চীনে ধর্মকে রাজনীতি থেকে আলাদা করা হয়েছে

  • খুররম জামান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চীনের শিংজিয়াং প্রদেশের ইসলামি ইনস্টিটিউট, ছবি: বার্তা২৪

চীনের শিংজিয়াং প্রদেশের ইসলামি ইনস্টিটিউট, ছবি: বার্তা২৪

শিংজিয়ান, চীন থেকে: চীনে নিজ নিজ ধর্ম পালনে কোনো বাধা নেই। কিন্তু এ দেশে ধর্মকে রাজনীতি থেকে আলাদা করা হয়েছে। তাইতো কেউ কোনো ধর্মের কাজে নিযুক্ত থাকলে তিনি চীনের ক্ষমতাসীন দলের সদস্য পদ পান না। কোনো প্রকার রাজনীতিও করতে পারেন না।

চীন সরকারের আমন্ত্রণে দেশটির শিনিজিয়ান প্রদেশে আছে বার্তা২৪.কমের করেসপন্ডেন্ট। সেখানে শিংজিয়ানের ইসলামি ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে এসব তথ্য জানা যায়।

বিজ্ঞাপন

চীন সরকার সেখানে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করায়। বিশেষ করে সেখানকার মুসলিম জনগোষ্ঠী ও মাথা চাড়া দেওয়া সন্ত্রাসী আক্রমণ দমনে পদক্ষেপ সম্পর্কে জানা যায়।

শিংজিয়ান প্রদেশের ইসলামি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট শেখ আব্দুর রাকিব বিন তৈমর আলী বলেন, চীনে ধর্ম পালনে কোনো বাধা নেই। তবে ধর্মের কাজে যারা যুক্ত থাকবেন তারা রাজনীতি করতে পারেন না। চীনে রাজনীতি থেকে ধর্মকে আলাদা করা হয়েছে। তাইতো কেউ কোনো ধর্মের কাজে নিযুক্ত থাকলে তিনি চীনের ক্ষমতাসীন পার্টির সদস্য পদ পান না। কোনো রাজনীতিও করা যায় না।

China Islam

চীনে সংখ্যালঘু উইঘুর মুসলিমদের ওপর নিপীড়ন ও নির্যাতনের কারণে চীনা সরকারের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। চীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে, তারা ১০ লাখের মতো উইঘুর মুসলিমকে পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে কয়েকটি শিবিরে বন্দী করে রেখেছে।

এমন প্রশ্নের উত্তরে ইসলামি ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। অনেকে অনেক কিছু বলবে। কিন্তু সত্য সত্যই থেকে যাবে। সকলেই শিংজিয়াংয়ে আসতে পারেন। নিজের চোখে দেখে ও হৃদয়ের কথা শুনে সত্য প্রতিষ্ঠিত হয়।

তিনি বলেন, চীন সরকার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এই ইসলামি ইনস্টিটিউট প্রায় তিন লাখ স্কয়ার মিটার এলাকাজুড়ে প্রতিষ্ঠিত। এখানকার ক্যাম্পাস ছাড়াও আরো আটটি ক্যাম্পাসে মোট তিন হাজার ৯০০ ছাত্র পড়াশোনা করছেন।

তিনি জানান, এখানে তিনটি বিষয়ে পড়ানো হয়। ধর্মীয় শিক্ষা, চীনের সংবিধান এবং চীনের সংস্কৃতি। স্ব স্ব ভাষায় পড়ানো ছাড়াও চীনের জাতীয় ভাষা মান্দারিন ও আরবি ভাষায় পাঠ দান করা হয়।

China Islam

এখানে অধ্যয়নরত সব ছাত্র সাধারণ মসজিদে ইমামের কাজে নিযুক্ত হন। তাই বিজ্ঞান ও অন্যান্য বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। যেহেতু নারীরা ইমামতি করেন না, তাই এখানে কোনো নারী শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয় না।

ইসলামি ইন্সটিটিউট ঘুরে দেখা গেল, শিংজিয়ান প্রদেশের এক প্রান্তে এটি প্রতিষ্ঠিত। ছাত্ররা এ আবাসিক ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে খাওয়া, থাকা ও পড়াশোনা করেন। মাসে ৬০০ ইউয়ান দেওয়া হয় প্রতি ছাত্রকে। স্কুল পাস করার পর এখানে ছয় মাস, এক বছরের ডিপ্লোমা, তিন ও চার বছরের অনার্স কোর্সে ভর্তি করা হয়।

একজন মহিলা শিক্ষক এই ইনস্টিটিউটে পড়ান। ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি মুসলিম নন। তিনি ছাত্রদের মান্দারিন পড়ান। এমনভাবে এ ইনস্টিটিউটের পড়ানো ছাড়াও বেশ কিছু কাজে নারী কর্মী যুক্ত আছেন। তারা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতির পোশাক পড়েই এখানে আসেন।