লুইস সুয়ারেস ও এদিনসন কাভানি; উরুগুয়ের সোনালী সময়ের দুই ফুটবলার। যে মানের ফুটবলার তারা সে যোগ্যতা অনুযায়ী পাননি আন্তর্জাতিক সাফল্য। এক সঙ্গে খেলছেন সেই ২০০৮ সাল থেকে, কিন্তু অর্জনের খাতায় কেবল একটি কোপা আমেরিকার শিরোপা, তাও ১১ বছর আগে ২০১১ সালে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে সাফল্য না পেলেও ক্লাব ক্যারিয়ার হয়েছে তাদের সমৃদ্ধ। প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের রাতের ঘুম হারাম করেছেন, জিতেছেন একের পর এক শিরোপা।
আসছে জানুয়ারিতে লুইস সুয়ারেসের বয়স হবে ৩৬। কাতার বিশ্বকাপের এবারের আসরসহ খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচসহ খেলেছেন ১৫ ম্যাচ, করেছেন ৭ গোল। একটি অ্যাসিস্টও আছে তার। কেবল বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স দিয়ে উরুগুয়ে দলে তাকে মূল্যায়ন করা যাবে না।
২০০৭ সালে উরুগুয়ের জার্সিতে অভিষেকের পর লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ২৭ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৩ গোল, সঙ্গে আছে ৭টি অ্যাসিস্ট। কোপা আমেরিকার দুই আসরে ৯ ম্যাচ খেলে করেছেন ৩ গোল, সঙ্গে আছে একটি অ্যাসিস্ট।
খেলেছেন স্প্যানিশ ক্লাব আতলেতিকো মাদ্রিদ ও বার্সেলোনায়। পেয়েছেন সাফল্য। বার্সেলোনার হয়ে চারটি এবং আতলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে একটি লা লিগা, একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ১৩টি শিরোপা জিতেছেন সুয়ারেজ।
আসছে ফেব্রুয়ারিতে ছত্রিশে পা দিতে যাওয়া এদিনসন কাভানির উরুগুয়ে দলে অভিষেক ২০০৮ সালে। লাতিন দেশটির কোপা আমেরিকা জয়ের দলের সদস্যও ছিলেন কাভানি। কাতার বিশ্বকাপের এবারের আসরসহ খেলেছেন চারটি বিশ্বকাপ। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচসহ খেলেছেন ১৬ ম্যাচ, করেছেন ৫ গোল। একটি অ্যাসিস্টও আছে তার। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ২৪ ম্যাচ থেকে করেছেন ১২ গোল, সঙ্গে আছে একটি অ্যাসিস্ট। কোপা আমেরিকার চারটি আসর খেলে করেছেন চার গোল।
স্পেন, ফ্রান্স ও ইংল্যান্ডের লিগে খেলছেন ভ্যালেন্সিয়া, পিএসজি ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে। পিএসজির হয়ে ছয়টি ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানসহ জিতেছেন ২১টি শিরোপা।
উরুগুয়ে দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। লাতিন আমেরিকার দেশটির অতীত সাফল্যের হলেও বর্তমানে তাদের নিয়ে আলোচনা নেই। মাঠের পারফরম্যান্সও আলোচনায় আসার মতোও নয় তেমন।
কাতার বিশ্বকাপে ‘এইচ’ গ্রুপে সুয়ারেস-কাভানিদের দেশ উরুগুয়ের সঙ্গে আছে পর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া ও ঘানা। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ড্র করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে পর্তুগালের কাছে হেরে গেছে উরুগুয়ে। টানা দুই জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। বাকি তিন দলের মধ্যে ৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার চেয়ে এগিয়ে ঘানা। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো উরুগুয়ের পয়েন্টও ১। তবে গোল পার্থক্যে পিছিয়ে কাভানি-সুয়ারেসরা।
আজ রাতে ঘানার সঙ্গে গ্রুপ পর্যায়ের শেষ রাউন্ডের ম্যাচ তাদের। প্রতিপক্ষ ঘানা। শেষ ষোলোতে উঠতে এই ম্যাচ থেকে প্রথমে জয় নিয়ে এরপর গ্রুপের অন্য ম্যাচের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে তাদের।
উরুগুয়ে যদি বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে উঠতে না পারে তবে এটাই হয়তো শেষ ম্যাচ হতে যাচ্ছে লুইস সুয়ারেস ও এদিনসন কাভানির।