আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে দ্বিতীয় দফা সংলাপকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে গণভবনের সামনের সড়কও আশেপাশের এলাকায়। এসপিবিএন এর নিয়মিত সদস্যদের পাশাপাশিও মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য।
বুধবার (৭ নভেম্বর) গণভবনের ২নং গেইটের আশপাশের এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সংলাপ শুরুর আগে ১৪ দল ও ঐক্যফ্রন্টের নেতারা গণভবনে আসার আগে থেকেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় গণভবনের আশপাশ এলাকায়। তবে সংলাপ শুরুর হওয়ার পর বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন এলাকায় সব সময়ই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার থাকে। তবে সংলাপ উপলক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সংখ্যাটা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
এ বিষয়ে গণভবনে দায়িত্বরত এসপিবিএন সদস্য এএসআই নাজমুল বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘এসপিবিএন সদস্যদের সংখ্যা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে ডিএমপির পুলিশের সংখ্যা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে গণভবন এলাকায়।’
বাজার সিন্ডিকেটে আ.লীগের প্রেতাত্মারা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদীর মরজালে ছাত্র আন্দোলনে শহীদ জুনায়েদ আল হাবিবসহ অন্যান্যদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের লোকদের মোটেও দেশপ্রেম নেই। তারা মুখে দেশপ্রেমের কথা বললেও অন্তরে তারা ভিন্ন। তারা যে গণহত্যা সৃষ্টি করেছেন দেশে তাদের রাজনীতি করার অধিকার নেই। এটা জনগণের কথা। ফেরাউনের রাজত্ব বেশি দিন থাকতে পারে না।
তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে বলেন, সাধারণ মানুষ যেন নির্বিঘ্নে তার আয় অনুযায়ী বাজার করে খেতে পারে তার জন্য বাজার নিয়ন্ত্রণ করুন। আজকে কেন মোটা চালের দাম, গরুর মাংসের দাম বাড়বে? কয়েকদিন ধরে ডিমের বাজার নিয়ে বলায় এখন একটু কমেছে। তাই সিন্ডিকেটে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।
আমরা বিএনপি পরিবারের আয়োজনে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসিচব খায়রুল কবীর খোকন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনজুর এলাহী, আমরা বিএনপি পরিবার সংগঠনের সভাপতি আতিকুর রহমান রুমন, জেলা যুবদলের সভাপতি মহসিন হোসেন বিদ্যুৎ, ভিপি ইলিয়াছ ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ।
এর আগে, প্রধান অতিথি শহীদ জুনায়েদ আল হাবিবের পরিবারের সঙ্গে সমবেদনা জানাতে তার বাড়িতে গিয়ে সদস্যদের খোঁজ খবর নেন। এসময় ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের মাঝে সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুদান বিতরণ করা হয়।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়েও জাতীয় পার্টি বৈষম্যের শিকার। মিথ্যা মামলা দিয়ে জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈষম্য করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
জিএম কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীরা রক্ত দিয়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির বিরুদ্ধে প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে এর প্রতিবাদ করা হবে। আমরা রাজপথে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ করবো। জাতীয় পার্টির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের সাথে অবিচার হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের নামে মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে রংপুর থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। রংপুরের মানুষ রাস্তায় জীবনবাজী রেখে আন্দোলন করে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ফাঁসি থেকে রক্ষা করেছে। আমার জন্যও তারা রাজপথে লড়াই শুরু করেছে। আমরা তাদের ঋণ কখনোই শোধ করতে পারবো না। আমরা অপরাধ করিনি, আমাদের অপরাধী করার অপচেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগের দোষর হিসেবে আমাদের ব্র্যান্ডিং করার অপচেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগের নির্বাচন ব্যবস্থায় অংশ নেওয়ার কারণে কাউকে স্বৈরাচারের দোষর বলা উচিত নয়। কারণ, আওয়ামী লীগের নির্বাচন ব্যবস্থায় বিএনপিসহ সব দলই অংশ নিয়েছিলো।
জিএম কাদের বলেন, একটি চক্র জাতীয় পার্টিকে ছাত্র আন্দোলনের বিপক্ষের দল হিসেবে চিহ্নিত করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে। যে ছাত্রদের আন্দোলনে আমরা সমর্থন দিয়েছি, আমাদের নেতা-কর্মীরা অংশ নিয়ে হামলা-মামলার শিকার হয়ে জেল খেটেছে। সেই আন্দোলনের হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতা-কর্মীদের আসামি করা হচ্ছে। এই অন্যায় মেনে নেওয়া হবে না। বৈষম্যবিরোধী ন্যায়বিচার ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের সংগ্রামে অংশ নিয়েও জাতীয় পার্টি ন্যায় বিচার পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে জাতীয় পার্টি সর্বতোভাবে সমর্থন দিয়ে আন্দোলনে সক্রিয় ছিলো। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় অংশ নেওয়ার কারণে আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে রংপুরে মামলা হয়েছে পার্টির পদ পদবি উল্লেখ করে। আমাদের নেতা-কর্মীরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে যোগ দেওয়ার কারণে গ্রেফতার হয়ে হাজতবাস করেছে। ১ জুলাই ছাত্ররা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন শুরু করলে, আমি ৩ জুলাই সংসদে তখনকার প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়ে বক্তৃতা করেছি। বক্তৃতায় আমি বলেছি, ছাত্রদের এই আন্দোলন যৌক্তিক। চাকরিতে কোটা পদ্ধতি সংবিধান পরিপন্থি।
জাতীয় পার্টির একটি উজ্জল ভবিষ্যৎ আছে। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
প্রেসিডিয়াম সভায় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু, সৈয়দ মোহাম্মদ আবদুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ,হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ টি ইউ তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মো. মিজানুর রহমান, সৈয়দ দিদার বখত, নাজমা আক্তার, আলমগীর সিকদার লোটন, মো. এমরান হোসেন মিয়া, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জহিরুল আলম রুবেল, শেরীফা কাদের, মনিরুল ইসলাম মিলন, মাসরুর মওলা, মো. জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া, মো. আরিফুর রহমান খান, মো. আশরাফুজ্জামান আশু, আমিনুল ইসলাম ঝন্টু ও এস এম ইয়াসির।
তৃণমূল বিএনপির নেতা শমসের মবিন চৌধুরী বনানীর বাসায় অভিযান চালাচ্ছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
অভিযানে তাকে বাসায় পাওয়া গেলে আটক করা হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মো. রবিউল হোসেন ভুঁইয়া অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে ডিবি সূত্রে জানা যায়, ডিবি গুলশানের একটি টিম শমসের মবিন চৌধুরীর বনানীর বাসায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে অভিযান পরিচালনা করছে। অভিযানে যদি বাসায় শমসের মবিন চৌধুরীকে পাওয়া যায় তাহলে তাকে আটক করা হতে পারে।
এদিকে গতকাল বুধবার দুপুরে শমসের মবিন চৌধুরীকে বিদেশ যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শমসের মবিনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে শমসের মবিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে যেতে চেয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, শমসের মবিন চৌধুরী বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৫ সালে তিনি বিএনপির সব পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর ২০১৮ সালে সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্পধারা বাংলাদেশে যোগ দেন তিনি।
সবশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি জাতীয় নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন হন তিনি। তৃণমূল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত নাজমুল হুদা।
গত জাতীয় নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিএনপিকে নিবন্ধন দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনসহ বিগত ১৫ বছরে যাদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে যেন শহীদ হিসেবে কবুল করেন। শুধু আমরাই মজলুম ছিলাম না। এ দেশের ১৮ কোটি মানুষই ছিল মজলুম।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ঝিনাইদহে নির্ধারিত অনুষ্ঠানে যাবার পথে সকালে মাগুরা শহরের ভায়না মোড়ে এক পথ সভায় এসব কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, স্বৈরাচারী সরকার ও তার ঘুষখোররা সিন্ডিকেট করে মানুষের জীবনকে শ্বাসরুদ্ধ করে দিয়েছিল। এ অবস্থা থেকে জাতি মুক্তি চাই। গুম করেছেন, মানুষের ইজ্জত লুণ্ঠন করেছেন, সারা বাংলাদেশকে জাগায় জাগায় দখল করেছেন। মানুষের সম্পদের উপর লোলুপ দৃষ্টি দিয়েছেন। তাদের কারণে বহু জায়গায় সম্ভ্রমশীল পরিবারের মেয়েরা লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছে। তাদের সোনার ছেলেরা ধর্ষণের সেঞ্চুরি পালন করেছে। আমরা এগুলো থেকে মুক্তি চাই।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এমন একটি দেশ চায়, এমন একটি রাষ্ট্র চায়, যেখানে আল্লাহ তায়ালার বিধান অনুযায়ী সামাজিক সু বিচার কায়েম হবে। সেখানে মানুষের মধ্যে কোনো বৈষম্য থাকবে না। যে যার ন্যায্য পাওনা হাতে পেয়ে যাবে। যুবকদের হাতে কাজ তুলে দেওয়া হবে।
জাতি গঠনে যুবকেরা ভূমিকা রাখবে। বেকারত্বের অভিশাপে আর একটি যুবককেও আত্মহত্যা করতে হবে না। চাকরি পাওয়ার জন্য কোনো দুষ্ট লোকের কাছে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিতে হবে না। বিচারের জন্য কাউকে কারো দয়ার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে না। বাজারে গেলে কাউকে মাথায় হাত দিতে হবে না এমন একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র আমরা গড়ে তুলতে চাই। ধনী এবং গরীব লোক সকলেই সম্মানের সাথে বসবাস করবে। মায়েরা থাকবে মায়ের মর্যাদায়, মেয়েরা থাকবে মেয়ের মর্যাদায়। তাদের ইজ্জতের ওপর হাত দেয়ার সাহস কোনো দুষ্ট লম্পটের হবে না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় কার্যকলাপ সসম্মান ও নিরাপত্তার সাথে পালন করবে। কাউকে নিরাপত্তা বা পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। যদি মসজিদে পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন না হয়, তাহলে মন্দিরেও পাহারা দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। মসজিদেও যাতে কোনো ইমামের হাত থেকে মাইক কেড়ে নিতে না পারে খতিবকে অপদস্থ করতে না পারে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। এমন একটি দেশ গড়তে চাই, আমরা দেশবাসির সহযোগিতা চাই। ন্যায় এবং ইনসাফের ভিত্তিতে, বৈষম্যহীন একটি মানবিক দেশ জামায়াতি ইসলামী গড়ার স্বপ্ন দেখে। এই যাত্রায় এই সফরে গোটা দেশবাসির সহযোগিতা চাই। পথ সভায় বক্তব্য শেষে তিনি ঝিনাইদহের উদ্দেশ্যে রাওনা দেন।
পথসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এমবি বাকের। এসময় পথ সভায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।