একলা চলো নীতিতে বিএনপি?

  • শিহাবুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

জোট-ঐক্যফ্রন্টের চিন্তা মাথা থেকে নামিয়ে নিজেদের মতো করে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি। কে ২০ দলীয় জোট বা জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে গেল, তা নিয়ে কোনো মাথা ব্যাথা নেই দলটির।

বিএনপির নেতারা মনে করেন, প্রতিটি দলের ও সেই দলের নেতাদের একটা স্বাধীনতা রয়েছে। তারা ইচ্ছে করলে জোট বা ঐক্যফ্রন্টে যুক্ত হতে পারেন, আবার বেরিয়েও যেতে পারেন। এতে বিএনপির কোনো বক্তব্য নেই।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির একটি সূত্র থেকে জানা গেছে, নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে নিজেদের শক্তি সঞ্চয় করতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে পর্দার আড়ালে বা সম্মুখে যা যা করা যায়, সব কিছুই করতে, স্বাভাবিকভাবে নিজেদের রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া এবং সরকারকে না ক্ষেপানোরও নির্দেশনা দিয়েছেন তারেক। দেশের বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশে জোটের নেতাদের নিমন্ত্রণ না জানানোও পরিকল্পনার অংশ।

দলটির নেতারা বলছেন, জোট করা হয়ছিল নির্বাচন সামনে রেখে। এখন তো নির্বাচন শেষ। কিন্তু জোট ভাঙা বা বের হয়ে যাওয়া উচিত হবে না। তবে এখন জোটের দিকে নজর না দিয়ে নিজ দলের দিকেই তাকাতে হবে, খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

বিএনপির বর্তমান কার্যক্রম নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল এবং নেক্সট রুলিং পার্টি। এখন ওরা নিজেরা নিজেরা এগুচ্ছে, সেটাই দরকার ছিল। জোট করা, এর-ওর সঙ্গে হাত মেলানো, এগুলো প্রথম থেকে না করে নিজেরাই কাজ করলে ভালো হতো। এখন ঠিকভাবে চলছে বিএনপি। মানুষ এখানে-সেখানে যে দুষ্কর্মগুলো করছে, সেগুলোর কারণ হলো রাজনৈতিক দলের প্রতি তাদের আস্থা না থাকা ও হতাশা। বিএনপি অন্তত ওই দিকে যায়নি, এটা ভালো। কামাল হোসেনের সঙ্গে হাত মেলানো, ২০ দলীয় জোট করে খারাপ পথে যাচ্ছিল। কিন্তু এখন সে পথ থেকে ফিরে এসেছে। দেশর বিভিন্ন জায়গায় সমাবেশ করছে, এভাবে যদি চলে, তাহলে তাদের সমর্থনের অভাব হবে না। এখন আপাতত বিএনপি একাই চলছে। এভাবেই চলা উচিত। কারণ জোট বা ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে তাদের মেলে না।’

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক বলেন, ‘নির্বাচনী জোট হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর আগে আমরা ২০ দলীয় জোট করেছি। এ নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন অতিতেও হয়েছি। তবুও আমাদের এই জোটের কোথাও কোনো কিছু ঘটে নাই। এর মধ্যে কর্নেল (অব.) অলি (এলডিপি’র চেয়ারম্যান) আরেকটা জোট করেছেন। ঐক্যফ্রন্ট বা ২০ দল থেকে কে বেড়িয়ে গেছেন, সেটা নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই। যে কেউ জোট থেকে বেড়িয়ে যেতে পারেন, তাদের সে স্বাধীনতা আছে। কিন্তু আমাদের দৃষ্টিতে, আমরা চাইব ঐক্য ধরে রাখতে। কারণ নেতাদের ঐক্যের মাধ্যমেই জনগণের ঐক্য শক্তিশালী করা যায়। কিন্তু আমাদের নিজস্ব কিছু কর্মসূচি আছে। যেমন আমরা মহা সমাবেশ করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমরা ত্রাণ দিচ্ছি। আমরা আমাদের নিজস্ব দলীয় কায্রপ্রম আমরা চালাচ্ছি। ঐক্যজোটের আহ্বানে মিটিং হচ্ছে ,সেখানেও আমরা যাচ্ছি।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের শক্তি যে ক্ষয় হয়েছে, সেটা আমরা মনে করি না। আমাদের শক্তি জনগণ, তারা আমাদের সঙ্গেই আছে। আর আমাদের রীতি অনুযায়ী সাংগঠনিক তৎপরতাও চলছে।’

অপর দিকে বিএনপির সর্বচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছি।’

২০ দলীয় জোট নিয়ে তিনি বলেন, ‘জোট তো আছেই। জোটের সঙ্গে যখন যেটা করা দরকার, তখন সেটা করব। এখন দলীয় ও সাংগঠনিক প্রোগ্রাম নিয়ে কাজ করছি।’