যেসব কাজে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না
-
-
|

রোজার মাসয়ালা জেনে রোজা পালন আবশ্যক, ছবি: সংগৃহীত
কিছু কিছু কাজ এমন আছে যেগুলোকে অজ্ঞতার দরুণ অনেকেই রোজার জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন। তাদের ধারণামতে এ কারণে রোজা ভেঙে যায়। অথচ বাস্তবতা হলো এসব কাজে রোজা ভাঙে না, রোজার কোনো ক্ষতিও হয় না।
রোজার কথা স্মরণ না থাকা অবস্থায় কেউ যদি পানাহার করে তবে তাতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। তবে স্মরণ হওয়ামাত্রই পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে। স্মরণ হওয়ার পর অতি সামান্য দানা-পানিও গলায় প্রবেশ করলে রোজা থাকবে না। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যদি কেউ রোজা অবস্থায় রোজার কথা স্মরণ না থাকার দরুণ পানাহার করে ফেলে তাহলে সে তার রোজা পূর্ণ করবে। কেননা, আল্লাহ তাকে এ পানাহার করিয়েছেন। -সহিহ বোখারি: ৬৬৬৯
চোখে ড্রপ, মলম, সুরমা, কাজল, মাশকারা ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। এমনকি চোখ দিয়ে প্রবেশ করে মুখে ও খাদ্যনালীতে স্বাদ অনুভূত হলেও রোজার কোনো ক্ষতি হবে না। একদা এক লোক নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে জিজ্ঞাস করলো, আমি কি রোজা রেখে চোখে সুরমা ব্যবহার করতে পারব? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। -সুনানে তিরমিজি: ৭২৬
অনিচ্ছাকৃতভাবে অনেক বেশি বমি হলেও রোজা ভাঙে না। নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, অনিচ্ছায় যার বমি হলো- তার রোজা কাজা করতে হবে না। -সুনানে তিরমিজি: ৭২০
মশা-মাছি বা অন্যকোনো কীট-পতঙ্গ অনিচ্ছাকৃতভাবে পেটে প্রবেশ করলে রোজা ভাঙবে না। তদ্রুপ কানে কোনো ঔষধ প্রবেশ করালে রোজা ভাঙবে না।
স্বপ্নদোষের কারণে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না। রাতের অপবিত্রতা দিন পর্যন্ত বাকি থাকলেও রোজা ভাঙে না। ধুঁয়া, ধুলাবালি অনিচ্ছায় গলায় গেলে রোজা ভাঙবে না।
শরীরে তেল, লোশন ইত্যাদি ব্যবহার করলে রোজার ক্ষতি হয় না। কোনো কাজ ব্যতীত নিছক কল্পনা বা দৃষ্টিপাতের কারণে শুক্রক্ষরণ হলে রোজা ভাঙে না। তবে পরনারীকে নিয়ে এ ধরণের কল্পনা বা দৃষ্টিপাত সর্বাবস্থায়ই গর্হিত অপরাধ। রোজা অবস্থায় অপরাধের মাত্রা অন্য সময়ের চেয়ে আরও গুরুতর হয়। আর নিজের স্ত্রীকে নিয়ে কল্পনা বা দৃষ্টিপাত জায়েজ থাকলেও রোজা অবস্থায় অনুচিত।
রোজা রেখে রক্ত দিতে-নিতে কোনো সমস্যা নেই। ইনজেকশন, স্যালাইন নিলে রোজা ভাঙে না। এমনকি গ্লুকোজ স্যালাইনেও রোজা ভাঙে না। তবে কঠিন প্রয়োজন ব্যতীত গ্লুকোজ স্যালাইন নেওয়া মাকরুহ। মস্তিষ্কে অস্ত্রপচারকালে মস্তিষ্কের ভেতরে কোনো ঔষধ ব্যবহার করলে বা মস্তিষ্কে পৌঁছবে এমন কোনো ঔষধ মাথার ক্ষতে ব্যবহার করলে রোজার ভাঙবে না।
পুরুষ-মহিলার প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে কোনো ঔষধ বা কোনো কিছু প্রবেশ করালে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।
উরুর গোড়া দিয়ে কেটে বিশেষ রগ দিয়ে হার্ট পর্যন্ত ক্যাথেটার ঢুকিয়ে হার্টের যে পরীক্ষা করা হয় তাতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।