সম্পদের ৬০ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতে পারবে বিমা কোম্পানি

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মোট সম্পদের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করতে পাবরে লাইফ (জীবন) বিমা কেম্পানি। এ রকম বিধান রেখে ‘লাইফ বিমাকারীর সম্পদ বিনিয়োগ ও সংরক্ষণ প্রবিধানমালা ২০১৮’ করছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বেসরকারি খাতে সর্বনিম্ন ৪০ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে কোম্পানিগুলো।

প্রথমবারের মতো জীবন বিমা কোম্পানির বিনিয়োগর জন্য এ প্রবিধান করছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) বলে নিশ্চিত করেছে প্রতিষ্ঠানটির সদস্য ড. এম মোশারফ হোসেন। তিনি বলেন, ‘প্রবিধানটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এখন প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় রয়েছে ‘

বিজ্ঞাপন

প্রবিধানে বলা হয়ছে, বিমা কোম্পানিগুলো সম্পদ বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৩০ এবং সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগ করতে পারবে। সরকারের গ্যারান্টিযুক্ত ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ইস্যুকৃত বন্ড এবং অনান্য বন্ডে সম্পদের ১৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে তার জন্য সরকার অনুমোদিত রেটিং সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত হতে হবে।

বন্ডের পাশাপাশি সরকার অনুমোদিত সিকিউরিটিজ ও ডিবেঞ্চারে জীবন বিমা কোম্পানির মোট সম্পদের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে একক কোম্পানিতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে।

প্রবিধানে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হয়েছে মোট সম্পদের সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ। আর পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশ। পাশাপাশি সাধারণ শেয়ার বা অগ্রাধিকার শেয়ার উভয় মিলে মোট সম্পদের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে শর্ত দেয়া হয়েছে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে ক্ষেত্রে ‘জেড’ ক্যাটাগরি কোনো শেয়ারে বিনিয়োগ করতে পারবে না। 

এছাড়াও সরকারি সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশন এলাকায় অথবা কোনো পৌরসভায় দায়হীন সম্পত্তিতে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করার বিধান রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বন্ধকীকৃত স্থাবর সম্পত্তি, দাফতরিক বা দোকান হিসেবে ব্যবহৃত অথবা নিজকৃত সম্পত্তিতে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করার বিধান রাখা হয়েছে। তবে তার জন্য লিজের মেয়াদ ৩০ বছরের বেশি থাকার শর্ত দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে বেসরকরি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তফসিলি ব্যাংকের বিমা কোম্পানিগুলো সম্পদের সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশের আমানত গচ্ছিত রাখতে পারবে। এক্ষেত্রে একক কোনো ব্যাংকে সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ আমানত রাখাতে পারবে।

ব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্থায়ী সম্পদের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে একক কোনো কোম্পনিতে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ বিনিয়োগ করার বিধান রাখা হয়েছে। তবে তার জন্য সরকার অনুমোদিত ‘এ’ ক্যাটাগরির রেটিং সংস্থা দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদিত মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও ইউনিটে সম্পদের ২০ শতাংশ এবং সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করতে পারার নিয়ম রাখা হয়েছে।

এ ছাড়াও আইডিআরএ এবং তদকর্তৃক শর্ত সাপেক্ষে অনুমোদিত অন্যান্য খাতে সম্পদের ৫ শতাংশ বিনিয়োগ করার বিধান রাখা হয়েছে।

বিনিয়োগের পর বিমা কোম্পানির ১ম, ২য় এবং ৩য় প্রান্তিকের শেষ কার‌্যদিবসের পর থেকে ২১ দিনের মধ্যে খাতওয়ারী কোম্পানির সম্পদের বিরণ কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল করিতে হইবে। তবে এক্ষেত্রে দেশের বহিরে প্রধান কার‌্যালয় থাকা কোম্পানির ক্ষেত্রে ৩০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়াও গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষেণের জন্য বাধ্যতামূলকভাবে দেশের বিভিন্ন নির্ধারিত বিনিয়োগ খাতে বিনিয়োগ করে নিরিক্ষা কার‌্য শেষ হওয়ার ৩০দিনের মধ্যে আগের বছরের ৩১ডিসেম্বর পর‌্যন্ত বিমাকারীর সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করে শ্রেনিওয়ারী একটি বিবরণী আইডিআরএতে জমা দিতে হবে।

প্রতিবেদনে কোম্পানির পর্ষদের চেয়ারম্যান এবং দুইজন পরিচালক এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক-মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তা স্বাক্ষর থাকতে হবে। বিদেশে বিনিয়োগের করার ক্ষেত্রে দেশের এবং যে দেশের বিনিয়োগ করা করবে সেই দেশের সরকারের অনুমোদন নিতে হবে।

প্রবিধানে আরো বলা হয়, আইডিআরএ প্রয়োজনে যে কোনো সময়ে জীবন বিমা কোম্পানির সম্পদ পরিদর্শন করতে পারবে। কর্তৃপক্ষের যে কোনো চাহিদা অনুসারে তথ্যাদি দিতে বাধ্য থাকিবে। কোনো বিমা কোম্পানি প্রবিধান লংঘন করলে কোম্পনির বিরুদ্ধে বিমা আইন ২০১০ এর সংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।