লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের দর্শকরা যেন একটা থ্রিলার সিনেমা দেখলেন! সিনেমাই তো। পরতে পরতে দৃশ্যপট-সমীকরণ বদলে যাওয়া, ক্লাইম্যাক্স-অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স আর শেষটায় ট্র্যাজেডি। আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কার মধ্যকার এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচটা কোন দিক দিয়ে একটা জম্পেশ থ্রিলার সিনেমার চেয়ে কম ছিল বলুন তো!
টস জিতে আগে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৯১ রান স্কোরবোর্ডে জমা করেছিল শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানকে শুধু জিতলেই হত না, ২৯২ রানের লক্ষ্য ছুঁতে হত ৩৭.১ ওভারের মধ্যে। অল্পের জন্য সে লক্ষ্য ছোঁয়া হলো না আফগানদের। ৩৭.৪ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে আফগানরা স্কোরবোর্ডে তুলতে পারল ২৮৯ রান। তাতে ২ রানের নাটকীয় জয়ে সুপারফোরে গ্রুপ 'বি' থেকে বাংলাদেশের সঙ্গী হলো লঙ্কানরা।
২৯২ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। ২৭ রানের মধ্যে দুই আফগান ওপেনারকে সাজঘরের পথ চেনান শ্রীলঙ্কার পেসার কাসুন রাজিথা। দলীয় রান ৫০ স্পর্শ করতেই ফিরে যান বল হাতে আলো ছড়ানো অলরাউন্ডার গুলবদিন নাঈব।
এরপর আফগান ইনিংসের হাল ধরেন তিন মিডল অর্ডার ব্যাটার রহমত শাহ্ (৪৫), অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদি (৫৯) এবং সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী (৬৫)। তবে দ্রুত রান তুলতে গিয়ে কাটা পড়েছেন তাদের সবাই।
শেষদিকে করিম জানাত, নাজিবউল্লাহ জাদরান, রশিদ খানরা ক্যামিও ইনিংস খেলে দলকে সুপারফোরে নেয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তবে হিসাবের গরমিলের জন্য তা আর হলো না। কি সেই হিসাবের গরমিল?
সুপারফোরে জায়গা করে নিতে আফগানিস্তানকে ২৯২ রানের লক্ষ্য ছুঁতে হতো ৩৭.১ ওভারের মধ্যে। কিন্তু ৩৭.১ ওভারের মধ্যে তা না করতে একটা সুক্ষ্ম সুযোগ ছিল তাদের। সেক্ষেত্রে ৩৭.৪ ওভারের মধ্যে করতে হতো ২৯৫ রান। এমনকি স্কোর টাই করার পর ছক্কা মেরে জিতলে আফগানিস্তানের সুযোগ ছিল ৩৮.১ ওভার পর্যন্ত। তবে আফগানদের এ হিসাব-নিকাশ জানা ছিল না। তাতেই কপাল পুড়েছে এশীয় ক্রিকেটের এই নবীন শক্তির।
তাতে ভাগ্য প্রসন্ন হয়েছে শ্রীলঙ্কার। গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচের দুটি জিতে গ্রুপসেরা হিসেবে শেষ চারে নাম লিখিয়েছে তারা। দুই ম্যাচ থেকে ২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ গ্রুপ রানার্সআপ।