সাদিয়া মাহ্‌জাবীন ইমামের নিরীক্ষাধর্মী গল্পগ্রন্থ ও সম্পাদিত প্রবন্ধ সংকলন

  • ফিচার ডেস্ক
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাদিয়া মাহ্‌জাবীন ইমাম

সাদিয়া মাহ্‌জাবীন ইমাম

অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০-এ চৈতন্য থেকে প্রকাশিত হয়েছে সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমামের তৃতীয় গল্পগ্রন্থ ‘বৈদিক পাখির গান’। যদিও বইয়ের লেখাগুলোকে তিনি “ব্যক্তিগত নিরীক্ষা ও খেয়াল”প্রসূত বলেই অভিহিত করছেন। তাঁর মতে, “প্রকরণ নির্ধারণে আকিকার মতো নামকরণ করতে হয়, তাই বলা হচ্ছে গল্পগ্রন্থ।” লেখকের ভাষ্যে এটি মূলত—“গল্প, গদ্য, ভ্রমণ, পাঠ প্রতিক্রিয়া”র একটি মিশ্রণ।

‘যুক্ত’ নামে বইয়ে থাকা একটি গল্পের পটভূমিকা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম বলেন—“একটা দাঁড়কাককে চার বছর ধরে বহন করেছিলাম মাথার ভেতর। ব্রংকসে এডগার অ্যালেন পো’র বাড়ির দেওয়ালে ঝোলানো ছিল বিখ্যাত ‘র‌্যাভেন’ কবিতার দাঁড়কাক। পো পার্কেও ছিল সেই কাকটা। চারবছর পর সে হয়ে উঠল আরেক পাখি, যা ‘যুক্ত’ গল্প।”

বিজ্ঞাপন

নামগল্প ‘বৈদিক পাখি’ তাঁর মতে, “আরেকটু বিশেষ কিছু।” রোহিনটন মিস্ত্রির ফাইন ব্যালেন্সের পার্শিয়ান দিনা দালালদের গল্পের অভিঘাত তাঁর ‘৪২/১ নম্বর বাড়ি’ গল্পটি।

সোজাসাপ্টা গল্পগ্রন্থের মতো না করে বইটির এমন মিশ্রিত চরিত্র সম্পর্কে তিনি ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে—“লেখকের একটা রাজনীতি তো থাকেই লেখা নিয়ে। দেখতে চেয়েছিলাম, শিল্প ও প্রকাশের মানসিক যাত্রা পথটির দৈর্ঘ্য প্রস্থ ও বাঁক। ব্যাপারটা সাবান ও গ্লিসারিন বাই প্রোডাক্ট বলা চলে। একটি প্রকাশিত গল্প, সাথে গল্পটি লেখার সময় অন্য যে মানসিক প্রস্তুতি, দুটো পরপর রাখা হয়েছে।”

মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে চৈতন্যের ২৫০-২৫১ নং স্টলে ‘বৈদিক পাখির গান’ পাওয়া যাবে। এটি লেখকের তৃতীয় গল্পগ্রন্থ। বিনিময় মূল্য ৩০০ টাকা। তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘পা’ ২০১৪ সালে এবং ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল দ্বিতীয় গল্পগ্রন্থ ‘রক্তমূলে বিচ্ছেদ’।

বইমেলায় প্রকাশিত তাঁর দুটি বইয়ের প্রচ্ছদ

এছাড়া এবারের বইমেলায় ভাষা, দর্শন ও সংস্কৃতি নিয়ে কালোত্তীর্ণ পঁচিশটি প্রবন্ধের একটি সংকলন—‘চেতনার উত্তরাধিকার’—পুলক দেবনাথসহ তাঁর যৌথ সম্পাদনায় অন্যপ্রকাশ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইয়ে স্থান পাওয়া প্রবন্ধগুলো ভাষা, দর্শন, সংস্কৃতি, ইতিহাস, সাহিত্য—পাঁচটি আলাদা পর্বে ভাগ করা। ভাষা পর্বের প্রবন্ধগুলো হলো—ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র ‘বাঙ্গালা ভাষায় পারসী প্রভাব’, ‘ফারসীর বাংলা দখল’; অমূল্যচরণ বিদ্যাভূষণের ‘বাংলার প্রথম ছাপায় বঙ্গাক্ষর’; মুহম্মদ এনামুল হকের ‘চট্টগ্রামী বাংলায় বৌদ্ধ-প্রভাব’।

দর্শন পর্বে—রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর ‘সত্য’; জগদীশ চন্দ্র বসুর ‘মনন ও করণ’; প্রবাসজীবন চৌধুরীর ‘সৌন্দর্যদর্শন’; গোবিন্দচন্দ্র দেবের ‘সমন্বয় দর্শন ও মানুষের ভবিষ্যৎ’; দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফের ‘বাংলাদেশে দর্শন’।

সংস্কৃতি পর্বে রয়েছে—বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ‘বঙ্গীয় নারী-শিক্ষা সমিতি’; আবুল হুসেনের ‘আমাদের কর্তব্য কি?’; মুহম্মদ মনসুরউদ্দিনের ‘বাউল সাধনা’; সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘শক্তির সন্ধানে মানুষ’; অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জাতি ও শিল্প’; আহমদ শরীফের ‘দেবতা ও দেবতামঙ্গল’।

ইতিহাস পর্বে—হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘বঙ্গে বৌদ্ধধর্ম’; সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের ‘গৌড়বঙ্গ’; নরেন বিশ্বাসের ‘ইতিহাসের আলোকে বাঙলাদেশের সংস্কৃতি (সামন্ত যুগ)’; মমতাজুর রহমান তরফদারের ‘জাতীয় চেতনা ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর ভূমিকা’; মুহম্মদ সিদ্দিক খানের ‘প্রাচীন ঢাকার পঞ্চায়েত ব্যবস্থা’।

এবং সাহিত্য পর্বে—মেঘনাদ সাহার ‘কাব্য ও বিজ্ঞান’; প্রমথ চৌধুরীর ‘বর্ষা’; কাজী আবদুল ওদুদের ‘রবীন্দ্রনাথ ও মুসলমান-সমাজ’; রণেশ দাশগুপ্তের ‘অব্যাহত অবিভাজ্য অপরিহার্য প্রতিনিয়ত নজরুল’; আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদের ‘প্রাচীন বঙ্গ-সাহিত্য ও মুসলমান সমাজ’।