জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সফল হবার পরে দেশে নতুন করে বৈষম্য শুরু হয়েছে। জাতীয় পার্টির নেতাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে অন্যায় করা হচ্ছে, এই অন্যায় আমরা মেনে নেব না।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) জাপার বনানী কার্যালয়ে জাতীয় পার্টির ঢাকা বিভাগীয় জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি আরও বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হবার সাথে সাথেই জাতীয় পার্টি আনুষ্ঠানিক ভাবে সমর্থন দিয়ে ছাত্রদের আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে। অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্রদের মামলায় জাতীয় পার্টি নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালে যখন চাকরিতে কোটা বিরোধী ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ শুরু হয়, তখন থেকেই জাতীয় পার্টি আন্দোলনরত ছাত্রদের পাশে ছিলেন। ১ জুলাই ছাত্ররা রাজপথে আন্দোলন শুরু করে। ৩ জুলাই দ্বাদশ সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপণী বক্তৃতায় আমি বলেছিলাম, সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠন প্রক্রিয়া ধংস করা হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়ার কারণে রংপুরে ১১টি মিথ্যা মামলায় জাতীয় পার্টির অন্তত ৩৩ জন নেতা-কর্মী আসামি হয়েছেন। তাদের অনেকেই গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন। রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির ২জন নেতা শহীদ হয়েছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় ভাবে যৌথসভা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছে। সারাদেশের নেতা-কর্মীদের ছাত্রদের পক্ষে কাজ করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিলো। অথচ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র হত্যা মামলায় জাতীয় পার্টি নেতাদের আসামি করা হচ্ছে। এই অন্যায় আমরা মেনে নিতে পারি না, আমরা এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবোই।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ অনেক কষ্টে আছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন, বেড়েছে বেকারত্বের সমস্যা। দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সংস্কারের জন্য যৌক্তিক সময় দিতে চাই, যাতে তারা গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন শুধু নয়, একটি পরিবর্তিত রাষ্ট্র কাঠামো ও সংশোধিত শাসন ব্যবস্থা উপহার দিতে পারে। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা ও খাওয়া-পরার ব্যবস্থা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।
জাতীয় পার্টি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ৭ জেলার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিভাগীয় অতিরিক্ত মহাসচিব লিয়াকত হোসেন খোকা, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গাজীপুর জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মিয়া, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা হেনা খান পন্নি, ঢাকা জেলা সাধারণ সম্পাদক খান মোঃ ইসরাফিল খোকন, গাজীপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মন্ডল, গাজীপুর মহানগর আহ্বায়ক মোঃ শরিফুল ইসলাম, সদস্য সচিব শেখ মাসুদুল আলম টিটু, নরসিংদী জেলার সভাপতি ওমর ফারুক মিয়া, সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আবু হাসনাত মাসুম, নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি সানাউল্ল্যাহ সানু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিপন ভাওয়াল, মানিকগঞ্জ জেলা সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মোঃ হাসান সাঈদ, মুন্সিগঞ্জ জেলা সভাপতি মোঃ জয়নাল আবেদীন, সাধারণ সম্পাদক রফিক উল্যাহ সেলিম প্রমুখ।