হারটা বোধহয় আগে থেকেই আঁচ করতে পারছিলেন পাকিস্তানের সাবেক কিংবদন্তি পেসার শোয়েব আখতার। প্রতিপক্ষ চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত হওয়ায় হয়তো মানতে কষ্ট হচ্ছিলো। নয়তো সবাই যখন বৃষ্টি শেষে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় তখন কেনই বা তিনি বৃষ্টি প্রার্থনা করবেন। টুইটারে লিখতে যাবেন ‘বারসোরে মেঘা মেঘা’- তিনি যে ভুল ছিলেন তার প্রমাণ মিলেছে ম্যাচ শেষে। যেখানে আগের দুই দলের পুরনো সব ইতিহাস ভেঙে গেছে পাকিস্তানের রেকর্ড ২২৮ রানের হারে।
ভারতের বিপক্ষে উত্তরসূরিদের এমন হারে অপমান বোধ করছেন শোয়েব। ম্যাচ শেষে বাবর আজমের দলকেও ছাড়েননি তুলোধুনো করতে। ম্যাচ শেষ হতেই নিজের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল এসে ক্ষোভ ঝেড়েছেন শোয়েব, ‘বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করছিলাম। এতে হয়তো জীবনটা বেঁচে যেত। এভাবে আসলে হয় না। পাকিস্তান বেশ অপমানজনকভাবে হেরেছে। পাকিস্তান ১২৮ রানে অলআউট হয়েছে। এটা খুবই আশঙ্কাজনক ব্যাপার। এত ভালো ব্যাটিং উইকেটে পাকিস্তান টস জিতে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত কেন নিল? আর এত ভালো দল ভারতকে ম্যাচে ফেরার সুযোগ কেন দিল? এই সিদ্ধান্ত আমার কাছে একটু অদ্ভুতই ঠেকেছে। এর ফলও এখন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন।’
পাকিস্তান দলের সমালোচনা করলেও ভারতকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন শোয়েব, ‘ভারতকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। এই জয় তাদের প্রাপ্য ছিল। তারা দুর্দান্ত খেলেছে, ব্যাটিং-বোলিং দুটিতেই খুব অসাধারণ করেছে। ভারতীয় বোলিং লাইন এই বার্তা দিয়েছে যে তারা পুরোপুরি আগ্রাসী মানসিকতা নিয়ে খেলবে এবং উইকেট নেবে। আর আমরা দ্রুত আউট করব। তারা সেটা করেও দেখিয়েছে। একজন পেসার হিসেবে এটা আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। বুমরা খুবই ভালো স্পেল করছে। সিরাজও খুব ভালো করেছে।’
রিজার্ভ ডে তে বল হাতে দেখা যায়নি হারিস রউফকে। যা নিয়ে কিছুটা চিন্তিত শোয়েব। একই সঙ্গে পেসারদের ১০ ওভার বল করার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শোয়েব, ‘হারিস রউফের চোট আমাকে বেশ ভাবনায় ফেলেছে। দ্বিতীয় স্পেল সে করতে পারেনি। তবে এই ছেলেগুলোর দোষও নেই। পুরো বছরে তারা হয়তো ১৩, ১৪ বা ১৫ ওয়ানডে খেলেছে। পেছনে ফিরলে দেখা যাবে ওয়াসিম-ওয়াকার ভাই এক মৌসুমেই ৫০০ থেকে ৬০০ ওভার করতেন। তায় ১০ ওভার বল করার জন্য সেই প্রাণশক্তি এখন আর নেই।’
পেসারদের এই ঘাটতির পেছনে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দায় দেখেন শোয়েব, ‘দ্বিতীয় স্পেল করার জোর থাকতে হয় বোলারদের। আমার মনে হয়, সে জায়গায় ঘাটতি আছে। আর তারা প্রচুর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলে। আমি সব সময় বলি, ৪ ওভারের বোলার নয়, ১০ ওভারের বোলার হতে হবে। ১০ ওভারের ক্রিকেটের সৌন্দর্যটা এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে। অবশ্য এই খেলা হয়ও কম। ছেলেদের ওপর রাগ করেও তাই লাভ নেই।’