এরশাদের চমক

বিবিধ, রাজনীতি

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 05:32:01

মহাজোটে জুটেছে ২৬ আসন, আর উন্মুক্ত ১৪৬ আসনে লড়ছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা। আর এই উন্মুক্ত আসনগুলোকে শাপে বর মনে করছে জাতীয় পার্টি।

জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, প্রায় ২৫টির মতো আসনে তাদের প্রার্থীরা তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হবেন। এসব আসনে জাপার প্রার্থীরা হয় জয়ী হবেন, না হলে অল্প ব্যবধানে হেরে যেতে পারেন। যে কারণে উন্মুক্ত এই আসনগুলোকে সৌভাগ্য হিসেবে দেখা হচ্ছে। জিতলে তো কথাই নেই, জিততে না পারলে, অন্তত ১৪৬ আসনে সংগঠনও চাঙ্গা হয়ে উঠবে সেটাই বা কম কিসে।

জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল সূত্র জানিয়েছে, ১৪৬ আসনে জাপার প্রার্থীরা লড়ছেন যেখানে কোনো জোট হয়নি। নৌকাও রয়েছে আবার লাঙ্গলও রয়েছে। এমন ২৫টি আসন রয়েছে যেখানে প্রার্থীদের একটু নার্সিং করা গেলে জয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব। কিছু কিছু আসনে বিএনপির প্রার্থী নেই, আবার অনেক আসনে প্রার্থী মাঠে না থাকায় ভোটাররা বিকল্প হিসেবে জাতীয় পার্টিকে বিবেচনা করছেন।

জাপা সূত্র দাবি করছে, ‘দেশে ভোটারদের স্বভাব হচ্ছে, ভোটারদের মধ্যে একটি বড় অংশ সরকারবিরোধী। অর্থাৎ তারা সব সময় শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। ১৯৯১, ৯৬, ২০০১, ২০০৮ সালের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।’  

বিএনপির প্রার্থী মাঠে না থাকায় সরকারের নেগেটিভ ভোটগুলো লাঙ্গল প্রতীকে পড়বে। আবার আওয়ামী লীগ, বিএনপির প্রতিহিংসার রাজনীতি পছন্দ নয় এমন লোকও লাঙ্গলের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন। সে কারণে বেশ কিছু আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীর বিজয় সম্ভাবনা উজ্জ্বল দেখা যাচ্ছে। এটাই হবে এরশাদের চমক।

সম্ভাবনাময় আসনগুলো হচ্ছে ঠাকুরগাঁও-৩ সাবেক এমপি হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, দিনাজপুর-৪ মোনাজাত চৌধুরী, দিনাজপুর-৬ দেলোয়ার হোসেন, রংপুর-৫ এসএম ফখর-উজ-জামান, কুড়িগ্রাম-১ একেএম মোস্তাফিজুর রহমান, কুড়িগ্রাম-৩ ডা. আক্কাস আলী সরকার, নওগাঁ-৩ অ্যাড. তোফাজ্জল হোসেন, নাটোর-৪ অধ্যাপক আলাউদ্দিন মৃধা, সিরাজগঞ্জ-৫ মোক্তার হোসেন ও কুষ্টিয়া-১ শাহারিয়ার জামিল জুয়েল।

যশোর-৫ এমএ হালিম, খুলনা-১ সুনীল শুভরায়, সাতক্ষীরা-১ সাবেক মন্ত্রী সৈয়দ দিদার বখত, বরিশাল-৩ সাবেক এমপি লঞ্চ মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া টিপু, জামালপুর-২ মোস্তফা আল মাহমুদ, মানিকগঞ্জ-৩ জহিরুল আলম রুবেল, ঢাকা-৫ মীর আব্দুস সবুর আসুদ, নরসিংদী-৪ নেওয়াজ আলী ভূইয়া, সিলেট-৩ উছমান আলী চেয়ারম্যান, কুমিল্লা-৭ লুৎফর রেজা, নোয়াখালী-২ হাসান মঞ্জুর ও কক্সবাজার-৪ মাস্টার আবুল মঞ্জুর।

নরসিংদী-৪ আসনের প্রার্থী নেওয়াজ আলী ভূইয়া বার্তা২৪কে বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা বেলাবো ও মনোহরদী। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি’র প্রার্থী দু’জনেরই বাড়ি মনোহরদীর। তাদের ভোট ভাগাভাগি হবে। আবার বেলাবো উপজেলার এক লাখ ৩৮ হাজার আঞ্চলিক ভোট আমাকে বাড়তি সুবিধা দিবে।

নেওয়াজ আলী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান এমপি নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন এলাকার উন্নয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। মানুষ তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আবার তার দলের মধ্যে অনেক গ্রুপিং।’

ঢাকা-৫ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাবেক ফুটবলার মীর আব্দুস সবুর আসুদ বার্তা২৪কে বলেন, ‘আমি এই এলাকার মাটি মানুষের পাশে থেকে বড় হয়েছি। আমি এই এলাকার মাটি মানুষকে চিনি। তারাও আমাকে ও আমার পরিবারকে ভালো জানে।’

জাতীয় পার্টির নির্বাচন মনিটরিং সেলের প্রধান প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান বার্তা২৪কে বলেন, ‘মানুষ দু’টি দলের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। অনেক আসনে আমাদের প্রার্থীর পক্ষে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। মানুষ এরশাদের সেই স্বর্ণযুগে ফিরে যেতে চায়।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর