বিএনপি হাঁটু ভাঙা-কোমর ভাঙাদের নিয়ে জগাখিচুরি ঐক্য করেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের গেইটে বিজয় শোভোযাত্রার উদ্বোধন করে এই কথা বলেন তিনি। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএপির নেতা নেই। তারা আন্দোলন করবে কাকে দিয়ে, নির্বাচন করবে কাকে দিয়ে। ৭০ শতাংশ মানুষ তৈরি হয়ে আছে শেখ হাসিনার নৌকাকে ভোট দেয়ার জন্য। খেলা হবে। ১৮৯৬ জন খেলবে। খেলার মাঠ বাংলাদেশ। দুর্নীতি, নাশকতা, জঙ্গিবাদ, সাম্প্রদায়িকতা, লুটপাট, হাওয়া ভবন, আগুন ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে খেলা হবে।’
বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকের বিজয়ের মিছিল-নৌকার মিছিল। ঢাকা শহর আজ নৌকার শহর। খেলা হবে, ছাড়াছাড়ি নেই, খেলা চলবে। ৭ তারিখে ফাইনাল। বিএনপি নেই, খবর নেই। তাদের এক দফা ভুয়া। বিএনপি ভুয়া।’
১৮৯৬ জন প্রতিদ্বন্দী ও ২৭টি দল আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, তাহলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না যারা বলে তারা ভুয়া। টিআইবি ভুয়া, ইফতেখার ভুয়া, সুজন ভুয়া, বদিউজ্জামান ভুয়া। এগুলো সব ভুয়া। এগুলো সব বিএনপির দোসর। ২৮ তারিখে লাল কার্ড খেয়ে বিএনপি বিদায় নিয়েছে। বিএনপি ভুয়া, ধানের শীষ ভুয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজ ট্রেনে আগুনে পুড়ে শিশু ও নারীসহ চারজন মারা গেছে। এই দৃশ্য গাজায় ইসরায়েলের যে হত্যাকান্ড, যে গণহত্যা, শিশু হত্যা, নারী হত্যা, সেই একই দৃশ্য আজ বাংলাদেশে আমরা দেখলাম। ট্রেনে আগুন দিয়ে চারটি তাজা প্রাণ যারা কেড়ে নিয়েছে তাদের ক্ষমা নেই। তাদের আন্দোলন নাশকতা, মানুষ পোড়ানোর আন্দোলন।
তিনি বলেন, ‘২১ হাজার নেতাকর্মী নাকি জেলে আছে। আমি পুরোপুরি খবর নিয়ে চ্যালেঞ্জ করছি, জেলে আছে ১১ হাজার। এর মধ্যে আজকে জামিন পেয়ে দুই হাজার বের হয়ে যাচ্ছে। থাকছে ৯ হাজার। ২১ হাজারের কথা ভুয়া। বিএনপি মিথ্যা কথা বলে, মিথ্যাচার করে। বিএনপি ভুয়া। বিএনপির নেতাগুলো ভুয়া।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতারা অন্ধকারে থেকে বক্তৃতা করে, ছবি তোলে। কুয়াশার মধ্যে ১০-১২ জন নিয়ে মিছিল করে৷ এটা বুঝি আন্দোলন? বিএনপির আন্দোলন ভুয়া।
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী বছর আবার আন্দোলন হবে। বিএনপি এই বছর আর পারলো না। আগামী বছর আন্দোলন শুরু হবে। রোজার ঈদ, কোরবানির ঈদ করে পাঁচ বছর কেটে যাবে। পাঁচ বছরের শেষে গিয়ে আবারও আন্দোলন। তারেক রহমান লন্ডনে আছে। তারেকের সাহস নেই। এলে এখানেই মোকাবিলা করতো। রাজপথে থাকতো, জেলে যেতো। জেলে যেতে যার ভয়, সে তো ভুয়া। তারেক রহমান ভুয়া, তার কথা ভুয়া। আন্দোলন আর হবে না।’
কাদের বলেন, ‘যারা ভোটে বাধা দিবে, ভোট কেন্দ্রে আসতে বাধা দিবে, যারা নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চাইবে, তাদের মনে রাখতে হবে দেশের জনগণ নির্বাচনমুখী। তারা প্রতিহত করবে। এদের প্রতিহত, পরাজিত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা পঞ্চমবারের মতো নির্বাচনের বিজয়ের বন্দরে পৌঁছাবে।’
ঢাকা দক্ষিণের মেয়র শেখ ফজলে নুর তাপস বলেন, ‘৭ জানুয়ারি আমরা সুনিশ্চিত বিজয়ের পতাকা উড়াবো। আগুন-সন্ত্রাসী ও মানুষ খুন করে তারা ভাবছে আমাদের বিজয়কে ছিনিয়ে নিবে। আমরা আবারও প্রমাণ করবো, বাংলার মানুষ আওয়ামী লীগের পক্ষে, শেখ হাসিনার পক্ষে, নৌকার পক্ষে।’
ঢাকা-১০ আসনের নৌকার প্রার্থী চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার হাতে নৌকা তুলে দিয়েছেন। আমি আগামী ৭ জানুয়ারী ঢাকা-১০ আসনের জনগণকে সাথে নিয়ে নৌকার বিজয় তুলে দিতে চাই আমাদের নেত্রীর হাতে। আজকের বিজয়ের ঢেউ, বিজয়ের উৎসব মূল উৎসবে পরিণত হবে আগামী ৭ জানুয়ারী। ঢাকা হবে দশে দশ।’
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. আফজাল হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিজয় শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের গেইট থেকে শুরু হয়ে ধানমন্ডি-৩২ এর বঙ্গবন্ধু ভবনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী শোভাযাত্রায় অংশ নেন। তারা ট্রাক, পিক-আপসহ পায়ে হেঁটে ধানমন্ডি-৩২ যান।