বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, 'দেশের ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। একটা শিশু জন্মগ্রহণ করার পর তার মাথাপিছু ঋণ ৬০ হাজার টাকা। এভাবে চলতে থাকলে দেশ একদিন ধ্বংস হয়ে যাবে।'
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে '৪৩ তম ফারাক্কা লংমার্চ দিবস, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বর্তমান রাজনৈতিক মহাসংকট উত্তরণে মাওলানা ভাসানীর আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই' শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির (ন্যাপ ভাসানী)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, 'একটা সময় দেশের বাজেটের বরাদ্দের অধিকাংশ অংশ রাখা হতো স্বাস্থ্য, শিক্ষা বা প্রতিরক্ষা খাতে। কিন্তু বর্তমানে দেশের বাজেটের অধিকাংশ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বিদেশিদের ঋণ-সুদ পরিশোধ করতে।'
তিনি বলেন, 'দেশে এখন এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে, কৃষক তার নিজের ফসলে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। কারণ ফসল কেটে ঘরে তুলে আনলে তার লস হবে। শুধু কৃষকের লস হচ্ছে তা নয়, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদেরকে রাস্তায় নামতে হচ্ছে, আন্দোলন করতে হচ্ছে। এ কোন দেশে বাস করছি আমরা?'
বিএনপির এই নেতা বলেন, 'দেশে আগে শুনি নাই এত মা-বোনদের ধর্ষণ-নির্যাতনের কথা। আবার এর বিচার চাইতে গিয়ে প্রতিদান না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে, পিতা, কন্যাকে নিয়ে চলন্ত ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করছে। বেকারত্ব, জিনিসপত্র দাম বেড়েই চলেছে, মানুষ ভূমিহীন হয়ে পড়ছে। অথচ মন্ত্রীরা বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় বাড়ছে, জিনিসপত্র দাম কমছে, মানুষ শান্তিতে আছে। আমার মনে হয়, এসব মন্ত্রীরা কখনও বাজার ঘুরে দেখেন না। মানুষের কাছে গিয়ে মানুষের কষ্ট গুলো বুঝেন দেখেন না।'
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে এই নেতা বলেন, 'আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য অপেক্ষা করছি, দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য। কারণ মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম যে গণতন্ত্রের, মানুষের শান্তির জন্য, তা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। এজন্য আন্দোলনের একমাত্র যোগ্য নেতা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তার মুক্তি শুধুমাত্র একজন নেত্রীর মুক্তি নয়, একজন ব্যক্তির মুক্তি নয়, তার মুক্তি মানে দেশের গণতন্ত্রের মুক্তি। তাই তাকে আগে মুক্তি করতে হবে, তাহলেই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।’
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অ্যাড. মো. আজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, লেবার পার্টির মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপির সহ-শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ফরিদা মনি শহিদুল্লাহ প্রমুখ।