২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকায় উন্নিত করার প্রস্তাব দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)। একই সঙ্গে করপোরেট কর কমানোরও প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) পরামর্শক কমিটির ৪০তম সভায় একগুচ্ছ প্রস্তাব দেয় এএফবিসিসিআই।
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়ার সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এফবিসিসিআইয়ের পক্ষে প্রস্তাবনাগুলো তুলে ধরেন সংগঠনের সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
শফিউল ইসলাম বলেন, ‘গত চার বছর ধরে ব্যক্তি আয়কর সীমা একই রাখা হয়েছে। অথচ এই সময়ে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় অনেক বেড়েছে। ফলে এটি আড়াই লাখ টাকা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাই এটি বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হোক।’
মহিলা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সী করদাতাদের করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে চার লাখ টাকায় উন্নীতকরণ ও প্রতিবন্ধী করদাতাদের করমুক্ত আয়ের সীমা চার লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করে সংগঠনটি।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ২২ শতাংশ করা ও পুঁজিবাজারের অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩০ শতাংশ ও নন ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানির ক্ষেত্রে সাড়ে ৩২ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয় এফবিসিসিআই।
এছাড়াও মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট কর সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত ও তালিকা-বহির্ভূত ব্যাংক বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের করপোরেট কর অপরিবর্তিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
অন্যদিকে পুঁজিবাজারের তালিকাভূক্ত নয় এমন বিদেশি কোম্পানির প্রত্যাবসানযোগ্য মুনাফার উপর করপোরেট কর ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
নতুন ভ্যাট আইনের ক্ষেত্রে ১০ টি প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ সংগঠন। সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী ভ্যাটের হার ৫, ৭.৫ ও ১০ শতাংশ নির্ধারণ, মূসক অব্যহতির সীমা ৩৬ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করা, টার্নওভার করের সীমা তিন কোটি টাকা পর্যন্ত ৪ শতাংশ মূসকসহ অন্যান্য সিদ্ধান্ত দেন।
এফবিসিসিআই সরকারের এই প্রস্তাবকে মেনে নিয়েছে। তবে টার্নওভার কর ৪ শতাংশের পরিবর্তে ৩ শতাংশ করা উচিত বলে মনে করে এফবিসিসিআই। অন্যদিকে একাধিক হারে ভ্যাট নির্ধারণ করলেও রেয়াতের বিষয়ে অস্পষ্টতা রয়েছে দাবি করে ১৫ শতাংশের মতো ১০ শতাংশ হারেও রেয়াত দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে সংগঠনটি।
আর প্যাকেজ ভ্যাটের পরিবর্তে ক্ষুদ্র, গ্রামীণ উদ্যোগ ও কুটির শিল্প খাতের জন্য টার্নওভার করের আওতায় সকল পর্যায়ে অব্যাহতির সীমা বাৎসরিক ৩৬ লাখ টাকার পরিবর্তে ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করার সুপারিশ করেছে এফবিসিসিআই।