কবিতাকে বহুরূপে চিনি আমি
কবিতা শিশুর মতো
কবিতা কখনো কখনো সর্বাঙ্গ সুন্দর
কখনো উচ্চতায় খাটো-বামন
কখনো বেঢপ লম্বা
কখনো পঙ্গু-অন্ধ
ফর্সা-কালো-বাদামি
কবিতাকে বহুরূপে চিনি আমি
কবিতা শিশুর মতো দামি
কবিতাটা পাঁচফুট আট ইঞ্চি লম্বা
আমার একটা বাড়ি আছে—দেহবাড়ি
প্রতিদিন সকাল আটটা থেকে বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত
বাড়িটাকে আমি ভাড়া দেই একটা প্রতিষ্ঠানের কাছে
আর প্রতিষ্ঠানের দেয়া ভাড়ার টাকায়
আমার সংসার মাস চলে
আমার একটা বাড়ি আছে—দেহবাড়ি
পৈত্রিকভাবে পাওয়া এই সম্পত্তিটা দিয়েই
আমি জীবন নির্বাহ করি
আমিও বাড়িওয়ালা
আমরা আজকাল
আমরা আজকাল প্রকাশ্যে হাসি না
খুব গোপনে মনে মনে আমাদের হাসি পায়
এই হাসির খবর আমাদের বউরা জামাইরা
দোকানদার সিএনজিওয়ালা
অফিস কলিগ মেয়েবন্ধু কেউই জানে না
সবাই শুধু দেখে আমাদের গম্ভীর রাগী মুখ
আর অহেতুক দাপট
আমরা আজকাল প্রকাশ্যে হাসি না
আমাদের দাঁত এখন ঠোঁটের হিজাব পড়ে
ক্লাসরুম
এইমাত্র গর্জন করতে করতে মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল একটা প্লেন
যেন আমাদের সাধের পাখি
নরক থেকে উড়ে যাচ্ছে স্বর্গের দিকে
আমরা ঘাড় কাত করে তাকে দেখছি পাপীদের মতো
আর হতাশ হচ্ছি
এইমাত্র গর্জন করতে করতে মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল একটা প্লেন
আর আমরা তাকে দেখতে গিয়ে মাথা উঁচু করা শিখলাম
এমনিতে আমাদের মাথা সবসময় নীচুই থাকে
জেনাস
বড় রাস্তা দিয়ে রিক্সায় চড়ে যাচ্ছিলাম
রিক্সাওয়ালা মাথা নীচু করে রিক্সা চালাচ্ছিল
আর আমি সিগারেট টানতে টানতে
করছিলাম আয়েশী ভ্রমণ
হঠাৎ রাস্তার পাশের একটা গলি থেকে
বেরিয়ে এলো একটা মেয়ে
সাথে সাথে আয়েশীভাব কাটিয়ে তীক্ষ্ণ হয়ে উঠলে আমার চোখ
রিক্সাওয়ালাকেও দেখলাম নীচু মাথা উঁচু করে
মেয়েটাকে দেখছে সমস্ত আগ্রহ নিয়ে
আর আমাদের এই বুভূক্ষু দেখার মধ্যেই রিক্সাটা
একটা গর্তে হোঁচট খেলো
এবং আমরা দুজনেই নড়ে উঠে বর্তমানে ফিরলাম
বাবু আর রিক্সাওয়ালা— আমরা এখন সমলিঙ্গের—
সমশ্রেণীর
জ্যামজ
শীত মৌসুমে বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম
অফিসে পৌঁছানোর আগেই গ্রীষ্ম এসে গেল
সূর্য এখন দাপাচ্ছে
রাস্তায় কোরবানির গরুর মতো গিজগিজ করছে
মানুষ যানবাহন আর অস্থিরতা—
কেউ কোথাও পৌঁছাতে পারছে না
পথেই জীবন কাটছে
আমি স্বপ্নে নাচি
আমি স্বপ্নে নাচি
ভয়াবহ এই নাচ সব সৌন্দর্যকে ছাপিয়ে
এক মানবিক উল্লাসে মেতে ওঠে
আর তার ছন্দে ধ্বনিত হয়
সমস্ত প্রাণের মুখরতা
আমি স্বপ্নে নাচি
আমি স্বপ্নে বাঁচি