বাবার জন্মদিন বলে কথা। তার প্রিয় খাবারের সকল আইটেম থাকা চাই। সেভাবেই সাজানো হয়েছে খাবার টেবিল। থরে থরে সাজানো হয়েছে বাবার অতি পছন্দের আলু স্ক্যালপস, বাবার হার্টের অসুখ, বেশি মিষ্টি খেতে পারে না। এরপরও জন্মদিন বলে খুব অল্প পরিমাণে রাখা হয়েছে তার প্রিয় ডোনাট। সঙ্গে তার অতি পছন্দের ললি ও কিছু কস্তূরীর লাঠি। টেবিল ভর্তি খাবার সাজিয়ে মেয়েরা বসে আছে। কই বাবা তো ফিরছে না-
ফেরার পথও খোলা নেই শেন ওয়ার্নের। দূর আকাশের তারাদের যে মাটিতে নামতে বারণ। সেখানেই বসেই গত দু’বছর যাবত রেখে যাওয়া তিন সন্তানের এসব কাণ্ড দেখছেন ওয়ার্ন। হয়তো হাসছেন। কখনো সন্তানদের আবেগ নিজেকে স্পর্শ করলে হয়তো পরম মমতায় তাদের মাথায় স্নেহের হাত ভুলিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু অদৃশ্য সেই হাত কেউ অনুভব করতে পারছে না।
প্রয়াত অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি লেগ স্পিনার ওয়ার্নের ৫৪ তম জন্মদিনে তাকে এভাবেই স্মরণ করেছে তার সন্তানরা। বাবাকে নিয়ে সন্তানরা ফিরে গেছে তাদের মধুর শৈশবে। স্মৃতি হাতরে শেয়ার করেছে আবেগময় সব মুহূর্তের ছবি। যা ছুঁয়ে গেছে সবাইকে।
ওয়ার্নের বড় মেয়ে ব্রুকস ইনস্টাগ্রামে বাবার সঙ্গে তার ছোট বেলার একটি ছবি শেয়ার করে ভালোবাসার ইমুজি দিয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘রাজা আজকের দিনটা তোমার।’ সঙ্গে বাবাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন বাবা।’ আরেকটি ছবিতে বাবার পছন্দের খাবার গুলো সাজিয়ে ক্যাপশনে ব্রুক লিখেছেন, ‘বাবার জন্য জন্মদিনের লাঞ্চ। তার সব পছন্দের আইটেম এখানে।’
ব্রুকের মতোই বাবার জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে ভুলেননি ছোট মেয়ে সামার। বাবার সঙ্গে মেলবোর্ন মাঠে নিজের ছোট বেলার ছবি শেয়ার করে তিনি লিখেছেন, ‘শুভ জন্মদিন বাবা। আমি তোমাকে যতটা ভালোবাসি ও মিস করি তা কখনোই শব্দের মাধ্যমে বর্ণনা করতে পারব না।’
জীবদ্দশায় ওয়ার্ন পার্টিতে সময় কাটাতে ভালোবাসতেন। জীবনটাকে উপভোগ করতে তার মতো খুব কম মানুষই জানত। নেচে গেয়ে জীবন কাটাতে প্রায়শই ছুটে যেতেন ডিজে পার্টিতে। অস্ট্রেলিয়ান ডিজে হাভানা ব্রাউনকেও তাই ছুঁয়ে গেছে ওয়ার্নের এই না থাকা। কিংবদন্তিকে স্মরণ করে তিনি লিখেছেন, ‘আমি জানি আপনি এখনও দোলচ্ছেন এবং স্বর্গের সেরা পার্টিগুলি উপভোগ করছেন।’
১৯৬৯ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর আজকের এই দিনে জন্ম নেওয়া ওয়ার্ন গত ২০২২ সালের ৪ মার্চ থাইল্যান্ডে ছুটি কাটাতে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৫২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। তার এমন আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নামে তখন পুরো ক্রিকেট বিশ্বেই। জীবদ্দশায় অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৯৯২ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত ক্রিকেট খেলেছেন তিনি। অজিদের হয়ে ১৪৫ টি টেস্টে তার উইকেট সংখ্যা ৭০৮, যা মুত্তিয়া মুরালিধরনের পর ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ওয়ানডেতে ১৯৪ ম্যাচে ওয়ার্নের উইকেট সংখ্যা ২৯৩টি।