কোরবানির চামড়া নিয়ে অসাধু বাণিজ্য বন্ধ করুন: কওমি ফোরাম
ঢাকা: কওমি মাদরাসার অস্তিত্ব রক্ষা, চামড়া খাতের বিপর্যয়রোধে এবং গরীবের হক আদায়ে কোরবানির চামড়ার মূল্য ২০১৩ সালের দর অনুযায়ী নির্ধারণের দাবী করেছে কওমি ফোরাম।
‘চামড়ার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করে মাদরাসা ও চামড়া শিল্প ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার দাবীতে’ সোমবার (২০ আগস্ট) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে কওমি ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এ দাবী করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ বলেন, কোরবানির চামড়ার মূল্য ২০১৩ সালের তুলনায় এবার অর্ধেকের চেয়ে কম মূল্য নির্ধারণ করে কওমি মাদরাসাসমূহকে এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক খাত চামড়াখাতকে ধ্বংস করার চক্রান্ত করছে এক শ্রেণির সিন্ডিকেট।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সমন্বয়ক মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন রাজী লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কওমি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা হাসান জামিল, মাওলানা ওয়ালী উল্লাহ আরমান, মাওলানা রুহুল আমীন সাদী, মুফতি এনায়েতুল্লাহ, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মুফতি মুরতাজা হাসান ফয়জি মাসুম, মোফাসসিরে কোরআন মুফতি রেজওয়ান রফিকি, ছাত্রনেতা তোফায়েল গাজালি, মোফাসসিরে কোরআন মুফতি শামসুদ্দোহা ও মুফতি জাকারিয়া সিদ্দীকী প্রমুখ।
কওমি ফোরামের সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বলা হয়, ২০১৩ সালে সরকার নির্ধারিত দাম অনুযায়ী ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়া ৮৫ থেকে ৯০ টাকা আর ঢাকার বাইরে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে কেনা হয়। সারাদেশে প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। অর্থাৎ প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর করা হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। আর খাসির দর করা হয়েছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। অর্থাৎ ছয় বছরে ক্রমান্বয়ে কমিয়ে এনে এ বছর চামড়ার দাম কমানো হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কওমি মাদরাসাসমূহের ২০ লাখ ছাত্র-শিক্ষক ঈদের আনন্দ বাদ দিয়ে চামড়া সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ বছর চামড়ার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে চামড়া সংগ্রহের যাতায়াত ব্যায়ের টাকা উঠানো কঠিন।
এ অবস্থা চলতে থাকলে কওমি অঙ্গন চামড়া সংগ্রহের কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। আর তখন সারাদেশের আনাচে কানাচের কোরবানির চামড়া সংগ্রহ করা সরকার এবং টেনারি মালিকদের পক্ষে সম্ভব হবে না। ফলে চামড়া শিল্পে নেমে আসবে কঠিন বিপর্যয়।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয় টেনারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, চামড়ার মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমে যাওয়ার কথা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে চামড়ার মূল্য যে হারে কমেছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি হারে বাংলাদেশে চামড়ার মূল্য কমানো হয়েছে। এটি ভয়ানক চক্রান্তের অংশ।