চবির শাটল ট্রেনে নিরাপত্তাসহ চার দাবিতে আন্দোলন

  • চবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে শাটল ট্রেন ও প্রধান ফটক আটকে আন্দোলন করেছে শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় শহিদ মিনারের সামনে শুরু হয় মানববন্ধন। এরপর শহিদ মিনার থেকে শোডাউন নিয়ে প্রধান ফটকে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এসময় মূল ফটক ও শাটল ট্রেন আটকে দেন আন্দোলনকারীরা। দুপুর ১২টা থেকে দুইটা পর্যন্ত চলে এই আন্দোলন।

বিজ্ঞাপন

এর ফলে ক্যাম্পাস থেকে চট্টগ্রামগামী দুপুর ১টা ও দুপুর ২টার শাটল ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। পরে সোয়া ২টায় শাটল ট্রেন ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়।

আন্দোলনরত ইংরেজি ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী অর্ণব সরকার দীপ্ত বলেন, গতকাল আমাদের বিভাগের দুইজন শিক্ষার্থী শাটলে ছিনতাইকারীদের দ্বারা নির্মমভাবে আহত হয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা মানববন্ধন করেছি। যেহেতু শাটল ট্রেন অনিরাপদ তাই আমরা শাটল ট্রেন বন্ধ করে দেই। সেই সাথে প্রশাসনের কাছে আমাদের ৪ দফা দাবি পেশ করেছি। কাল প্রশাসনের সাথে আমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের আলোচনা হবে। দাবি পূরণের ব্যাপারে প্রশাসন আমাদেরকে ইতিবাচক আশ্বাস দিয়েছে। যদি ওনারা আমাদের দাবি পূরণ না করেন তাহলে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব।

বিজ্ঞাপন

এ সময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। তিনি জানান, আমরা আহত হওয়ার কথা শুনেই সাথে সাথে বিশ্বিবদ্যালয়ের প্রক্টর পাঠিয়েছি। তারা ওই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে আসলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রথমে ন্যাশনাল হাসপাতালে পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আমরা তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর নিচ্ছি । এমনকি আমি তার বাসায় গিয়েও তার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছি। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আর্থিকভাবে সাহায়তা করা হয়েছে। আমরা শাটলে নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি। তারা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছে।

তিনি আরও বলেন, আগামীকাল তোমাদের ছাত্র প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা আলোচনায় বসব। আমরা সেখানে নিরাপত্তা বলয় শক্তিশালী করতে কি কি পদক্ষেপ নেওয়া যায় সেগুলো আলোচনা করা হবে।

চবি প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, ঘটনার খবর পাওয়ার পর আমরা দ্রুত একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে আহত শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে নিয়ে যাই। উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নেওয়ার সময় একজন অভিজ্ঞ এ্যাটেন্ডেন্টও সঙ্গে ছিলেন, যাতে যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যালে সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পর, ভুক্তভোগীর পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে। প্রো-ভিসি ও প্রক্টরিয়াল বডি ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করেছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছেন।

প্রক্টর আরও উল্লেখ করেন, অত্র এলাকার ডিআইজি’র সঙ্গে যোগাযোগ করে ঘটনাটি অবহিত করি। তারা দ্রুত তদন্তের জন্য একটি কমিটি গঠন করেন এবং রাতেই অভিযানে নেমে ৫-৬ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেফতার করেন।

এসময় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি পেশ করেন। দাবিগুলো হলো-

১. দুর্বৃত্তদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা।

২. শাটলে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের প্রবেশ নিশ্চিত করতে ও বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ স্থায়ীভাবে রোধ করতে কঠোরতম ব্যবস্থা নেয়া।

৩. প্রতিটি শাটল বগিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য কমপক্ষে একজন করে পুলিশ মোতায়ন করা।

৪. ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক বহন করা।