বেতন পাননি পাটকল শ্রমিকরা, অবরোধের আল্টিমেটাম

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  খুলনা বার্তা২৪.কম 
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

খুলনার পাটকল, ছবি: বার্তা২৪.কম

খুলনার পাটকল, ছবি: বার্তা২৪.কম

বকেয়া মজুরি ও বেতন পাননি খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের শ্রমিক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বৃহস্পতিবারের (২৫ এপ্রিল) মধ্যে বকেয়া মজুরি পরিশোধের কথা থাকলেও তা পরিশোধ করা হয়নি। শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধসহ নয়দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে আগামী ২ মে থেকে লাগাতার ধর্মঘট ও অবরোধের আল্টিমেটাম দিয়েছেন শ্রমিকরা।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্র‌িল) বিজেএমসি চেয়ারম্যানের ঘোষণা অনুযায়ী শ্রমিকদের বকেয়া মজুরি পরিশোধের সময় নির্ধারণ থাকলেও ৯টি পাটকলের একটিতেও শ্রমিকদের কোনো বকেয়া পরিশোধ করা হয়নি। এ নিয়ে শিল্পাঞ্চলে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে পাটকলগুলোকে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) মাধ্যমে চালানোর ঘোষণায় শ্রমিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শ্রমিকরা আবারও আন্দোলনে নামার আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

পাটকল শ্রমিক নেতারা জানান, বকেয়া মজুরি পরিশোধ এবং মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে গত ২ এপ্রিল থেকে ৭২ ঘণ্টা পাটকলে ধর্মঘট এবং প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে পাটকল শ্রমিকরা। এরপর ১৫ এপ্রিল থেকে তারা ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট এবং সড়ক ও রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে।

১৫ এপ্রিল রাতে ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও বিজেএমসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠকের পর তাদের আশ্বাসে শ্রমিক নেতারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

বৈঠকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া সব মজুরি পরিশোধ এবং ১৭ মে’র মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি ফিক্সেশন সম্পন্ন করা ও ১৮ মে খাতায় ওঠানো অর্থাৎ শ্রমিকদের অনুকূলে মজুরি স্লিপ প্রদান করার সিদ্ধান্ত হয়। সে অনুযায়ী মজুরি ফিক্সেশনের কাজ শুরু করেছে মিলগুলো। কিন্তু ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়া মজুরি পরিশোধের কথা থাকলেও তা পরিশোধ করা হয়নি।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের খুলনা-যশোর আঞ্চলিক কমিটির আহ্বায়ক মো. মুরাদ হোসেন বার্তা২৪. কমকে বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি মিলের কোনো মিলেই বৃহস্পতিবার বকেয়া টাকা প্রদান করা হয়নি।এছাড়া সম্প্রতি মিলগুলোকে পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এর মাধ্যমে চালানো হবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর ফলে শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।

তিনি জানান, বিজেএমসিকে বকেয়া প্রদানের জন্য ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দাবি পূরণ না হলে আগামী ২ মে থেকে লাগাতার ধর্মঘট ও অবরোধের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।

বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, খুলনার ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, খালিশপুর, দৌলতপুর, ইস্টার্ন, আলিম এবং যশোরের জেজেআই ও কার্পেটিং জুট মিলে স্থায়ী শ্রমিক রয়েছেন ১৩ হাজার ১৭০ জন এবং বদলি শ্রমিক সংখ্যা ১৭ হাজার ৪১৩ জন। শ্রমিকদের ৬ থেকে ১০ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৪ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাদের পাওনার পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা।

বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিজেএমসির প্রধান কার্যালয় থেকে এখনও পাটকলগুলোতে কোনো অর্থ বরাদ্দ আসেনি। শ্রমিকদের কাছে ৭ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রী এবং বিজেএমসি চেয়ারম্যান বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। তারা দেশে ফিরলে দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে আশা করেন তিনি।