ফেব্রুয়ারি মানেই ভাষার মাস। আর মাত্র ৮ দিন পরই ভাষার মাসে শুরু হচ্ছে বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২০।’ ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের কারণে এবারের মেলা শুরু হচ্ছে দুই ফেব্রুয়ারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থেকে এর উদ্বোধন করবেন।
মেলাকে প্রস্তুত করতে চলছে শেষ মুহূর্তের কর্মচঞ্চলতা। মিস্ত্রিদের হাতুড়ি-পেরেক আর কাঠের ঠুকঠাক শব্দে পুরোদমে চলছে স্টল, প্যাভিলিয়ন, মঞ্চ তৈরির কাজ। চলছে ঘষামাজার কাজ। নিজেদের স্টলকে আকর্ষণীয় করে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মিস্ত্রিরা।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ঘুরে বইমেলা প্রস্তুতের নানা কর্মযজ্ঞ দেখা গেছে।
প্রত্যয় প্রকাশনীর স্টল নির্মাণের কাজে নিয়োজিত মিস্ত্রি হাবিব বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমরা কয়েকদিন ধরেই দ্রুত কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ করতে পারব।
বাংলা একাডেমি সূত্রে জানা যায়, মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে সাজানো হচ্ছে এবারের গ্রন্থমেলার প্রতিচ্ছবি। প্রতিদিন মেলার মুল মঞ্চে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা সভা। এছাড়া মাসব্যাপী থাকবে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
এবার মেলার পরিসর, স্টল অনেক বেড়েছে। বর্ধিত পরিসরসহ এবার মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গাজুড়ে অনুষ্ঠিত হবে গ্রন্থমেলা। আগের বছরের ২৪টি প্যাভিলিয়নকে ছাপিয়ে এবার প্যাভিলিয়নের সংখ্যা হবে ৩৪টি। স্টলের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় শতাধিক।
বাংলা একাডেমির পরিচালক ও মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বার্তা২৪.কম-কে জানান, গত বছরের চেয়ে বই মেলার বিস্তৃতি এ বছর অনেক বেড়েছে। স্টল এবং প্যাভিলিয়নের সংখ্যাও বেড়েছে। স্টল সংখ্যা বেড়েছে শতাধিক। প্যাভিলিয়ন ৩৪টি।
স্টল নির্মাণের কাজ কত তারিখের মধ্যে শেষ করতে হবে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ২৫ জানুয়ারির মধ্যে স্টল নির্মাণের কাজ শেষ করার কথা। সেদিন আমরা পুরো পরিস্থিতিটা মূল্যায়ন করব।
মুজিব বর্ষ উপলক্ষে মেলার নতুন সংযোজন কী, এমন প্রশ্নে জালাল আহমেদ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উৎসর্গ করেই এবারের গ্রন্থ মেলা। পুরোটাই মুজিব বর্ষকে কেন্দ্র করে। সে হিসাবে মেলা প্রাঙ্গণ বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি অনুযায়ী নানাভাবে সাজানো হচ্ছে। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতির জনককে নিয়ে রচিত ১০০টি বই প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নিজের হাতে লেখা একটা বই আসছে। ‘আমার দেখা নয়া চীন’ শিরোনামে বাংলা একাডেমি বইটি বের করবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বইটির মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সঠিক সময়ে স্টল নির্মাণ এবং সময়সীমা, বৃষ্টি সমস্যা নিয়ে তিনি বলেন, বৃষ্টির জন্য আলাদা প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। আর সময়সীমা আগেরটা- অর্থাৎ বিকাল তিনটা থেকে রাত আটটা আর ছুটির দিনে এগারোটা থেকে রাত নয়টা বহাল থাকবে।
টিএসসি ছাড়া একাডেমির উল্টোদিকের কালী মন্দিরের গেট এবং তিন নেতার মাজারের পাশের গেট দিয়ে প্রবেশ পথ ও বহির্গমন পথ থাকবে বলেও জানান তিনি।