সাতক্ষীরায় অফিস নেই রাজনৈতিক দলগুলোর!

বিবিধ, রাজনীতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-29 04:15:16

জামায়াতে ইসলামী ছাড়া সাতক্ষীরায় কোনো রাজনৈতিক দলের দলীয় অফিস নেই। জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করা হলে দলটির জেলা অফিসের সাইনবোর্ড খুলে ফেলা হয়। যদিও অফিসটির জানালা-দরজা বন্ধ রয়েছে প্রায় বছর দশেক ধরে।

এছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জেলা পর্যায়ের কোনো অফিসের ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তবে সাতক্ষীরা প্রাণসায়র এলাকায় জেলা ছাত্রলীগের কার্যালয়ে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচি পালন করা হয়। এছাড়া দলীয় জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা তাদের ব্যক্তিগত অফিসে ও বাসভবনে বসে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং সভা-সমাবেশ করেন।

সূত্র জানায়, ১০-১৩ বছর আগে সাতক্ষীরা পলাশপোল এলাকার একটি আবাসিক হোটেলের দোতলা ভাড়া নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের অফিস করা হয়। কিন্তু সেটিও বন্ধ হয়ে যায়।

সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির কোনো কার্যালয়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর শহরের ইটাগাছা হাটেরমোড় এলাকায় সড়কের জায়গায় গড়ে তোলা হয় দলটির জেলা অফিস। ১/১১তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় এসে গুঁড়িয়ে দেয় সকল অবৈধ স্থাপনা। তাতে জেলা বিএনপির অফিসটিও ভাঙা পড়ে। ফলে সেই থেকে আর জেলা বিএনপির কোনো অফিস খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাঝে মাঝে দলটির নেতাকর্মীদের বাসায় বসে করা হয় দলীয় কাজ।

একই অবস্থা জেলার অন্যতম রাজনৈতিক দল জাতীয় পার্টিতেও। তাদেরও নেই কোনো জেলা অফিস। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি এম এ জব্বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর তার বাড়িটিই দলীয় অফিস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এরপর পার্টির জেলা সভাপতি শেখ আজহার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশুর পৃথক ব্যক্তিগত অফিসে বসে পরিচালনা করা হয় দলীয় কাজকর্ম।

এছাড়া শহরের মুন্সিপাড়া এলাকায় জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিস রয়েছে দীর্ঘ প্রায় একযুগ ধরে তালাবদ্ধ। এ অফিসের পাশের লোকজন ও ব্যবসায়ীরা জানান, ২০০৮ সালের পর মাঝে মধ্যে খোলা হতো। ২০১৩-১৪ সালে জেলায় জামায়াতে ইসলামী ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। মানুষ হত্যা, গাছ কাটা, রাস্তা কাটা, ঘর-বাড়ি জ্বালানো, ভাঙচুর, লুটপাটসহ নানা অভিযোগ ওঠে দলটির বিরুদ্ধে। এরপর থেকে এলাকাবাসী আর জেলা জামায়াতে ইসলামীর অফিস খুলতে দেখেনি।

এদিকে জেলা জাসদের দলীয় অধিকাংশ কাজকর্ম পরিচালিত হয় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয় থেকে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীরা জেলা শাখারও কোনো অফিস আজ অবধি চোখে পড়েনি। তবে শহরের মিনি মার্কেটস্থ ঈষিকা আর্ট নামক একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় মতবিনিময়ে মিলিত হন। এছাড়া আরও যেসব রাজনৈতিক দল আছে তাদের জেলা কমিটি থাকলেও নেই জেলা অফিস।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জেলা আওয়ামী লীগের স্থায়ী অফিস না থাকলেও দলটির উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিটির পাশাপাশি অফিস আছে। ফলে জেলা অফিস না থাকলেও কোনো সমস্যা হয় না। যেকোনো সমস্যায় দলের জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের কাছে পাওয়া যায়। তারাও নেতাকর্মীদের সমস্যা গুরুত্ব দিয়ে দেখেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা স. ম শহিদুল ইসলাম জানান, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন শহরের ইটাগাছা এলাকায় জেলা অফিস ছিল। এছাড়া জেলার সব উপজেলায়ও অফিস ছিল। ২০০৮ সালের পর কিছু কিছু অফিসে নেতাকর্মীরা যাতায়াত করতেন। ২০০৬-০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার জেলা বিএনপির অফিস ভেঙে দেয়। এরপর আর কোনো অফিস জেলা বিএনপি করেনি।

জেলা জাতীয় পার্টির এক নেতা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, জেলা জাতীয় পার্টির স্থায়ী কোনো অফিস না থাকলেও কার্যক্রম থেমে নেই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর