৪৬ গার্মেন্টস বন্ধ, চাকরি হারিয়েছে সাড়ে ২৫ হাজার শ্রমিক

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

বিজিএমইএ'র সভাপতি ড. রুবানা হক, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

বিজিএমইএ'র সভাপতি ড. রুবানা হক, ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ব্যবসা সংকট ও অনৈতিক প্রতিযোগিতার কারণে শ্রমিকদের বেতনভাতা, মজুরি এবং অফিসের ব্যয় বহন না করতে পেরে গত সাড়ে ৬ মাসে ৪৬টি তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।

শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) একান্তভাবে বার্তাটোয়েন্টিফোরকে ৪৬টি কারখানা বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ'র সভাপতি ড. রুবানা হক।

বিজ্ঞাপন

তিনি বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-কে বলেন, ‘চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় মাসে ৪৬টি গার্মেন্টস বন্ধ হয়েছে। তাতে ২৫ হাজার ৪৫৩ শ্রমিক ও কর্মকর্তা চাকরি হারিয়েছেন। আর ব্যবসায়ীরা ব্যবসা হারিয়েছেন।’

রুবানা হক বলেন, 'বিদেশি পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে পোশাক কারখানাগুলো এখন দর কষাকষি করতে পারছে না। কিন্তু কেউ সাহস করে বলতে পারছে না। কিছু কারখানা ওভার ইনভেস্টমেন্ট (অতিরিক্ত বিনিয়োগ) করে আসছে। ফলে এখন এই খাতে চরম দুরবস্থা চলছে। আর তাতে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এখন পর্যন্ত ৪৬টি কারখানা বন্ধ হয়েছে।'

গার্মেন্টস মালিকরা বলছেন, দেশে পোশাক কারখানা বন্ধ হওয়ার ঘটনা নতুন নয়। প্রতি মাসেই কোনো না কোনো কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটছে। তাদের মতে, চলতি বছরের রমজান মাসের সময় ২০-২৫টি গার্মেন্টস বন্ধ হয়েছে। এরপর ঈদুল আজহার পরের মাসেই বন্ধ হয়েছে ১৫ থেকে ২০টি কারখানা। সব মিলে ৪৬টি গার্মেন্টস বন্ধ হয়েছে। নতুন করে আরও বেশকিছু গার্মেন্টস বন্ধের পথে। এসব কারখানায় ছাঁটাই চলছে।

শুধু তাই নয়, বর্তমানে কারখানা বন্ধের ক্ষেত্রে নতুন ধারা তৈরি হয়েছে। আগে পুরো কারখানা বন্ধ করলেও এখন দেখা যাচ্ছে ১৫ লাইনের ফ্যাক্টরির ক্ষেত্রে দুই বা তিন লাইন বন্ধ করে দিচ্ছে। এতে দুই থেকে তিনশ শ্রমিক বেকার হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন তারা।

বন্ধ হওয়া গার্মেন্টসগুলোর মধ্যে রয়েছে—মালিবাগের লুমেন ড্রেস লিমিটেড ও লুফা ফ্যাশন লিমিটেড, বাড্ডার সুমন ফ্যাশন গার্মেন্টস লি, শান্তিনগরের অ্যাপোচ গার্মেন্টস লিমিটেড,আশুলিয়ার মোভিভো অ্যাপারেলস লিমিটেড, ও ফোর এস পার্ক স্টাইল লিমিটেড, রামপুরার জেনস ফ্যাশন লিমিটেড, মধ্য বাড্ডার স্টার গার্মেন্টস প্রাইভেট লি, টঙ্গীর জারা ডেনিম লিমিটেড, ফলটেক্স কম্পোজিট, এহসান সোয়েটার ও মার্ক মুড, বনানীর তিতাস গার্মেন্টস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, গাজীপুরের ওসান ট্রাউন ও ওয়াসিফ নিটওয়্যার, জিরানীর ঝুমা ফ্যাশন, বোর্ড বাজারের স্পেস গার্মেন্টস ইন্ড্রাস্ট্রি এবং উত্তর বাড্ডার এভার ফ্যাশন লিমিটেড ইত্যাদি।

বিজিএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি ফয়সাল সামাদ বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে পোশাক খাতে ব্যবসার অবস্থা ভালো নেই। ক্রয় আদেশ (অর্ডার) কমে যাচ্ছে। কিছু নতুন প্রতিযোগী দেশও তৈরি হয়েছে। মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামে অর্ডার বাড়ছে। এতে আমাদের দেশে অর্ডার কমে যাচ্ছে। এসব কারণেই অনেক কারখানা ব্যবসায় টিকে থাকতে পারছে না। ফলে বাধ্য হয়ে তারা কারখানা বন্ধ করছেন।’

এ বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'যেসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে তারা অনেকেই কমপ্লায়েন্ট নয়। নতুন করে কমপ্লায়েন্ট করতে গিয়ে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। আবার ক্রেতারাও অর্ডার কমিয়ে দিয়েছে।'