রংপুরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছেন সেনা সদস্যরা। নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে ফেস মাস্ক বিতরণ ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণে উদ্বুদ্ধ করছেন তারা। সঙ্গে নগর ও গঞ্জে ছিটাচ্ছেন জীবাণুনাশক স্প্রে। সেনাবাহিনীর এমন কার্যক্রমে আস্থা বেড়েছে সাধারণ মানুষের মাঝে।
শনিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে রংপুর নগরীর প্রধান প্রধান সড়কসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকাতে টহল দিয়েছে সেনা সদস্যরা। এ সময় রাস্তায় ঘোরাফেরা করা লোকজনকে ঘরে থাকতে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
দিনমজুর, শ্রমিকসহ অসহায় ও দুস্থ মানুষদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দিয়ে তাদের হাতে হাতে তুলে দেন ফেস মাস্ক। করোনা রোধে করণীয় সম্পর্কে মোড়ে মোড়ে হ্যান্ড মাইকে সতর্কতা ঘোষণা বার্তা পড়ে শোনান।
এদিকে সেনা সদস্যদের মানবিক আচরণ আর বুঝিয়ে বলার ধরণে পেটের তাগিদে ঘরের বাহিরে আসা লোকজনের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। বিশেষ করে রিকশা ও অটোচালকসহ শ্রমজীবী দিনমজুর মানুষরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
নগরীর জাহাজ কোম্পানী মোড়ে ফেস মাস্ক পেয়ে খুশি হন রিকশাচালক সবুর আলী। তার চোখে মুখে ভেসে উঠে তৃপ্তির ছাপ। বৃদ্ধ এই রিকশাচালক বলেন, 'মাইনষে কয়, বাইরোত বাহির হইলে সেনাবাহিনী মারবে। কিন্তু মুইতো দ্যাকোচো এমরা ভালো কাম করোচে।'
অন্যদিকে প্রেসক্লাব চত্বরে আনোয়ার হোসেন নামে এক নির্মাণ শ্রমিক বলেন, 'সেনাবাহিনীর স্যারেরা ভালো কাজ করছে। সবাইকে ঘরে থাকার জন্য বুঝিয়ে বলছেন। সবখানে এমনটাই হওয়া উচিত। তা না হলে মানুষ সরকারি লোকদের ভুল বুঝবে।'
রংপুর মহানগরসহ জেলায় আটটি উপজেলাতে পৃথক তিনটি টিমে কাজ করছে সেনা সদস্যরা। বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের হোম কোয়ারেন্টাইন তদারকিসহ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিভিন্ন কার্যক্রমের জনগণকে সচেতন করার চেষ্টা করছেন।
সচেতন মহল বলছেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অন্য সদস্যদের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা যেভাবে মানুষকে করোনা মোকাবিলা সচেতন করতে চেষ্টা করছেন, তা নিঃসন্দেহে স্বস্তির। অসচেতন মানুষকে সচেতন করতে ভালো আচরণের বিকল্প নেই। যেটা সেনা সদস্যরা করে দেখাচ্ছেন। অন্যদেরও এটা ফলো করা উচিত।
এদিকে প্রতিদিনের মতো আজও র্যাব-১৩, পুলিশ, আনসার, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রংপুরের বিভিন্ন এলাকাসহ হাট-বাজারে জমায়েত রোধে টহল অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি রংপুর সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেখা গেছে।