বরিশাল: কোরবানি ঈদের আনন্দ প্রিয়জনদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে ইতোমধ্যে রাজধানী থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ।
স্পেশাল সার্ভিস শুরুর আগের দিনের লঞ্চ যাত্রায় উপচে পড়া ভিড় না থাকলেও স্বাভাবিক দিনের থেকে যাত্রী সংখ্যা ছিল কয়েকগুণ।
বরিশাল নৌ-বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ী শনিবার (১৮ আগস্ট) ভোর রাতে প্রথমে ঢাকা থেকে ঘরমুখো মানুষদের নিয়ে বরিশালে এসে পৌঁছায় পারাবাত ১১ নামের লঞ্চটি। এরপর একে একে এসে পৌঁছায় এমভি অ্যাডভেঞ্চার ১, এমভি সুন্দরবন ১০, এমভি পারবাত ৯, এমভি কীর্তনখোলা ১০, এমভি সুরভী ৮, এমভি কালাম খান ১ নামের লঞ্চগুলো।
এছাড়া ভায়া রুটের এমভি টিপু, ফারহান ৭, এমভি পূবালী-৭, কিং সম্রাট ও রাসেল ১ নামের লঞ্চগুলো বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রী নামিয়ে পরবর্তী স্টেশনের উদ্দেশে রওনা দেয়।
এদিকে সূর্য ওঠার আগেই বিআইডব্লিউটিসির অস্টিচ নামে ১টি জাহাজ বরিশাল নদী বন্দরে যাত্রী নিয়ে পৌঁছায়। দুপুরে এমভি গ্রিন লাইনের ২টি ওয়াটার ওয়েজ ঈদ যাত্রী নিয়ে বরিশাল আসবে বলে জানা গেছে।
কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চের ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম ঝন্টু জানান, পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় এবারের কোরবানি ঈদকে ঘিরে যাত্রী সংখ্যা কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে রাজধানীর অনেক গার্মেন্টস বন্ধ না হওয়ায় লঞ্চের ডেকের তুলনায় কেবিনের যাত্রীর চাপ অনেক বেশি। তবে আজ শনিবার ঢাকা থেকে ডেকের চাপও কয়েকগুণ হারে বৃদ্ধি পাবে বলে জানান তিনি।
বরিশাল নদী বন্দর এলাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তায় মধ্যরাত থেকেই বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ, বরিশাল সদর নৌ থানা পুলিশ, মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ, বরিশাল সদর ও নৌ ফায়ার স্টেশনের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন। যার মধ্যে কোতোয়ালি থানা পুলিশের নারী সদস্যদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
অপরদিকে বরিশাল নদী বন্দরের সামনের সড়কের উত্তর ও দক্ষিণ দিক মিলিয়ে প্রায় ১ কিলোমিটার সড়কে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ট্রাফিক পুলিশ। বন্দর এলাকা থেকে নির্ধারিত দূরত্বে মধ্যরাত থেকেই গণপরিবহনগুলো সারিবদ্ধ করে রেখেছে চালকরা। যা পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে মেট্রোপলিটনের ট্রাফিক পুলিশ।
এদিকে মধ্যরাতে লঞ্চ থেকে নেমে হয়রানি রোধে পন্টুন ও নদী বন্দর ভবনের স্থায়ী ও অস্থায়ী যাত্রী ছাউনিতে যাত্রীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। তবে সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ যাত্রীকেই বিভিন্ন ধরনের গণ পরিবহনে স্ব স্ব গন্তব্যের উদ্দেশে চলে যেতে দেখা গেছে।
বরিশাল নৌ-বন্দর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) মো. বেলাল হোসেন বার্তা২৪.কমকে জানান, ঈদ যাত্রা নিরাপদ করতে ও ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তায় নৌ-বন্দর এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়াও নৌ পুলিশের দুটি টিম নদীতে টহল দিচ্ছে। পাশাপাশি নৌ বন্দর এলাকায় প্রায় ৪০ জনের অধিক নৌ-পুলিশ, মেট্রোপলিটনের প্রায় সমসংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
বরিশাল নৌ-ফায়ার স্টেশনের লিডার মো. হাবিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, ফায়ার সার্ভিসের ২টি স্টেশনের সদস্যরা নদী ও টার্মিনাল এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে। এসময় পল্টুনে নজরদারি ছাড়াও সার্বক্ষণিক সি-বোট নিয়ে নদীতে টহল দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজনে একটি অ্যাম্বুলেন্সও প্রস্তুত রাখা আছে।
বিআইডব্লিউটিএর বরিশালের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে জানিয়েছে, লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের ভিড় ছিল স্বাভাবিক দিনের থেকে কয়েকগুণ বেশি। তবে দুই একদিনের মধ্যে এ ভিড় আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন তিনি।