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েছেন দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী ও রাজনৈতিক অবস্থান গ্রহণকারী অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা। মাঠ প্রশাসনেও অনেকের প্রতি দেখা গেছে ছাত্রজনতার আক্রোশ। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের আন্দোলনের মুখে তিন দিনের ছুটি নিয়ে কর্মস্থল ছেড়েছেন ঝিনাইদহের ডিসি এস এম রফিকুল ইসলাম। ফলে সচিবালয় ও মাঠ প্রশাসনে শুদ্ধি অভিযানের দাবিও বিশেষজ্ঞদের মুখ থেকে শোনা যাচ্ছে।

দলীয়করণ ও রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়ায় গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে জনপ্রশাসনে এখনো স্বাভাবিক অবস্থা ফেরেনি। বিগত সরকারের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত কিছু কর্মকর্তা সচিবালয়ে আসছেন না। একজন সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে সচিব পদে থাকা ১১ জন কর্মকর্তার। নতুন সরকার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব থেকে যুগ্ম সচিব পদ পর্যন্ত মোট ৩৪০ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিয়েছে। ২৫ জন ডিসি বদল করা হয়েছে। তারপরেও পরিস্থিতির যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে বলা যায় না।

বিজ্ঞাপন

সচিবগণ যেমন, ডিসিগণও তেমনি স্থানীয় ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কর্তৃত্ববাদ, দুর্নীতি ও অনিয়ম দেখার বিষয়ে ছিলেন অন্ধ, বোবা ও নিশ্চুপ। কোথাও কোথাও জেলা প্রশাসক (ডিসি) অতি উৎসাহের সঙ্গে নিজেকে মনে করতেন আওয়ামী লীগের অঘোষিত সভাপতি। নৈর্ব্যক্তিতা, বস্তুনিষ্ঠতা ও আইনানুগ আচরণের বদলে তাদেরকে কর্তৃত্ববাদী হয়ে দলদাসের ভূমিকাও পালন করতে দেখা গিয়েছিল। তারা যে মন্দ-দৃষ্টান্ত স্থাপন করে প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনকে কলুষিত করেছেন, তার পুনরুদ্ধার কেমন করে সম্ভব হবে? আমলাদের রাজনৈতিক আমলনামা শুদ্ধ করবে কে? শুদ্ধি অভিযান ও সংস্কার ছাড়া তা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায় না।

কেবলমাত্র চুক্তি বাতিল, বদলী বা প্রত্যাহারে মাধ্যমে কারো কার্যকালের ভালো-মন্দের বিচার হয় না। স্বচ্ছ তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে অভিযোগের সত্যাসত্যও নির্ধারণ করা যায় না। সরকার বদল হলে নতুন সরকারের প্রথম কাজ হলো বিষয়গুলো ভালো করে খতিয়ে দেখা। অতীতের মতো এখনো যদি চাপ দিয়ে সুবিধা নেওয়ার ধারা চালু থাকে, তাহলে সমস্যার মূলোৎপাটন করা যাবে না। বর্তমানে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হচ্ছে, তারা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সময় ‘আগে বঞ্চিত হয়েছিল‘ বলে স্লোগান দিয়ে পদ-পদবী বাগিয়ে ছিলেন। বর্তমানেও একই আওয়াজ তুলে সুযোগ নেওয়া হচ্ছে। এটাও এক ধরনের রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার নামান্তর। কোনও বিচার-বিবেচনা, তদন্ত-প্রমাণ ছাড়া শাস্তি কিংবা পুরস্কার দেওয়া মোটেও যুক্তিসঙ্গত নয়। এতে জনপ্রশাসন বা আমলাতন্ত্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সুযোগ নেওয়ার যে অভিযোগ, তার অবসান হয় না। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভিন্ন আঙিকে তা চলমানই থাকে। এবং নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ, নৈর্ব্যক্তিক, পেশাগতভাবে দক্ষ প্রশাসন ব্যবস্থার জন্য বিপদ ডেকে আনে।

ফলে অবস্থাটা এমন দাঁড়াবে যে, আগে আওয়ামী লীগের ধব্জা ধরে ফায়দা নেওয়া হয়েছে আর এখন নতুন সরকারের ধামা ধরে সুযোগ নেওয়া হবে। এমনটি চলতে থাকলে অবস্থার তাতে কোনো ইতিবাচক পরিবর্তন হবে না। নতুন যারা সচিব, ডিসি হয়ে হবেন, তারা নতুন রাজনীতির আজ্ঞাবহ হবেন বা হওয়ার চেষ্টা করে নিজের উন্নতি করবেন। ফলে আবার যখন ক্ষমতার বদল হবে, তখন প্রশাসনে স্থবিরতা, আতঙ্ক ও বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে।

