‘আমাকে জোর করে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি বানানো হয়েছে’
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বিতর্কিতদের সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়েছে জেনে তার সম্মাননা স্মারক প্রত্যাখ্যান করেন। এবার সেই বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশচন্দ্র রায়। তার দাবি, রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না থাকলেও তাকে জোর করে বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি বানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
কমলেশচন্দ্র রায় বলেন, জুলাই বিপ্লবে শহীদ আবু সাঈদসহ সব শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা কারি । আসলে আমাকে বঙ্গবন্ধু পরিষদের যে সভাপতির কথা বলা হচ্ছে আমি নিজ থেকে কখনো এটা হতে চায়নি। আমাদের এক কলিগ মশিউর আমাকে জোর করে সভাপতি বানিয়েছে। তিনি নিজেই এটা সম্পাদনা করতেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন আপনি শুধু উপস্থিত থাকবেন ,আমিই সবকিছু করব। আমি কখনো কাউকে প্রোগ্রামে ডাকিনি। আমি এই সংগঠনের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে কোন কিছু জানতাম না। কেন্দ্র থেকে কেউ আমাকে কোন কিছু জানায়নি। আমি জীবনে কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম না। আমার কোন উচ্চাভিলাষ নেই। তারপরেও স্বাক্ষর নিয়ে দূর্ভাগ্যক্রমে সে আমাকে এই সংগঠনের সাথে যুক্ত করে ফেলেছে। কেন্দ্র থেকে কেউ কোন দিন আমাকে বলেনি যে আপনি সভাপতি হচ্ছেন বা হবেন।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিষয় নিয়ে আমার সাথে বসেছিল। আমি সবার সামনে আমার অবস্থান ক্লিয়ার করেছি। সেদিনই আমি বঙ্গবন্ধু পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেছি। শিক্ষক মশিউরসহ আবু সাঈদ হত্যার সাথে যারাই জড়িত দেশের আইন আদালত তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করবে এটাই আশা করি।
ছাত্র জীবনে কোন রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত থাকার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১১ সালের অক্টোবরে যোগদান করি। এর আগে আমি রাজশাহী প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘ ১০ থেকে ১১ বছর চাকরি করেছি। খোঁজ নিয়ে দেখবেন আমার শিক্ষাজীবন এবং ছাত্র জীবনে কখনো কোন রাজনৈতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলাম না।
এর আগে, ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হন তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এদিন মঞ্চে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন কমলেশ চন্দ্র রায় ও কলা অনুষদের ডিন শফিক আশরাফকে সম্মাননা দেওয়ায় আপত্তি তোলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার উসকানিদাতা ও ফ্যাসিবাদের দোসর এই দুই শিক্ষক। এ অভিযোগ শোনার পর নিজের সম্মাননা প্রত্যাখ্যান করেন তথ্য উপদেষ্টা।