হারিয়েই গিয়েছিলেন তিনি! নারী কেলেঙ্কারি, ইনজুরি, অফ ফর্ম সব মিলিয়ে মনে হচ্ছিল টাইগার উডস অধ্যায়টা শেষ! কিন্তু তিনি হাল ছাড়েন নি! লড়ে গেছেন। ২০০৮ থেকে ২০১৯! অবশেষে তার হাতে ১১ বছর পর ফের ধরা দিয়েছে আরেকটি শিরোপা। সর্বকালের অন্যতম সেরা এই গলফার পেলেন ক্যারিয়ারের ১৫তম মেজর ট্রফি।
সেই ২০০৮ সালের পর থেকেই তার সঙ্গী ব্যর্থতা। কিছুতেই পথ খুঁজে পাচ্ছিলেন না উডস। সাফল্যের আকাশ থেকে নেমে আসেন বাস্তবতার জমিনে! বিলিয়নিয়ার এই ক্রীড়াবিদের অবশ্য জমিনে পা ছিল না বলেই সব হারিয়ে এক সময় নন্দিত থেকে হয়ে যান নিন্দিত।
স্ত্রী এলিন নরডগ্রেন ও দুই সন্তানকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তার। কিন্তু অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে গিয়ে সর্বনাশ। ২০০৯ সালে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল। জানা যায় স্ত্রী এলিনকে ফাঁকি দিয়ে তিনি গোপনে গড়েছিলেন একাধিক সম্পর্ক। তাদের অনেকের সঙ্গেই গোপনে সেই সম্পর্কটা টিকিয়ে রাখতে গিয়েই স্ত্রীকে হারান। বিয়ে বিচ্ছেদের পর চলে যায় সম্পত্তির বিশাল এক অংশ।
সাফল্যের আকাশে উড়তে থাকা উডস হয়ে যান ঘৃণিত এক ক্রীড়াবিদ। কথায় আছে দুঃসংবাদ একসঙ্গে নাকি চারপাশ থেকেই আসেই। ওই বছর সংসার ভাঙার পর ইনজুরিতে পড়েন উডস। পিঠের চোটের পর চারবার অস্ত্রোপচার করাতে হয় তাকে।
অবশেষে সেই ধাক্কা সামলে উঠেছেন উডস। ৪৩ বছর বয়সী যুক্তরাষ্ট্রের এই গলফার পেলেন অগাস্টা মাস্টার্সের শিরোপা। জর্জিয়ার ন্যাশনাল গলফ কোর্সে পারের চেয়ে ১৩ শট কম খেলে জিতে নেন ট্রফি।
এই সাফল্যে গলফ কোর্সে যেন উড়ছিলেন উডস। কারণটাও সংগত অনেক দিন পর যে ট্রফির দেখা মিলল। একইসঙ্গে তার সন্তানরাও এসেছিলেন গলফ কোর্সে।
আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়ে রোববার টাইগার উডস বলছিলেন, ‘আহ! এই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। আমার সন্তানরা খেলা দেখতে এসেছিল। ১৯৯৭ সালে আমার বাবা এখানে খেলা দেখতে এসেছিলেন। আজ আমি বাবা। সত্যি বলতে কী ক্যারিয়ারে শিরোপা জিততে এতোটা কষ্ট করতে হয়নি আমাকে। কি যে দুঃস্বপ্নের মতো সময় কাটিয়েছে!’
সব ব্যর্থতা আর সমালোচনা আড়াল করে অবশেষে মিলল শিরোপা। এবার ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনে নিশ্চয়ই স্বস্তিতে বেঁচে থাকার অনুসঙ্গ পেয়ে গেলেন টাইগার উডস!