হাঁচি আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত
হাঁচি হচ্ছে আল্লাহতায়ালার বিশেষ রহমত। তাই হাঁচি আসলে তা প্রতিরোধ কিংবা ঠেকানো উচিত নয়। হাঁচির সময় মুখ হাত বা রুমাল দিয়ে ঢেকে রাখা ভদ্রতা। এর ফলে হাঁচির আওয়াজ কম হবে এবং হাঁচিজনিত কারণে কাউকে কোনো ধরনের বিড়ম্বনা পোহাতে হবে না।
হাঁচি যেহেতু আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে রহমতস্বরূপ, সেজন্য হাঁচি দেওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ বলে আল্লাহতায়ালার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।
ইসলামের বিধান হলো- হাঁচিদাতা হাঁচি দেওয়ার পর পড়বে আলহামদুলিল্লাহ। আর যে ব্যক্তি শুনবে সে পড়বে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ।’ আর যদি হাঁচিদাতা আলহামদুলিল্লাহ না বলে তাহলে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলার দরকার নেই। তবে কেউ হাঁচি দেওয়ার পর আলহামদুলিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে, তার কাছের মুসলমানের উচিত তাকে স্মরণ করিয়ে দেওয়া।
কোনো ব্যক্তি সর্বাধিক তিনবার হাঁচি দিলে এই দোয়া পড়া উত্তম। এর বেশি হলে তার সর্দি লেগেছে বলে ধরে নেওয়া হবে।
হাঁচি প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা রাযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহতায়ালা হাঁচি দেওয়াকে পছন্দ করেন এবং হাই তোলাকে অপছন্দ করেন; সুতরাং তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে এবং আলহামদুলিল্লাহ বললে এমন প্রত্যেক মুসলমানের ওপর ইয়ারহামুকাল্লাহ বলা বাধ্যতামূলক হয়ে যায়, যে হাঁচিদাতার আলহামদুলিল্লাহ বলা শুনেছে। আর হাইতোলা হল শয়তানের প্রভাব দ্বারা কৃত। অতএব যখন তোমাদের কারো হাই আসে তখন যথাসাধ্য তা প্রতিরোধ করবে। কেননা, কেউ হাইতোললে অর্থাৎ মুখ হা করলে শয়তান বিদ্রুপের হাসি হাসে। -মুসনাদুল বাজ্জার: ৮৫০৮, সহিহ বোখারি: ৬২২৩
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের কেউ হাঁচি দিলে সে যেন আলহামদুলিল্লাহ বলে এবং তার সঙ্গী মুসলমান ভাই অথবা বলেছেন সঙ্গী ব্যক্তি যেন ইয়ারহামুকাল্লাহ বলে জবাব দেয়। আর যখন জবাবদাতা হাঁচিদাতাকে ইয়ারহামুকাল্লাহ বলে, তখন হাঁচিদাতা যেন ইয়াহদিকুমুল্লাহু ওয়া ইয়ুসলিহু বালাকুম বলে। -সহিহ বোখারি: ৬২২৪
হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, যখন তোমাদের কারো হাই আসে, তখন সে যেন নিজের হাত দ্বারা মুখ বন্ধ করে রাখে। নতুবা শয়তান তার মুখের ভিতরে চলে যায়। -সহিহ মুসলিম: ২৯৯৫
তবে সর্দির কারণে বারবার হাঁচি আসলে আলহামদুলিল্লাহ বলতে হবে না।