নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণার প্রধান উপকরণ পোস্টার ও লিফলেট। যা কিনা প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেন নানা প্রতিশ্রুতিসহ। আর এসব উপকরণ প্রস্তুতের নির্ভরযোগ্য স্থানই হচ্ছে এই ছাপাখানাগুলো।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সারাদেশে যখন ব্যস্ত সময় পার করছেন ছাপাখানা কর্মীরা, ঠিক তখনই অলস সময় কাটাচ্ছেন বরিশালের ছাপাখানাগুলোতে কর্মরত শ্রমিকরা। নির্বাচনের সময় ছাপাখানাগুলোর মৌসুম থাকলেও এবারের নির্বাচনে এর চিত্র পুরোটাই উল্টো।
পোস্টার-লিফলেটসহ কাগজে ছাপানো প্রার্থীদের নির্বাচনের কোনো উপকরণই তেমন ছাপানো হচ্ছে না বরিশালে। প্রার্থী বা তাদের সমর্থকরা রাজধানীর উপরে নির্ভরশীল হয়েই এসব উপকরণ ছাপিয়ে আনছেন। এ কারনেই পোস্টার ছাপার তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি বরিশালের ছাপাখানাগুলোতে।
শনিবার (১৫ ডিসেম্বর) নগরীর কালিবাড়ি, সদর রোড এলাকার বিভিন্ন ছাপাখানা ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
জানাগেছে, ঢাকা থেকে পোস্টার ও লিফলেটসহ অন্যান্য উপকরণ তৈরিতে যে পরিমাণ অর্থ খরচ হয়, বরিশালে তার থেকে একটু খরচ বেশি হয়। তাই এবারের নির্বাচনে এসব উপকরণ ছাপানোর জন্য প্রার্থীরা বেছে নিয়েছেন রাজধানীর নামজাদা ছাপাখানাগুলোকে।
এতে বিরুপ প্রভাব পড়েছে বরিশালের ছাপাখানার বাজারে। যে সময়ে রাতদিন ব্যস্ত থাকার কথা এসব ছাপা শ্রমিকদের, ঠিক সে সময়ই তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন কাজ না থাকার কারণে।
ছাপাখানা শ্রমিক মামুন বলেন, ‘১০ বছর ধরে ছাপা কাজের সাথে জড়িত আছি। পূর্বের নির্বাচনে যে পরিমাণ কাজ করতাম, এই নির্বাচনে তার চার ভাগের এক ভাগও করতে পারছি না। কম খরচের জন্য সকলেই ঢাকা থেকে ছাপিয়ে আনছেন।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ছাপাখানার মালিক জানান, বরিশালের এক একটি ছাপাখানায় প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ পোস্টার ছাপানোর ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু সেখানে তেমন কোনো চাহিদাপত্র পাননি প্রার্থীদের কাছ থেকে। পূর্বের কোনো নির্বাচনে এমন মন্দা বাজার যায়নি বলে জানান এ ছাপাখানার মালিক।
তিনি আরো জানান, পর্যাপ্ত কাজ না থাকায় শ্রমিকদের মজুরি দিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। কেননা নির্বাচনের এই মৌসুমে এক একটি ছাপাখানায় নির্ধারিত শ্রমিকের বাইরেও শ্রমিক নিয়োগ করেন ক্ষুদ্র মাঝারী ব্যবসায়ীরা।
সদর রোডের নিউ আর্ট প্রেসের সত্বাধিকারী মীর খলিলুর রহমান বলেন, ‘প্রার্থীরা ঢাকামুখী। যার কারণে সিংহভাগ পোস্টার সেখান থেকে ছাপানো হয়েছে। তাই আমাদের কাজে ভাটা পড়েছে। তাছাড়া যদি অতিরিক্ত পোস্টারের প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের কাছে আসে প্রার্থী বা তাদের প্রতিনিধিরা। তবে পরিমাণে তা অনেক কম।’