আম্পানের উপকূল অতিক্রম, ১৫১ কিমি গতিতে সাতক্ষীরায় তাণ্ডব

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-25 00:34:55

ঘূর্ণিঝড় আম্পান আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে এটি সাতক্ষীরা জেলা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি এই সময় উপকূলীয় এই জেলায় রাত নয়টা থেকে বাতাসের গতিবেগ প্রতিঘণ্টায় ১৫১ কিলোমিটার বইছে। ঝড়ের আঘাতে বহুঘর গাছপালা বাড়ি ভেঙেছে।  আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষ নদীর কয়েকটি পয়েন্ট ভেঙে গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পুরো জেলার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামাল বার্তা২৪.কমকে বলেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুডিগোয়ালিনি মাসুদ মোড়, পদ্ম পুকুর, গোলাখালী, আশাশুনি উপজেলার সদর, প্রতাপনগর-চাকলা, বন্যতলা,হিজলা, কাটলা সহ ১১টি এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে পুরো এলাকা প্লাবিত। শহরের সঙ্গীতা মোড়ে গাছ পড়ে একজন মারা গেছেন। 

আবহাওয়া অধিদফতরের ৩৬ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অতিক্রমের সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের  একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ থেকে ১৮০ কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে।  ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। সাগর উত্তাল থাকবে।

এ অবস্থায় মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

অন্যদিকে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৯ নম্বর বিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় এবং অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ১০ থেকে ১৫ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় অতিক্রমকালে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম জেলা সমূহ এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণসহ ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিমি বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। 

ঘূর্ণিঝড়ের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে অতিসত্ত্বর নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বলা হয়েছে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর