বাংলাদেশ ক্রিকেটে এখন নির্বাচনের হাওয়া। চার বছরের মেয়াদ শেষ নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বাধীন কমিটির। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচন আগামী ৬ অক্টোবর। ১৭১ কাউন্সিলর ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন ২৩ বোর্ড পরিচালককে। সেই কাউন্সিলরের তালিকায় এবার উজ্জ্বল হয়ে একটি নাম চোখে পড়েছে ক্রিকেট মহলের। তিনি মোহাম্মদ লুৎফর রহমান।
এক মেয়াদ পর আবার ভোটার তালিকায় দেশের ক্রীড়াঙ্গনের এ পরিচিত মুখ। সঙ্গতভাবে লুৎফর রহমান বাদল রয়েছেন কাউন্সিলদের তালিকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন ক্লাব প্রতিনিধি (ক্যাটেগরি-২) তালিকায়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সাবেক চ্যাম্পিয়ন ক্লাব লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের কর্ণধারের ভোটার নম্বর ৮৭।
ভোটার তালিকায় লুৎফর রহমানের নাম সম্মানের সঙ্গে গ্রহণ করা হয়েছে।
এ নিয়ে বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলছিলেন, এটা সাংবিধানিক নিয়ম অনুসারেই হয়েছে। ক্লাব তার প্রতিনিধি পাঠাবে, অন্য ক্লাবগুলো যেভাবে নাম পাঠিয়েছে ওদেরটাও সেভাবে দেওয়া হয়েছে।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ তাদের ক্লাবের পক্ষ থেকে কাউন্সিলর হিসেবে লুৎফর রহমানের নাম প্রস্তাব করার পর তা স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করা হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনের জন্য গঠিত পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনে থাকা নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন আরও যোগ করলেন, দেখুন, বোর্ড চাইলে পারে। বোর্ড কাউন্সিলর হিসেবে তাকে অ্যাপ্রুভ করেছে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে হয়েছে।
২০১৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিসিবি থেকে এক অতি জরুরি চিঠিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটে সব কার্যক্রম থেকে আজীবন নিষিদ্ধ মোহাম্মদ লুৎফর রহমান বাদল। একই সঙ্গে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের দুই কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম টিটুকে পাঁচ বছর ও সাব্বির আহমেদ রুবেলকে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়।
যদিও এরপর ক্রিকেটের সচেতন মহল থেকে এ নিয়ে প্রতিবাদ ওঠে। অনেকে এমন অন্যায় সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খোলেন। আর লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও এ নিয়ে আপত্তি জানায়। এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বিসিবি বরাবর চিঠি দেওয়া হয়। পরের বছর ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিসিবি বরাবর আরেকটি চিঠি দেয়। সেই চিঠিতে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব কার্যক্রমে লুৎফর রহমান, তরিকুল ইসলাম ও সাব্বির আহমেদকে অংশ নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। আর সেই আবেদন যৌক্তিক ছিল বলে অবশেষে সত্যের জয় হয়েছে। নিষেধাজ্ঞামুক্ত হয়ে বিসিবির নির্বাচনে কাউন্সিলর হয়েছেন লুৎফর রহমান। অভিযোগমুক্ত হয়েছেন দুই কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম ও সাব্বির আহমেদও।
একই সঙ্গে আরেক স্বস্তির খবরও এতদিন আড়ালেই ছিল। লুৎফর রহমান, তরিকুল ইসলাম ও সাব্বির আহমেদের বিরুদ্ধে বিসিবির চিফ সিকিউরিটি অফিসার কর্তৃক আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন করার যে অভিযোগ ছিল, তারও সুরাহা হয়েছে। ফতুল্লা, নারায়ণগঞ্জ ও মিরপুর থানায় দায়ের করা মামলারও নিষ্পত্তি হয়েছে। সব মিলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিবেদিতপ্রাণ বলে পরিচিত লুৎফর রহমান সেই চেনা অঙ্গনে সেই আগের পরিষ্কার ভাবমূর্তি নিয়ে হাজির। দীর্ঘদিনের ক্রিকেট অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, গতিশীল পরিচালনা শক্তি ও জেতার জেদ ছাড়াও ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে আলাদা একটা পরিচয় তো আছেই। আবার সেই মেধা ও অভিজ্ঞতা বিলিয়ে দেওয়ারও সুযোগ এসেছে সামনে।