নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে ফেসবুক
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচারসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে নজরদারি জোরদার করা হচ্ছে। এসব বিষয়ে কেউ সক্রিয় হওয়ার প্রমাণ পেলেই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এরই মধ্যে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) একদিনেই দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাত জনকে আটক করেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক। তাই এই মাধ্যমগুলোতে স্বচ্ছতা আনতে তৈরি করা হচ্ছে নিরাপত্তা বলয়।
সাইবার গোয়েন্দা সদস্যরা বলছেন, দেশে বা দেশের বাইরে যেই অপপ্রচার চালাবেন, তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। দেশে সাইবার লিংক বন্ধ করার পাশাপাশি বিদেশ থেকে অপপ্রচার বন্ধেরও চেষ্টা চলছে। এরই মধ্যে দেশের বাহিরে শনাক্ত ব্যক্তিদের বিষয়ে কূটনৈতিক পর্যায়ে চিঠি চালাচালি শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
জানা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় থেকে র্যাবের ‘সাইবার নিউজ ভেরিফিকেশন সেন্টার’, পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাইবার ইউনিট ‘রাউন্ড দ্য ক্লক মনিটরিং’, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিট গুজব নিয়ে কাজ করেছে। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সাইবার প্যাট্রলিং অব্যহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাগুলো।
এসব সাইবার প্যাট্রলিং থেকে র্যাব শুধু ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩০ জনকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইন্টারনেটে গুজব, বিকৃত তথ্য ও ছবি প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে র্যাব এ পর্যন্ত মোট ১৯২ জনকে সাইবার অপরাধের দায়ে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে, সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিটে গত এক বছরে এক হাজার ৬৭০টি অভিযোগ এসেছে। দুই শতাধিক আইডি শনাক্ত করে তাদের অ্যাডমিনদের গ্রেফতারের বিষয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে। নির্বাচনের মাসে ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির এই শাখা।
র্যাব ও পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আটককৃতদের অনেকেই প্রধানমন্ত্রীসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে কুৎসা রটিয়েছেন অথবা ছবি বিকৃত করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিয়েছেন।
র্যাব সদর দফতর সূত্র বলছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে, সরকার ও রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার, গুজব, মিথ্যা তথ্য, উসকানিমূলক তথ্যের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হলে গোয়েন্দা নজরদারি ও গ্রেফতার করা হবে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডির সাইবার তদন্ত বিভাগের প্রধান মোল্লা নজরুল ইসলাম বার্তা২৪কে বলেন, ‘গত কয়েকবছর ধরেই ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে মিথ্যা ঘটনাকে সত্য বলে প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তির ছবি বিকৃত করেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উপস্থাপন করা হচ্ছে। আমরা এগুলো নিয়ে তদন্ত ও কাজ করে যাচ্ছি।’
জানতে চাইলে র্যাবের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা মুফতি মাহমুদ খান বার্তা২৪কে বলেন, ‘সাইবারজগতে আমাদের নজরদারি ও তদন্ত কার্যক্রম চলছে। র্যাবের সব ব্যাটালিয়নে সাইবার মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। অনেক অভিযোগ আসছে। এসব ধরে গুজব বা অপপ্রচারকারী শনাক্ত করা হচ্ছে।’