২০০৫ সালের ১১ এপ্রিল গভীর রাতে সাভারের পলাশবাড়িতে ধ্বসে পড়ে স্পেকট্রাম সোয়েটার অ্যান্ড নিটিং ফ্যাক্টরি। নয়তলা ভবনে তখন রাতের শিফটে কাজ করছিলেন শতাধিক কর্মী। সেই ঘটনায় নিহত হয় প্রায় ৬৪ জন। তদন্ত কমিটির রিপোর্টে জানা যায়, কোনো রকম ঝুঁকি মোকাবিলার ব্যবস্থা ছাড়াই ঘটনার তিন বছর আগে একটি জলাভূমির ওপর এটি তৈরি হয়।
সেই ঘটনাকে কেন্দ্রীভূত করে প্রাচ্যনাট মঞ্চে আনে তাদের ৩০তম প্রযোজনা ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি’। অনেকদিন পর আবারও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল মিলনায়তনে দেখা যাবে এটি। আগামী ১৬ জুন সন্ধ্যা ৭টায় এর প্রদর্শনী শুরু হবে।
তারাভানকে ঘিরে ‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি’র গল্প। সেদিনের নাইট শিফটে কাজ করতে আসা কর্মীদেরই প্রতিচ্ছবি এই নারী। নাটকটি গ্রন্থিত হয় তার স্মৃতি, স্বপ্ন ও জীবনচক্রের রোমন্থনে। যেকোনো সময় মাথার ওপর ছাদ ভেঙে পড়ে পিষে দেবে জীবন, এমনকি নড়ার উপায়টুকুও নেই। এমন অবস্থায় সে যেন জীবনের পাওয়া-না পাওয়ার হিসেব মিলিয়ে নেয়। সেই হিসেব প্রতিনিধিত্ব করে তারই মতো শত শত তারাভানের, যাদের অনেকেই এভাবে মরে যায়।
তারাভানের স্মৃতিচক্রের সমান্তরালে একই ঘটনাকে একজন ভিনদেশি আউটসোর্সিং পারসন মিস্টার ওয়েস্টের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা যায়। এই আকস্মিক ঘটনায় তার প্রতিক্রিয়া বিশ্বমঞ্চে যেসব চিত্র তুলে ধরে সেগুলো তারাভানরা কখনো জানে না কিংবা জানার সুযোগ পায় না।
নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আজাদ আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘নয়তলা কংক্রিট ধ্বসে পড়া আদতে লোভী, কুৎসিত কিছু অর্থান্বেষী সারমেয়র বিপরীতে কিছু মানুষের স্বপ্নের অন্তিম যাত্রার প্রতীক। আমরা অপূর্ণ সেই স্বপ্ন ধরার চেষ্টা এই নাটকে।’
‘ট্র্যাজেডি পলাশবাড়ি’র মঞ্চ ও আলোকসজ্জায় আবুল হাসনাত ভূঞা রিপন, সঙ্গীত ও শব্দ পরিকল্পনায় নীল কামরুল। কোরিওগ্রাফি করেছেন স্নাতা শাহরিন ও মো. ফরহাদ আহমেদ। পোশাক পরিকল্পনায় বিলকিস জাহান জবা।