ইদানীং ভারতের বিপক্ষে লঙ্কানদের জয়টা আসে কালেভদ্রে। গতকাল এশিয়া কাপের কাপের সুপার ফোরে সেই সুযোগটাই পেয়েছিল লঙ্কানরা। ভারতকে আটকে দিয়েছিল মাত্র ২১৩ রানে। অবশ্য শেষ পর্যন্ত পরাজয়ই সঙ্গী হয়েছে তাদের। দুনিথ ভেল্লালাগের বীরোচিত পারফরম্যান্সের পরও লঙ্কানরা পেয়েছে একরাশ হতাশাই।
ম্যাচে জয় পরাজয় থাকবেই। এসব খুব বেশিদিন মনেও রাখে না মানুষ। তবে গতকাল বিশ না পেরোনো একটা তরুণ যেভাবে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন শক্তিশালী ভারতের ব্যাটিং লাইনআপ, ব্যাট হাতে কাঁধে তুলে নিয়েছেন কঠিন দায়িত্ব। শাসন করেছেন ভারতীয় বোলারদের। এরপর স্রেফ সঙ্গীর অভাবে ম্যাচটা শেষ করে আসতে পারেননি। এরপর যে হতাশা তিনি প্রকাশ করেছেন, তাতে এটুকু পরিষ্কার যে তিনি অন্তত হার মানতেন না। শেষটাই বিজয়ের গল্প লিখেই মাঠ ছাড়তেন।
এসব কি খুব সহজেই ভুলে যাবে লঙ্কান ক্রিকেট সমর্থকরা? এটা মনে রাখানোর দায়িত্বটা অবশ্য ভেল্লালাগেরও। ভবিষ্যতেও সেটিই করে দেখাতে চাইবেন তিনি। তবে ভারতের জয়ের ম্যাচেও ৫ উইকেট ও অপরাজিত ৪২ রানের ইনিংস খেলে ঠিকই সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের মন জিতে নিয়েছেন এই তরুণ। তাকে নিয়েই আগামীর স্বপ্ন দেখছে লঙ্কানরা।
ম্যাচ শেষে ভেল্লালাগের প্রতি নিজের মুগ্ধতার কথা জানিয়েছেন দেশটির সাবেক কিংবদন্তি বোলার লাসিথ মালিঙ্কা। সঙ্গে এই তরুণের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘শ্রীলঙ্কা আজ ১২ জন ক্রিকেটার নিয়ে মাঠে নেমেছিল, এটা বলা যথার্থ। দুনিথ কতটা ভালো তা সে দেখিয়েছে। এই তরুণ কাঁধেই সে তার তার উজ্জ্বল অলরাউন্ড দক্ষতা দেখিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি সে আগামী এক দশকে ওডিআইতে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হওয়ার পথে রয়েছে।’
ভেল্লালাগে অবশ্য হুট করেই যে জাতীয় দলের হয়ে মাঠে নামছেন এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই। সবশেষ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ১৩.৫৮ গড়ে সর্বোচ্চ ১৬টি উইকেট নিয়েছেন। এরপর জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত লঙ্কানদের হয়ে মাঠে নেমেছেন ১৩ ম্যাচে যেখানে ৫.৩০ ইকোনোমিতে হাত ঘুরিয়ে ১৮ উইকেট শিকার করেছেন তিনি। সবশেষ ম্যাচে শিকার করেছেন শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, লোকেশ রাহুল এবং হার্দিক পান্ডিয়ার মতো ব্যাটারকে।
এমন বীরোচিত পারফরম্যান্সের পর ভেল্লালাগের প্রশংসা করতে কার্পণ্য করেনি ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। তিনি লিখেছেন, ‘ভেল্লালাগের যে বলটিতে গিল আউট হল সেটি যেকোনো স্পিনারের জন্যই স্বপ্নের ডেলিভারি। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি তা হলো তার ট্রিপল স্পিন হুমকি।’
ক্রিকেট বিশ্লেষক ও ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে ভেল্লালাগেকে নিয়ে লিখেছেন, ‘স্বীকার করছি যে উইকেটটা ভালো একটা নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে। তবে এটা মানতে হবে যে ভেল্লালাগে চমৎকার বল করেছে। অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেটার হিসেবে তিনি যে প্রতিশ্রুতি দেখিয়েছিলেন তা ফলপ্রসূ হচ্ছে।’ ভারতের আরেক সাবেক ক্রিকেটার ইরফান পাঠান লিখেছেন, ‘তরুণ ভেল্লালাগের কাছ থেকে নিখুঁত বোলিং দেখলাম।’