বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের অধীনস্থ ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্লাসরুম সংকট, ক্লাসরুমের দুর:বস্থা, নষ্ট প্রজেক্টর, ওয়াশরুমের দুরবস্থাসহ নানা সমস্যা প্রশাসনকে জানানো হলেও সমাধান হয়নি বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এরই প্রেক্ষিতে বুধবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীরা কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন।
এসময় উপস্থিত ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং-র একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ক্লাসরুম ৩টি এবং এর বিপরীতে ব্যাচ মোট ৬টি। দেখা যায়, অনেকসময় রুটিনে ক্লাস ওভারল্যাপ হলে ক্লাসরুমই পাওয়া যায় না। আজও একজন শিক্ষক ক্লাসরুম ফাঁকা না পেয়ে ক্লাস না নিয়েই চলে যান।
তারা আরও বলেন, ক্লাসের প্রজেক্টর নষ্ট, ফ্যান নষ্ট, ওয়াশরুম নষ্ট, ক্লাসরুমের পাশাপাশি ক্লাসে সিটেরও সংকট, ৩০ জনের ক্লাসে ৫০ জনকে ক্লাস করতে হয়, ল্যাবের অবস্থাও করুণ। আমরা কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিনের কাছে এসব বিষয় নিয়ে প্রায় চারমাস আগে কথা বলি কিন্তু তিনি শুধু আশ্বাস দিয়েই ক্ষান্ত।
এ বিষয়ে ফুড টেকনোলজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগে অধ্যাপক ড. মো. আনিছুর রহমান মজুমদার জানান, শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিন ধরে ক্লাসরুম সংকট, ল্যাব ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিয়ে অভিযোগ করে আসছে। এই বিষয়টা শিক্ষার্থী ও শিক্ষক ডিনকে অবহিত করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়ে আসে।
চারমাস আগে ক্লাসের দুরবস্থার বিষয়টি অবহিত করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে বাকৃবির কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো জয়নাল আবেদীন বিষয়টা অস্বীকার করেন।
তিনি বলেন, এ বছর নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়াতে ক্লাসরুমের দরকার। বায়োইনফরম্যাটিকসে মাত্র ২টি ক্লাসরুম। ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এ ২টি মাস্টার্স ডিগ্রি হওয়াতে রুমের সংকট হচ্ছে। রুটিন বিন্যাসে পরিকল্পনা ত্রুটির কারণে ক্লাসের অধিক্রমণ হচ্ছে। ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর এসে মেইন বিল্ডিংয়ে সাময়িকভাবে একটি রুমের ব্যবস্থা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা আজকে অভিযোগপত্র দিয়েছে, এর আগে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এর শিক্ষার্থীদের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, "এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।"
এ বিষয়ে বাকৃবির উপাচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মিটিংয়ে আছি, এখন কথা বলতে পারবো না।
উল্লেখ্য, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদ থেকে বি এস সি এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং সহ বায়োইনফরমেটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং তিনটি ডিগ্রি প্রদান করে থাকে।