এটা ঠিক যে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে জনপ্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে, তা এর আগে কখনো দেখা যায়নি। সিনিয়র সচিবের পদ সৃষ্টি এবং বেতন কাঠামোতে সর্বশীর্ষ বেতন এবং গাড়ি, বাড়ি, সুযোগ, সুবিধার যথেচ্ছ ব্যবহার করে সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের কতিপয় শীর্ষ কর্তা প্রজাতন্ত্রের নিরপেক্ষ কর্মচারীর স্থলে সরকারের রাজনৈতিক সহযোগীতে পরিণত হন। তারা প্রশাসনকে আওয়ামীকরণ ও সরকারকে দলীয় সরকারে রূপান্তরিত করেন। সরকারও ধীরে ধীরে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে আমলা-নিয়ন্ত্রিত হয়ে যায়। যে কারণে শেষ পর্যন্ত সরকার রাজনৈতিক পন্থার বদলে প্রশাসনিক শক্তি প্রয়োগ করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়ে ব্যর্থ হয়। সরকার বদলের পর দল ও রাজনৈতিক অনুসারীরা আক্রোশ ও হামলার শিকার হয়। কিন্তু সরকারের অপকর্মের সহযোগী আমলারা থাকেন বহাল।

আমলা-নির্ভর না হয়ে সরকার বরং সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি নির্ভর হলে এমন চরম সঙ্কটে আপতিত হতো না। রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে পারতো। রাজনৈতিক কৌশলে বির্পযয় এড়ানোর সুযোগও থাকতো সরকারের সামনে। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক পথে গিয়ে জনবিচ্ছিন্ন ও কোণঠাসা হওয়ার দাম দিতে হলো কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে ক্ষমতা হারানোর মাধ্যমে।

জনপ্রশাসন ও আমলাতন্ত্রকে দলীয় রাজনীতির আজ্ঞাবহ বানিয়ে কারো লাভ হয় নি। কর্মকর্তাদের বলে সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারে নি। বিপদ আঁচ করে আমলারা আগেই সটকে পড়েন। আমলাতন্ত্রও এহেন রাজনীতিকরণের জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যদিও কতিপয় ব্যক্তি বিশেষের ব্যক্তিগত ফায়দা হয়েছে। যার প্রমাণ একজন সদ্য-সাবেক সচিবের (শাহ কামাল) কাছ থেকে উদ্ধারকৃত বিপুল পরিমাণ অর্থের মধ্যেই নিহিত।

ফলে আমলাতন্ত্রের রাজনীতিকরণ বন্ধের জন্য চাপের মুখে কাউকে শাস্তি বা কাউকে পুরস্কার দেওয়াই যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন প্রকৃত সংস্কারের পথে অগ্রসর হওয়া। যার মাধ্যমে রাজনৈতিক আমলার বদলে নৈব্যক্তিক ও পেশাদার আমলা তৈরি হবে এবং সুযোগ-সুবিধার পাহাড়ে বসা উন্নাসিক আমলার বদলে মাটি ও মানুষ-সংশ্লিষ্ট জনবান্ধব আমলাতন্ত্রের বিকাশ ঘটবে।

বর্তমান সরকার নানা রকমের সংস্কারের প্রতিশ্রুতি ও প্রত্যয় ব্যক্ত করছে। আসলেই অনেক ক্ষেত্রে মৌলিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সরকার, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, আমলাতন্ত্র, পুলিশ প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সংস্কারের দাবি অনেক পুরনো। ফলে সংস্কার বাদ দিয়ে জোড়াতালি দেওয়া হলে সমস্যার চক্র ভাঙা যাবে না। বরং নতুন রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে সুযোগ সন্ধানীরা ফায়দা নেবে এবং অচীরেই আবার অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করবে।

সংস্কার ও স্পষ্ট দিক-নির্দেশনা ছাড়া আমলাতন্ত্র ক্রমশ পুরনো আমলের ধারায় দুর্নীতি, অন্যায়, কর্তৃত্ববাদ ও অনিয়মের বিষে আক্রান্ত হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুনর্গঠনের যে সদিচ্ছার কথা বলছে, তা অতীতের দুরাত্মার ছায়ায় বসে মোটেও সম্ভব হবে না। যারা (সংশ্লিষ্ট সচিব, দেশের সব বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার) গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন এবং সরকারের ক্ষমতাকে প্রলম্বিত করতে ‘সহায়তাকারী‘ রূপে চিহ্নিত হয়েছেন, তারা রাতারাতি তুলশী পাতা হয়ে যাবেন, এমন আশা করার বোকামী। ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে যে কর্মকর্তারা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন ও সরকারের সহায়তা করে দুর্নীতি ও অনিয়ম করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত করে শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে আমলাতন্ত্রের অন্যান্য সদস্যরা সতর্ক হবেন না। তারাও আগের মতো সুযোগ নেওয়ার ধান্ধায় থাকবেন। বিশেষত, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দফায় দফায় ক্ষমতা আঁকড়ে থাকতে সহায়তা করা, সরকারের সচিব বা ডিসি বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে গত ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পালানোর ঠিক আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর অনুগত থাকা এবং সরকারের অন্যায্য কাজের পক্ষে আদেশ-নির্দেশ দিয়ে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যে শিশুসহ হাজার নিরপরাধ মানুষকে হত্যা, আহত ও পঙ্গু করেছে, তার দায় প্রধানত সরকারের হলেও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল শীর্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ের বহু দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। সুষ্ঠু তদন্তু ও বিচার না হলে ভবিষ্যতেও এরূপ ভয়াবহ ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

ফলে সরকার বদলই সমস্যার সমাধান আনবে না। জনমুখি সংস্কার ও আইনের সঠিক প্রতিপালনের পরিবেশ সৃষ্টি করা হলে সমস্যার বীজ উৎপাটিত হবে। আমলারাও তাদের কাজকর্মে প্রশাসকের বদলে রাজনৈতিক কর্মী হওয়ার সুযোগ পাবেন না, পেলেও তার প্রয়োজন বোধ করবেন না।

জনপ্রশাসনকে রাজনীতি ও দলীয় প্রভাবমুক্ত করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, রাজনৈতিক পক্ষপাত ও কর্তৃত্ববাদের সহযোগিতার পাশাপাশি তারা বেশ কিছু জনগুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অনিয়ম করেছেন। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী রূপে অর্পিত দায়িত্ব উপেক্ষা করেছেন। বিশেষ করে নদী দখল, বন দখল, পাহাড় কর্তন কোনোক্রমেই সম্ভব হতো না, যদি প্রশাসনের কর্মকর্তারা কঠোর হতেন। দেশের সর্বত্র হাট-বাজার দখল, ঘাট ইজারার কর্তৃত্ব কায়েম করে মাফিয়াদের দ্বারা জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রশাসনের উদাসীনতার কারণে। বাজার সিণ্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও ভেজালের দৌরাত্ম্য বেড়েছে প্রশাসনের শৈথিল্য বা পক্ষপাতের কারণে। প্রশাসনিক আইনের বদলে রাজনৈতিক মনোভাবে তারা কাজ করেছেন বলেই সরকারের পক্ষে সর্বত্র কর্তৃত্ববাদ, দুর্নীতি ও দৌরাত্ম্য কায়েম করা সম্ভব হয়েছিল।

বিগত সরকারের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ হলো স্বৈরাচারিতা ও কর্তৃত্ববাদের। সেই সঙ্গে দুর্নীতি, লুটপাট, বলপ্রয়োগ ইত্যাদি তো রয়েছেই। সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের মদদ না পেলে রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে এতো অনিয়ম ও তাণ্ডব করা আদৌ সম্ভব হতো না। ভবিষ্যতেও সম্ভব হবে না যদি প্রশাসনকে নিরপেক্ষক, নৈর্ব্যক্তিক, বস্তুনিষ্ঠ ও আইনানুগ রাখা যায়। আর তা করলে হলে কিছু দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা এবং সংস্কার করে তাদের মধ্যে এই ভীতির সঞ্চার করতে হবে যে, আইনের বাইরে গিয়ে দলের আনুগত্য করলে চাকরি থাকবে না এবং বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

আমলাদের থাকবে সততা, দক্ষতা ও নিরপেক্ষতা ভিত্তিক সার্ভিস রেকর্ড। তাদের কেন রাজনৈতিক আমলনামা থাকবে? অতীতে যে দলই ক্ষমতায় এসেছে, তারাই আমলাতন্ত্রকে রাজনীতিকরণের মাধ্যমে বিনষ্ট করেছে। ভবিষ্যতে যদি এমনটি হতেই থাকে, তাহলে আইনানুগ-গণতান্ত্রিক সুশাসনের বারোটা বাজবে। ফলে আমলাদের রাজনৈতিক সংযুক্তির পথ চিরতরে রুদ্ধ করতে হবে। আমলাদের রাজনৈতিক আমলনামার বদলে পেশাগত দক্ষতাভিত্তিক বাস্তব কাজের নিরিখে মূল্যায়ন করার ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমানে দলীয় সরকার না থাকায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমলাতন্ত্রের উপর নানা কাজের জন্য নির্ভর করতে হবে। এরই মাঝে সিটি করোপরেশন ও জেলা পরিষদসহ নানা সংস্থার শূন্যতা সৃষ্টি হওয়ায় সেসব কাজেও আমলাতন্ত্রের সদস্যরা নিয়োজত হয়েছেন। এই আমলাতন্ত্র যদি স্যাবোটাজ করে এবং অতীতের মতো রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষের কোলে বসে কর্তৃত্ববাদ, রাজনীতিকরণ, দলীয় পক্ষপাত, দুর্নীতি, অদক্ষতা, অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছারিতা করতে থাকে, তাহলে রক্তরঞ্জিত ছাত্রগণঅভ্যুত্থানের ফলে তৈরি হওয়া নতুন সরকার চরম বেকায়দায় পড়বে। অতএব আমলাদের রাজনৈতিক আমলনামার বিচার এবং প্রকৃত সংস্কারের মাধ্যমে নিরপেক্ষ-পেশাগত-জনমুখী প্রশাসন তৈরির বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেই হবে।

ড. মাহফুজ পারভেজ: অ্যাসেসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম; প্রফেসর ও চেয়ারম্যান, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি)।