গাড়ি-বাড়ি ও অর্থ নিয়ে মিথ্যে তথ্য দিচ্ছে পাপিয়া

ঢাকা, জাতীয়

শাহরিয়ার হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-07 08:30:25

সদ্য বহিষ্কৃত নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ তার অবৈধ আয়ের প্রকৃত উৎস সম্পর্কে মিথ্যে তথ্য দিচ্ছেন বলে মনে করছে গোয়েন্দা পুলিশ। বাড়ি, গাড়ি ও বিপুল পরিমাণ অর্থ বিত্ত সম্পর্কে তার দেওয়া তথ্যের সত্যতা নিয়ে সন্দিহান সংস্থাটি।

জিজ্ঞাসাবাদে পাপিয়া জানিয়েছেন, তার স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন নরসিংদী পৌরসভার প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের দেহরক্ষী থাকাকালে মোটা অঙ্কের অর্থ কামিয়েছিলেন। সেই অর্থেই গাড়ির ব্যবসা শুরু করে এখন তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্তের মালিক হয়েছেন। কিন্তু গোয়েন্দা পুলিশ এ তথ্য বিশ্বাস করে না। তারা পাপিয়াকে আরও নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘পাপিয়ার সঙ্গে যারা অপরাধে জড়িত রয়েছেন, তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে।’

এদিকে, পাপিয়া ও তার স্বামীসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় অর্থ পাচার ও জাল টাকা রাখার ঘটনায় করা একটি এবং শেরেবাংলা নগর থানায় মাদক ও অস্ত্র আইনে করা দুটি মামলার তদন্তের দায়িত্ব ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। তিন মামলায় পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন ১৫ দিনের রিমান্ডে আছেন।

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছিল রিমান্ডের চতুর্থ দিন। গত বুধবার মামলাগুলোর তদন্তভার থানা পুলিশের কাছ থেকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেদিনই পাপিয়া-সুমন দম্পতিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশ। অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আয়, বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

জানতে চাইলে ডিবি উত্তর বিভাগের ডিসি মশিউর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন এবং তাদের দুই সহযোগীকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দেওয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। এর মধ্যে তাদের কাছে পাওয়া জাল টাকা ও অস্ত্রের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। অল্প সময়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ-বিত্তের মালিক তারা কীভাবে হয়েছেন এ বিষয়ে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।’

এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি দেশত্যাগের সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে পাপিয়া ও তার স্বামী সুমন এবং তাদের দুই সহযোগী সাব্বির খন্দকার ও শেখ তায়্যিবাকে আটক করে র‌্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ টাকার জাল মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলারসহ বিভিন্ন দেশের মুদ্রা জব্দ করা হয়।

পরবর্তীতে তাদের আবাসস্থলে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, নগদ ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, ৫টি পাসপোর্ট, তিনটি চেক, বিদেশি মুদ্রা, বিভিন্ন ব্যাংকের ১০টি ভিসা কার্ড ও এটিএম কার্ড জব্দ করে র‌্যাব।

এ সম্পর্কিত আরও খবর