এপাড়-ওপাড় বাংলার শিক্ষার্থীদের মিলনক্ষেত্র রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

  • উত্তম কুমার পাল হিমেল
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়

এপাড়-ওপাড় বাংলার এক মিলনক্ষেত্র রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কলকাতার একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। সঙ্গীতের যেন এক আনন্দঘন পরিবেশে মিলনক্ষেত্র এ বিদ্যাপীঠ।

১৯৬২ সালের ৮ মে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে কবির নামাঙ্কিত এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ গৃহীত হয় এবং ওই বছরই পশ্চিমবঙ্গ সরকার রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৬১ পাস করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষা প্রাঙ্গণটি জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে অবস্থিত। দ্বিতীয় শিক্ষাপ্রাঙ্গণটি রয়েছে কাশীপুরে ব্যারাকপুর ট্রাঙ্ক রোডের ধারে মরকত কুঞ্জে। সরকারিভাবে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান আচার্য পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জয়দীপ ধনখর, উপাচার্য সব্যসাচী রায় চৌধুরী।

বিজ্ঞাপন

রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ৬ হাজার ৯৪১ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন। এর মধ্যে স্নাতকে ২ হাজর ৯৪৮ জন, স্নাতকোত্তোর ৩ হাজার ৪৪৬ জন, ডক্টরেট শিক্ষার্থী ৬৪২ জন। ইউজিসি, জাতীয় মূল্যায়ন ও প্রত্যয়ন পরিষদ, ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সমিতির অধিভুক্ত এ প্রতিষ্ঠানটি যেন সঙ্গীত, নৃত্য, তবলা, বাশি, অভিনয়সহ সকল শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে।

মূলত কলা বিভাগের পাঠ দেওয়া হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। তিনটি মূল পাঠন অনুষদ রয়েছে,কলা, চারুকলা এবং দৃশ্যকলা। এছাড়া একটি বিইএড অনুষদ রয়েছে। কলা বিভাগে বাংলা, সংস্কৃত, হিন্দি, ইংরেজির মতো প্রথাগত বিষয় ছাড়াও তুলনামূলক সাহিত্য, অর্থনীতি, গ্রন্থাগার ও তথ্য বিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মানব উন্নয়ন অধ্যয়ন-এর মতো বিষয় পড়ানো হয়।

বিজ্ঞাপন

চারুকলা বিভাগে সংগীতবিদ্যা, নৃত্য, নাটক, যন্ত্রসংগীত, গণযোগাযোগ ও ভিডিওগ্রাফি-র মতো বিষয় পড়ানো হয়। এছাড়া দৃশ্যকলা বিভাগে ফলিত শিল্প, গ্রাফিক্স, পেইন্টিং, ভাস্কর্য, প্রদর্শনশালা সংক্রান্ত বিদ্যার মতো বিষয় পড়ানো হয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারিভাবে স্কলারশিপ নিয়ে প্রতিবছর বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের শিক্ষার্থীরা। তবে এ প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের সীমান্ত যশোর বেনাপােল চেকপোস্ট পেরিয়ে হরিদাশপুর বনগাও থেকে মাত্র ৪০/৪৫ কিলোমিটার দূরে কলকাতা শহর অবস্থিত হওয়ার কারণে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই তুলনামূলক বেশি পড়াশোনা করে।

এছাড়া এতে পড়াশোনার আর্থিক ব্যয়ও তুলনামূলক কম। হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ পৌরসভার শিবপাশা এলাকার বিমলেন্দু দাশ বিপ্রেশ সঙ্গীতে অর্নাস শেষ করে মাস্টার্স শেষ বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। পরিচয় হয় তার আরেক সহপাঠি একই সাবজেক্টের বাংলাদেশের বৃহত্তর ঢাকা এলাকার তিথি মজুমদারের সাথে।

ইন্ডিয়াতে ভ্রমণে গিয়ে ছোটভাই বিপ্রেশের আমন্ত্রণের সুবাধেই মূলত এ বিশ্ববিদ্যালয়টি ঘুরে বিস্তারিত তথ্য জানার আগ্রহ ছিল প্রবল। তাই ২৩ জুন রোববার এ রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরতে গিয়ে বিপ্রেশের সুবাধেই পরিচয় হয় অধ্যাপনায় নিয়োজিত সঙ্গীত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অগ্নিভ বন্ধোপাধ্যায় স্যারের সাথে। সাদামনের মানুষ স্যারের সাথে সংক্ষিপ্ত সময়ে কথা বলে আর সৌজন্য সাক্ষাতে জানা গেল এ প্রতিষ্ঠানের অনেক তথ্য।

এপাড়-ওপাড় বাংলার সঙ্গীতের ভীতকে আরেও মজবুত করতে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে বাংলাদেশের সঙ্গীত ও সংস্কৃতি চর্চ্চাকে আরেও এগিয়ে নিয়ে দেশের সামাজিক অবক্ষয় দূর করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবে এটাই প্রত্যাশা। জয়তু রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।

লেখক: উত্তম কুমার পাল হিমেল, সাবেক সভাপতি নবীগঞ্জ প্রেসক্লাব, হবিগঞ্জ।